Advertisement
E-Paper

সাড়ে ১৩ বছরে ঝুলিতে ‘রান’ ৪২২

বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্তা প্রবীরবাবু। তাঁর নিউ আলিপুরের জয়কৃষ্ণ পাল রোডের বাড়িটির তিনতলায় রয়েছে ঠাকুরঘর ও ছবির সংগ্রহশালা।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩১
ঠাকুরঘর ও সংগ্রহশালায় প্রতিমার সামনে প্রবীর মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

ঠাকুরঘর ও সংগ্রহশালায় প্রতিমার সামনে প্রবীর মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

তিনি শক্তির উপাসক। তবে নিছক এই পরিচয়ের জন্য নয়। এক সময়ে জানার ইচ্ছা থেকে তিনি সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন বিভিন্ন দেশের কালী এবং শক্তির দেবীর ছবি। আগ্রহ যত বেড়েছে ৬৭ বছরের বৃদ্ধের ঘর ততই ভরে উঠেছে কালীর ছবিতে। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা প্রবীর মিশ্রের সংগ্রহে ৪২২টি কালী এবং শক্তির দেবীর ছবি রয়েছে।

বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্তা প্রবীরবাবু। তাঁর নিউ আলিপুরের জয়কৃষ্ণ পাল রোডের বাড়িটির তিনতলায় রয়েছে ঠাকুরঘর ও ছবির সংগ্রহশালা। ১৪ বাই ১৪ ফুটের ঘরের তিন দিকের দেওয়াল জুড়ে অসংখ্য বাঁধানো ছবি। কোনওটি ভয়ঙ্কর দর্শন কালী তো কোনওটি আবার চেনা কালী মূর্তির থেকে একে বারে আলাদা। প্রতিটি ছবির নীচে সাঁটানো রয়েছে হলুদ কাগজের টুকরো। তাতে হাতে লেখা, ওই বিগ্রহের নাম ও স্থান। প্রবীরবাবুর দাবি, তাঁর সংগ্রহের তালিকায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, ব্রাজিল, জার্মানি, মিশর, পাকিস্তান, বালুচিস্তান, আফগানিস্তান, নাইজেরিয়া-সহ মোট ২৮টি দেশের কালী ও শক্তির দেবীর ছবি রয়েছে।

১৯৯৭ সালে প্রবীরবাবু কালী প্রতিমার ছবি সংগ্রহ শুরু করেন। তিনি জানান, কালী ও শক্তির দেবী সম্পর্কে জানতে শক্তিপুরাণ, শিবপুরাণও পড়েন তিনি। আরও জানতে জাতীয় গ্রন্থাগার, নবদ্বীপের বিষ্ণুপ্রিয়া টোল এবং পুরীর পণ্ডিত সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘ওই তিন জায়গায় বারবার গিয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আসলে শক্তির দেবীকে দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।’’ বিভিন্ন দেশের কালী ও শক্তির দেবীর ছবি বিদেশে থাকা বন্ধুদের মাধ্যমে আনাতেন তিনি। ক্যামেরা নিয়ে নিজেও পাড়ি দিতেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে।

এমনকি যেখানে ছবি তোলা নিষিদ্ধ, সেখানে লুকিয়ে হলেও ক্যামেরাবন্দি করতেন বিগ্রহের ছবি। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন সেই সব ‘অপরাধের’ কথা। এক বার মুঙ্গেরে ৬৪ যোগিনী কোটি বিগ্রহের ছবি তুলতে নিজের জামার বুক-পকেট সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে ফুটো করেছিলেন। সেখানে মোবাইল রেখে ক্যামেরা চালু করে মন্দিরে ঢুকে তুলে এনেছেন ছবি। পাশাপাশি ক্যামেরার নোটবুকে লিখে রাখেন সেই বিগ্রহের নাম ও বিবরণ। বিদেশ থেকে যে সব ছবি সংগ্রহ করেন, তারও নাম-বিবরণ চেয়ে নেন বন্ধুদের থেকে। ১৯৯৭ থেকে পড়াশোনা ও ছবি সংগ্রহ শুরু করলেও এ বিষয়ে তাঁর ঝোঁক বাড়ে ২০০৫ থেকে। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে তিলতিল করে এত সব সংগ্রহ করেছি। ৪২২টি ছবি ছাড়াও বাংলার কালীর যত রূপের নাম জানি প্রায় সব মূর্তিই রয়েছে আমার ঠাকুর ঘরে।’’

জয়কৃষ্ণ পাল রোডের বাড়ির ঠাকুরঘরের কালী মূর্তিটি বড় শিব মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে দশ হাতের শ্যামাকালী। নীচে শুয়ে আরও একটি শিব। কালীর কোলে রয়েছেন বিষ্ণু। নিত্যপুজো ও প্রতি অমাবস্যার পুজো ছাড়াও কালী পুজোর সব আচার মেনেই উপাসনায় বসেন শক্তির দেবীর ছবি সংগ্রহক বৃদ্ধ প্রবীরবাবু।

Kali Collection Goddess
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy