Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Topsia

‘সব পাওয়া’ থেকে বঞ্চিত, শহরে থেকেও নেই উন্নয়নের ছোঁয়া

চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই চলছে দিন গুজরান। খালের দু’দিকেই জমে আছে প্রচুর জঞ্জাল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত দেখা মেলে না জঞ্জাল ফেলার গাড়ির।

বেহাল: সাউথ তপসিয়া রোড সংলগ্ন নয়াবস্তি খালের পাশে বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই জমে রয়েছে আবর্জনা।

বেহাল: সাউথ তপসিয়া রোড সংলগ্ন নয়াবস্তি খালের পাশে বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই জমে রয়েছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০০
Share: Save:

‘‘নেতারা এ বারও বলেছেন, ভোটে জিতলে এলাকার উন্নয়ন করবেন।’’ এই আশাতেই এখন দিন গুনছে কয়েক হাজার পরিবার। শহরের মধ্যে থেকেও ওই বাসিন্দারা যেন ‘সব পাওয়া’ থেকে বঞ্চিত। প্রতি বার ভোটের আগে নেতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি মিললেও অবস্থা বদলায় না এলাকার। মেলে না ন্যূনতম পুর পরিষেবাও। সাউথ তপসিয়া রোড সংলগ্ন নয়াবস্তি খাল এলাকা যেন নগরজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বাজতেই এলাকায়
আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল। সকলেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ক্ষমতায় এলে এলাকার ভোল বদলে দেবেন তাঁরা।

এ যেন প্রদীপের নীচেই অন্ধকার! ই এম বাইপাসের সায়েন্স সিটি থেকে মেরেকেটে পাঁচ কিলোমিটার। সাউথ তপসিয়া রোড সংলগ্ন নয়াবস্তি খাল। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ওই এলাকা থেকে দেখা যায় শহরের উঁচু উঁচু অনেক অট্টালিকা, যেখানে পৌঁছে যাচ্ছে সব রকম নাগরিক সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু সেখান থেকে খানিকটা দূরেই ওই এলাকায় ন্যূনতম পুর পরিষেবা পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।

খাল সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তা। তার পাশে বসতি। চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই চলছে দিন গুজরান। খালের দু’দিকেই জমে আছে প্রচুর জঞ্জাল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত দেখা মেলে না জঞ্জাল ফেলার গাড়ির। সপ্তাহে এক-দু’দিন জঞ্জাল সাফাই হয় নিয়ম রক্ষার্থে। একই অবস্থা জি জে খান রোডের খাল সংলগ্ন অংশে। সেখানেও নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না বলে অভিযোগ। রাস্তার দু’পাশে ডাঁই হয়ে আছে ইমারতি দ্রব্য, যার জেরে সেখানে চলাফেরাই দায়। বার বার জানানো সত্ত্বেও অবস্থার পরিবর্তন হয় না বলেই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল এলাকায় এলেও উন্নয়ন এখনও পৌঁছয়নি সেখানে।

ওই এলাকায় জঞ্জালের পাশাপাশি রয়েছে জলের সমস্যাও। এলাকায় পুরসভার পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য বলেই দাবি বাসিন্দাদের। সেই জলও নিয়মিত আসে না বলেও অভিযোগ। সেই কারণে বাধ্য হয়েই কেনা জলের উপরে নির্ভর করতে হয় বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, জলের দাবি জানাতে জানাতে তাঁরা ক্লান্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা আক্কর আলম বলেন, ‘‘জন্ম থেকেই এই এলাকায় রয়েছি। কোনও দিন পুর পরিষেবা ঠিক ভাবে পাইনি। জঞ্জাল নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। পানীয় জল এলেও দুর্গন্ধে তা মুখে দেওয়া যায় না। বাধ্য হয়েই পানীয় জল কিনে খেতে হয়। নেতারা প্রতিশ্রুতি দেন। এখন আর ও সব নিয়ে ভাবি না।’’ একই অভিযোগ আর এক স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মুন্নার। তিনি বলেন, ‘‘নেতারা শুধু ভোটের সময়ে আসবেন। কাজের সময়ে তাঁদের দেখা যাবে না। ভোট এলেই শুধু প্রতিশ্রুতি। এ বারও ওঁরা বলে গিয়েছেন, জিতলেই এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা করবেন।’’

যদিও বিদায়ী কাউন্সিলর জলি বসু বললেন, ‘‘মাঝেমধ্যে সাফাইকর্মীরা ছুটি নেন বলেই হয়তো ময়লা জমে থাকে।’ পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, পানীয় জলের সমস্যা খতিয়ে দেখে সমাধানের চেষ্টা করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Topsia Road condition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE