E-Paper

দূষণহীন বাস থাকা সত্ত্বেও নিউ টাউনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটো, টোটো

স্বল্প দূরত্বের ব্যবধানে যেতে নিউ টাউনে অটো বা টোটোয় মোটা অঙ্কের ভাড়া গুনতে হয় বলে অভিযোগ নাগরিকদের। তাঁদের প্রশ্ন, নিউ টাউনে চলাচলের জন্য এমন পরিষেবাকে আরও বড় আকারে ব্যবহার না করে কেন বাড়তে দেওয়া হচ্ছে অটো-টোটোর দাপট?

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ০৭:২৩
নিউ টাউনের মধ্যে পরিষেবা দেয় ব্যাটারিচালিত, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হিডকোর এই বাস।

নিউ টাউনের মধ্যে পরিষেবা দেয় ব্যাটারিচালিত, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হিডকোর এই বাস। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

কোল ইন্ডিয়ার দাক্ষিণ্যের প্রসাদ হয়েই রইল নিউ টাউনে চলা তিনটি বাস। সাত বছর ধরে নিউ টাউনের ভিতরে বিভিন্ন এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে ওই সব বাস। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, ব্যাটারিচালিত ওই বাসে চাপলে যে কোনও দূরত্বে যেতে টিকিটের ভাড়া ২০ টাকা। সবুজ শহর নিউ টাউনকে যথাসম্ভব দূষণমুক্ত রাখতে যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল ওই তিনটি বাসও। কিন্তু কোনও অজানা কারণে এমন পরিষেবা ডালপালা মেলতেই পারেনি নিউ টাউনে।

তার বদলে স্বল্প দূরত্বের ব্যবধানে যেতে নিউ টাউনে অটো বা টোটোয় মোটা অঙ্কের ভাড়া গুনতে হয় বলে অভিযোগ নাগরিকদের। তাঁদের প্রশ্ন, নিউ টাউনে চলাচলের জন্য এমন পরিষেবাকে আরও বড় আকারে ব্যবহার না করে কেন বাড়তে দেওয়া হচ্ছে অটো-টোটোর দাপট?

হিডকো সূত্রের খবর, সাত বছর আগে কোল ইন্ডিয়া তাদের সিএসআর প্রকল্প থেকে হিডকো-কে ওই তিনটি বাস দিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সে সময়ে ওই তিনটি বাস নিউ টাউনে স্থানীয় ভাবে যাতায়াত করতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা নিয়েছিল। এখনও রাস্তায় বাসগুলির দেখা পেলে অনেকে তাতে চেপে বসেন। ওই বাসে সুবিধা বলতে ভিতরে কোনও যাত্রীকে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না। ফলে, বসার জায়গা না থাকলে বাসগুলিতে যাত্রী তোলা হয় না।

আবাসিকদের সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’র সম্পাদক সমীর গুপ্তের কথায়, ‘‘হিডকোর ওই বাসগুলি চোখে দেখা যায় না। তবে, কেউ তাতে চাপতে পারলে আরামদায়ক ভাবে সফর করতে পারেন। নিউ টাউনে প্রবীণ নাগরিকদের বসবাস অনেক বেশি। অনেকেরই গাড়ি নেই। স্বল্প দূরত্বের মধ্যে যাতায়াত করতে অটো-টোটোর চড়া অঙ্কের ভাড়া দিতে হয়। অথচ, হিডকো চাইলে এই ধরনের বাসের সংখ্যা বাড়াতেই পারে। তার বদলে নিউ টাউনও বিধাননগর বা কলকাতার মতো অটো আর টোটোর গ্রাসে চলে যাচ্ছে।’’

বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ঠিকানা নিউ টাউন। ভিন্‌ রাজ্য থেকে অনেকেই এখানে চাকরি সূত্রে আসেন। ফলে, প্রথম থেকেই নিউ টাউনকে দূষণমুক্ত রাখার এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। হিডকো-র পুরনো আধিকারিকেরা জানান, সেই সময়ে ব্যাটারিচালিত ওই বাস দিয়েছিল কোল ইন্ডিয়া। এক দুপুরে নিউ টাউনের ক্লক টাওয়ারের কাছ থেকে ইকো পার্ক যেতে ১৫০ টাকা ভাড়া হাঁকতে দেখা গেল এক জন টোটোচালককে। ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’ জানাচ্ছে, এই চড়া হারে ভাড়ার উপরে নিয়ন্ত্রণের দাবিতে হিডকো, ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ এবং পুলিশ সব জায়গাতেই স্মারকলিপি দিয়ে দরবার করেছে। সূত্রের খবর, কত সংখ্যক অটো বা টোটো নিউ টাউনে চলে, তার কোনও হিসাবও সরকারি স্তরে নেই।

হিডকো সূত্রের খবর, পাঁচ নম্বর সেক্টর মেট্রো থেকে ইকো পার্ক বা টাটা ক্যানসার হাসপাতালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে ওই তিনটি বাসের রুট। অথচ, নিউ টাউনে বর্তমানে এমন অনেক ব্লক রয়েছে, যেখান থেকে বিশ্ব বাংলা সরণি অবধি পৌঁছনো বেশ কষ্টসাধ্য।

হিডকো বর্তমানে নগরোন্নয়ন দফতরের হাত থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের অধীনে গিয়েছে।হিডকো-র এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা যথাসম্ভব তিনটি বাসের পরিষেবা চালু রেখেছি। কেন বাস বাড়ানো যায়নি, তা উপর মহল বলতে পারবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

New Town

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy