অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে নিউ টাউন-কাণ্ডের তদন্ত শুরু করল বিধাননগরের পুলিশ। নিউ টাউনে কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে মঙ্গলবার ‘জিয়ো ম্যাপিং’ করা শুরু হল। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত রাজ ওই কিশোরীকে কোন পথে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিল, তা জানতেই এই পদ্ধতিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে নিউ টাউনের লোহাপুল এলাকায় ওই কিশোরীর অর্ধনগ্ন দেহ
উদ্ধার হয়। তার পরেই পুলিশ এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় যে, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। শনিবার গভীর রাতে সৌমিত্র রায় ওরফে রাজ নামে এক ই-রিকশাচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রাজকে শনাক্ত করেন তদন্তকারীরা।
তাঁরা জানান, জিয়ো ম্যাপিং থেকে জানা গিয়েছে, সেই রাতে কিশোরীকে নিয়ে রাজ জগৎপুর থেকে সুলংগুড়িতে যায়। তার পরে পৌঁছয় একটি শপিং মলের সামনে। সেখান থেকে যায় ঘটনাস্থলে। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে রাজের বয়ান খতিয়ে দেখতে তার জানানো রাস্তায় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নামে পুলিশ। যে সব রাস্তা ধরে রাজ নাবালিকাকে রিকশায় চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে, যন্ত্রের মাধ্যমে সেই সব রাস্তার জিয়ো ম্যাপিং করে পুলিশ। এই পদ্ধতিতে তদন্ত করলে মামলা আরও জোরদার করা যাবে বলেই জানান তদন্তকারীরা। দু’-এক দিনের মধ্যে রাজকে দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করানো হবে।
এ দিকে, নিউ টাউনের এই ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় পুরসভা এবং পুলিশ-প্রশাসন। হিডকো এবং ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ) স্থানীয় এলাকার কোথায় কোথায় আলোর সমস্যা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে চাইছে। নতুন করে ওই সব জায়গায় আলো লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিউ টাউনের বিভিন্ন রাস্তায় নাকা তল্লাশিও চালু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে তা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে।
নিউ টাউনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন ওই উপনগরী এখনও জমজমাট নয়। অথচ, অফিস করতে কিংবা বসবাসের কারণে অনেক সময়েই অত্যন্ত ফাঁকা এলাকা দিয়ে লোকজনকে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষত, সন্ধ্যার পরে ওই সব রাস্তা এক কথায় জনমানবশূন্য থাকে। এর আগে নিউ টাউনের ফাঁকা রাস্তায় একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, নিউ টাউনে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)