Advertisement
E-Paper

ট্যাংরার কিশোর কার দায়িত্বে, জটিলতা এখনও

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইএম বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ে মেট্রোর স্তম্ভে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। গাড়িতে থাকা দুই ভাই প্রসূন ও প্রণয় দে এবং তাঁর কিশোর ছেলে আহত হন।

এক মাস যাবৎ হাসপাতালে থাকা কিশোরের এ বার কী হবে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মধ্যে।

এক মাস যাবৎ হাসপাতালে থাকা কিশোরের এ বার কী হবে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মধ্যে। —প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫ ০৮:৪৭
Share
Save

ট্যাংরা-কাণ্ডের পরে এক মাস পেরোলেও জখম কিশোরের পরবর্তী দায়িত্ব কে নেবেন, তা নিয়ে জটিলতা কাটল না। রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের তরফে ওই কিশোরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই খবর। আদৌ তাঁদের আর রাজি করানো যাবে কিনা, সেই প্রশ্নের পাশাপাশি এক মাস যাবৎ হাসপাতালে থাকা কিশোরের এ বার কী হবে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মধ্যে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইএম বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ে মেট্রোর স্তম্ভে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। গাড়িতে থাকা দুই ভাই প্রসূন ও প্রণয় দে এবং তাঁর কিশোর ছেলে আহত হন। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রসূনদের ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়ি থেকে সুদেষ্ণা দে, রোমী দে ও তাঁর মেয়ের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক জেরায় প্রসূন ও প্রণয় পুলিশের কাছে দাবি করেন, পরিকল্পনামাফিক তাঁরা তাঁদের স্ত্রী ও মেয়েকে মেরে আত্মহত্যা করতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে মেট্রোর স্তম্ভে ধাক্কা দেন।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তে উঠে আসে, ব্যবসায়ী ওই পরিবারটির প্রায় ১৬ কোটি টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল। বিপুল টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েই স্ত্রীদের
জানিয়ে তাঁরা সপরিবার আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন বলেও পুলিশকে জানান দুই ভাই। আত্মহত্যা করতে পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সকলে খাওয়ার পাশাপাশি, স্ত্রী ও মেয়ের হাতের শিরা কাটা হয়েছিল বলেও জানা যায়।

এ দিকে, দুর্ঘটনার পরে আহত প্রসূন-প্রণয় এবং ওই নাবালককে প্রথমে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের পরিবারের কেউ দায়িত্ব নিতে না চাওয়ায় পুলিশের উদ্যোগেই তিন জনকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। যদিও সেখানেও তাঁদের পরিজনদের কেউ খোঁজ নিতে আসেননি। সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রসূনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ট্যাংরা থানার পুলিশ। এখনও হাসপাতালে রয়েছেন বড় ভাই প্রণয় এবং তাঁর কিশোর-পুত্র। প্রণয়কে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে তাঁকেও গ্রেফতার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ওই কিশোরটির দায়িত্ব কে নেবে, সেই প্রশ্নই আপাতত বড় হয়ে উঠেছে।

সপ্তাহ তিনেক আগে হাসপাতালে গিয়ে ওই কিশোরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। তিনিও কিশোরের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তার কাকিমার বাপের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমনকি, ওই কিশোরও তার কাকিমার মা-বাবার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু জানা গিয়েছে, কমিশনের তরফে কথা বলা হলেও ওই পরিবারের লোকজনকে কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি করানো যায়নি।

অনন্যা বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওই কিশোরের কাকিমার মা-বাবার বাড়ির দিকের লোকজন নিজেরাই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন বলে আমাদের জানান। তাঁরা কোনও ভাবেই কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি।’’ কমিশনের তরফে বিষয়টি শিশু কল্যাণ কমিটিকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, বাবা গ্রেফতার হলে কিশোরটিকে সরকারি হোমে রাখা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকবে কিনা, সেই প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে।

শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারপার্সন মহুয়া শূর রায় যদিও বললেন, ‘‘কিশোরের অভিভাবক হিসাবে তার বাবা এখনও আছেন। দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেউ যদি কিশোরের দায়িত্ব নিতে রাজি না থাকেন, তবে আইন অনুযায়ী পরবর্তী কালে যা যা কিশোরের জন্য করা সম্ভব, সেই পদক্ষেপ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tangra Tangra Case

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}