কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটে বুধবার পুলিশের বিরুদ্ধে এবং পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারিতে ধর্মঘটের সমর্থক সিপিএম কর্মীকে চড় মারায় অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট থানার আইসি। আবার কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে বিক্ষোভ চলাকালীন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা কমিটির সভাপতি বর্ণনা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জোড়াসাঁকো থানার ওসি মৃণালকান্তি মুখোপাধ্যায়কে চড় মারার অভিযোগ করেছে পুলিশ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
এ দিন সকালে কলকাতার একাধিক জায়গায় ধর্মঘটের সমর্থকেরা যানবাহন আটকানোর চেষ্টা করেন। গাঙ্গুলিবাগানে এসএফআই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। যাদবপুরে ধর্মঘট সমর্থকেরা ট্রেন আটকানোর চেষ্টা করেন। বামেদের অভিযোগ, সল্টলেকের করুণাময়ী মোড়ে তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে অশীতিপর বাম-কর্মী রুমা রুদ্রের হাড় ভেঙেছে। পুলিশ অভিযোগ মানেনি।
বুনিয়াদপুরে ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নামা বাম নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসার ভিডিয়ো ছড়ায় সমাজমাধ্যমে। দেখা গিয়েছে, সিপিএমের বংশীহারি এরিয়া কমিটির সদস্য মাজেদার রহমান বলছেন, ‘‘সারা দিন আন্দোলন করব।’’ বংশীহারি থানার আইসি অসীম গোপকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি কি গরম দেখাচ্ছেন?’’ মাজেদার বলেন, ‘‘গরম দেখাচ্ছি না।’’ অভিযোগ, সে সময় মাজেদারকে চড় কষান আইসি। পরে মাজেদার বলেন, ‘‘আইসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না। ব্যক্তিগত ভাবেও আইনি ব্যবস্থা নেব।’’
আইসি বলেছেন, ‘‘মানুষ ধর্মঘট সমর্থন করেননি। ওঁরা জোর করছিলেন। চড় মারার কারণ ভিডিয়ো দেখলেই বোঝা যাবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল কিছু বলতে চাননি।
কলেজ স্ট্রিটে পুলিশের উপরে হামলায় অভিযুক্ত বর্ণনার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দের দাবি, ‘‘পুরুষ পুলিশকর্মীরা আন্দোলনরত মেয়েদের হেনস্থা করছিলেন। ওসিকে আটকাতে আমাদের মেয়েরা হাত-পা ছোড়ায় হয়তো লেগেছিল। বংশীহারিতে আইসির চড় মারা ধামাচাপা দিতে অভিযোগ সাজানো হচ্ছে।’’
বীরভূমের কীর্ণাহারে ধর্মঘটের সমর্থনে সিপিএমের পথসভায় হামলা চালানোয় অভিযুক্ত তৃণমূলের কীর্ণাহার ২ অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি গোলাপ শেখ। আহত হন কয়েক জন। গোলাপ মন্তব্য করেননি। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ধর্মঘট সমর্থকদের উপরে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তায় এবং বিএনআর মোড়ে ধর্মঘটের সমর্থকদের করা অবরোধ আইএনটিটিইউসির কর্মীরা তুলতে গেলে হাতাহাতি হয়। হাওড়ার ডোমজুড় এবং হুগলির কোতরংয়ে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে অববোধকারীদের সরায়। আলিপুরদুয়ারে ধর্মঘটের দিন চা বাগান বন্ধ থাকা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম তিন জন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)