E-Paper

তদন্তে বাধা পুলিশকে, ধৃতকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা বাসিন্দাদের

গত ২১ জুলাই নিজের মেয়েকে নিগ্রহের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এলাকায় অভিযুক্তের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং সে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও জানা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৭:২৯
তদন্ত করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল পুলিশ।

তদন্ত করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।

মেয়েকে নিগ্রহের অভিযোগে ধৃত বাবাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল পুলিশ। শনিবার দুপুরের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল দক্ষিণ শহরতলির এক এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেআনতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশকে লাঠিও চালাতে হয়। এর পরে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকেই দু’জনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। যদিও রাত পর্যন্ত তাঁদের গ্রেফতার করার খবর নেই। তবে, পুলিশ মারধর করেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়দের কয়েক জন। কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ তুলতে সমর্থ হয় পুলিশ।

জানা গিয়েছে, গত ২১ জুলাই নিজের মেয়েকে নিগ্রহের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এলাকায় অভিযুক্তের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং সে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও জানা যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরে সে নিজের মেয়েকেনিগ্রহ করছে। মেয়েটি পরিবারের অন্যদের বিষয়টি জানালেও লাভ হয়নি। সকলেই ১৩ বছরের ওই নাবালিকাকে বিষয়টি চেপে যেতে বলেন। এর পরে স্কুলে গিয়েনাবালিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুল থেকেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে ওই নাবালিকাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সেই সময়েই অভিযোগ সামনে আসে। এর পরে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

এ দিন ঘটনার তদন্ত করতে ধৃত ব্যক্তিকে স‌ঙ্গে নিয়ে নাবালিকার বাড়িতে যায় পুলিশ। সেই সময়েই ধৃতকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে, এমন দাবি করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েক জন। পুলিশের রাস্তা আটকান তাঁরা। পরিস্থিতিএমন হয় যে, উপস্থিত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ধৃতকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। এর পরে ভিড় সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। ঘণ্টাখানেক বাদে নাবালিকারবাড়িতে পৌঁছতে পারেন তদন্তকারীরা। কিন্তু তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে বেরিয়ে আসার সময়েও একই রকম বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। সেই সময়েই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। ওই সময়ে কয়েক জন পুলিশকর্মী আক্রান্ত হন বলে জানা গেলেও লালবাজারের তরফে এই তথ্যের সত্যতা সম্পর্কেকোনও মন্তব্য করা হয়নি। যদিও পুলিশের দাবি, সরকারি কাজে বাধা দান-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দু’জনকে ঘটনাস্থল থেকেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এর পরে বিকেলে রাস্তায় ভিড় করে অবরোধ করেন স্থানীয়দের কয়েক জন। রাস্তায় বাঁশ ফেলে পথ আটকান তাঁরা। পুলিশের বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার দেখা যায় তাঁদের হাতে। বিক্ষোভকারীদের এক জনের দাবি, ‘‘পুলিশ অভিযুক্তেরসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছে।’’ অভিযুক্তের যথেষ্ট প্রভাব থাকায় এই ঘটনায় কোনও প্রতিকার হবে না বলেও দাবি করেন তাঁরা।ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলেছেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police investigation torture

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy