Advertisement
০১ মে ২০২৪
Kolkata Traffic Police

নেতার ‘অনুরোধ’, অভিযুক্তের মার হজম পুলিশের

ট্র্যাফিকের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় গোটা ঘটনা জানানো হয় এবং নিগৃহীত পুলিশকর্মীরা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ওই দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয় সংশ্লিষ্ট থানাটি।

অভিযুক্তদের হয়ে ওই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে ট্র্যাফিককর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন মামলা না করতে।

অভিযুক্তদের হয়ে ওই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে ট্র্যাফিককর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন মামলা না করতে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১০
Share: Save:

রাখে নেতা, ধরে কে?

নো পার্কিংয়ে গাড়ি রাখায় তা তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। গাড়ির মালিক ও তাঁর ভাই ট্র্যাফিক গার্ডে গিয়ে পুলিশকর্মীদের গালিগালাজ, চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া এমনকি তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করেন বলেও অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশ স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগ, ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর, বরং এলাকার দাপুটে এক নেতার অনুরোধে নিজেদের কর্মীদের গায়ে হাত পড়া সত্ত্বেও অভিযুক্তদের থেকে শুধু মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনাকে ঘিরে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বিধাননগরের ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশের মধ্যে। ঘটনা প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ।

অসন্তুষ্ট পুলিশকর্মীদেরই প্রশ্ন, এক জন সাধারণ নাগরিক ওই ঘটনা ঘটালে, তাঁকে কি ‘মাফ’ করে দেওয়া হত? দিনকয়েক আগের ঘটনা। ভিআইপি রোডের উপরে লেক টাউন থানা এলাকার দুই বাসিন্দার হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন এক ট্র্যাফিক আধিকারিক-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মী। শুরুতে ওই দুই ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন যে ট্র্যাফিক গার্ডে গিয়ে গাড়ি ফেরত চাইতেই ট্র্যাফিকের কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁদের মারধর করেন। সেই ঘটনার পরে তাঁরা প্রথমে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধেই লিখিত অভিযোগ করেন থানায়। কিন্তু সময় গড়াতেই ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা গোটা ঘটনা খোলসা করতে জানা যায়, শুরুতে ওই দু’জনই পুলিশকর্মীদের নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ।

সূত্রের খবর, ট্র্যাফিকের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় গোটা ঘটনা জানানো হয়। এবং নিগৃহীত পুলিশকর্মীরা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ওই দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয় সংশ্লিষ্ট থানাটি। এমনও দাবি, পুলিশের গায়ে হাত তোলার ফলাফল আন্দাজ করে দুই অভিযুক্ত ভাই প্রভাব খাটানোর চেষ্টা শুরু করেন। কলকাতার দিক থেকেওপুলিশের দু’-এক জন ঘটনাটি মিটমাট করার জন্য ওই ট্র্যাফিক গার্ডে ফোন করেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ তুলতে রাজি ছিলেন না পুলিশের নিগৃহীত কর্মীরা।

এর পরেই আসরে নামেন লেক টাউন এলাকার সেই দাপুটে নেতা। দুই অভিযুক্ত এবং ট্র্যাফিক পুলিশের নিগৃহীত কর্মীদের একসঙ্গে নিয়ে বসেন তিনি। ডাকা হয় ট্র্যাফিকের আধিকারিকদেরও। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের হয়ে ওই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে ট্র্যাফিককর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন মামলা না করতে। অভিযুক্তেরা ভবিষ্যতে এমনটা করবেন না, এই মর্মে তাঁদের থেকে পুলিশকে মুচলেকা নিতে বলা হয়। দুই অভিযুক্তের পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়, ওই নেতার সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘদিনের সখ্যতা। এর পরে গাড়ির মালিকের মার হজম করে নিতে বাধ্য হন ট্র্যাফিক পুলিশের ওই কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Traffic Police Illegal Political leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE