Advertisement
E-Paper

অবিক্রীত ২০০ দুর্গা মূর্তিকে জগদ্ধাত্রীতে বদলের ভাবনা

স্রেফ করোনার জন্য প্রায় ২০০ প্রতিমার বায়না দিয়েও শেষ পর্যন্ত বরাত বাতিল করতে হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। সব মিলিয়ে চরম সঙ্কটে কুমোরটুলির শিল্পীরা। 

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০২:১৫
অনাদরে: পড়ে রয়েছে বিক্রি না হওয়া দুর্গা প্রতিমা। মঙ্গলবার, কুমোরটুলিতে। ছবি: সুমন বল্লভ

অনাদরে: পড়ে রয়েছে বিক্রি না হওয়া দুর্গা প্রতিমা। মঙ্গলবার, কুমোরটুলিতে। ছবি: সুমন বল্লভ

অনেক কষ্টে গড়া দুর্গা প্রতিমার দিকে অনেক ক্ষণ ধরে তাকিয়েছিলেন কুমোরটুলির শিল্পী বাবু পাল। করোনা তাঁদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে বলে আক্ষেপ পটুয়াপাড়ার শিল্পীদের। স্রেফ করোনার জন্য প্রায় ২০০ প্রতিমার বায়না দিয়েও শেষ পর্যন্ত বরাত বাতিল করতে হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। সব মিলিয়ে চরম সঙ্কটে কুমোরটুলির শিল্পীরা।

পটুয়াপাড়ায় তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। বিসর্জনের জন্য কুমোরটুলির ঘাটে প্রতিমা নিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েক জন উদ্যোক্তা। পাশের কুমোরটুলি পাড়ায় মনখারাপের রেশ কেমন যেন একটু বেশিই। একসঙ্গে এতগুলো প্রতিমার বিক্রি না হওয়াটা সর্বকালীন রেকর্ড বলে মনে করছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী সাংস্কৃতিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রঞ্জিত সরকার। তাঁর কথায়, “এক-একটা প্রতিমা গড়তে শিল্পীদের অনেক মেহনত করতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আনা শ্রমিকদের জন্য এ বার একটু বেশিই খরচ করতে হচ্ছে। এ বার কুমোরটুলি পাড়ায় সব মিলিয়ে ২০০টি প্রতিমা বায়না হওয়ার পরেও বিক্রি হয়নি। এই ক্ষতি কী ভাবে পূরণ হবে জানা নেই।”

শিল্পী বাবু পালের কাছে প্রতিবার দুর্গা প্রতিমার বরাত দেয় বেলুড়ের একটি আবাসন। ওই আবাসনের পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা পোদ্দার বললেন, “আমরা বাবু পালের কাছে বেশ বড় প্রতিমার বায়না দিই। আমাদের এ বারের বাজেট ছিল এক লক্ষ টাকার কিছু বেশি। সেই মতো মাস কয়েক আগে দশ হাজার টাকা বাবু পালকে অগ্রিম জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু পুজোর ক’দিন আগে করোনার কথা মাথায় রেখে এবং হাইকোর্টের নির্দেশের পরে পুজো বাতিল করা হয়। তবে বাকি টাকার বেশ কিছুটা যাতে বাবু পাল হাতে পান তার ব্যবস্থা করছি।”

দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ এলাকার একটি বারোয়ারি পুজো কমিটির সভাপতি মানস জোয়ারদার বলেন, “আমরা পুজোর দিন কয়েক আগে পুজো বাতিল করি। করোনার কথা মাথায় রেখেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”

করোনা তাঁদের এতটা খারাপ অবস্থা করবে, তা ভাবতে পারছেন না শিল্পী কাঞ্চি পাল। তাঁর কথায়, “আমার তিনটে বায়না করা প্রতিমা এ বার বিক্রি হয়নি।” তবে বিক্রি না হওয়া প্রতিমাগুলিকে যাতে জগদ্ধাত্রী প্রতিমার রূপ দেওয়া যায়, তার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন কুমোরটুলির শিল্পীরা। তবে সেখানেও একটা বড় প্রশ্ন। “করোনার মরসুমে এত বড় জগদ্ধাত্রী প্রতিমাও কি বিক্রি হবে, কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না,” বলছিলেন কুমোরটুলি প্রগতিশীল সাজশিল্প ও মৃৎশিল্প সমিতির সম্পাদক অপূর্ব পাল। সামনেই কালীপুজো। দুর্গা প্রতিমা তৈরির এই সঙ্কট কালী পুজোয় কী ভাবে ঘুচবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় শিল্পীরা।
একাদশীর বিকেলে নিজের স্টুডিওয় মুখ ভার করে বসেছিলেন রামগোপাল পাল, গোবিন্দ পাল, রমেন পালেরা। গত পাঁচ মাস ধরে অনেক কষ্টে রাত জেগে প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। জগদ্ধাত্রী পুজোয় ওই প্রতিমাগুলি কি আদৌ বিক্রি হবে? করোনা আবহে সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে কুমোরটুলির শিল্পীদের কাছে।

Durga Puja Kumartuli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy