E-Paper

নকল নথি দিয়ে শহরে বসেই তৈরি করা হয় তিন হাজারের বেশি ভুয়ো পাসপোর্ট!

হরিদেবপুর থানা এলাকার মতিলাল গুপ্ত রোডের একটি অফিসে হানা দিয়ে গোয়েন্দারা প্রচুর জাল নথি, নথি তৈরিতে ব‍্যবহৃত কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং অন‍্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:১০
কলকাতার বাইরে জেলাতেও একই কায়দায় প্রচুর ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

কলকাতার বাইরে জেলাতেও একই কায়দায় প্রচুর ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।

ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার। ধৃতের নাম দীপঙ্কর দাস। মঙ্গলবার রাতে তাকে পর্ণশ্রী থানা এলাকার বেচারাম চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে ধরে লালবাজারের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। দীপঙ্করকে জেরা করে হরিদেবপুর থানা এলাকার মতিলাল গুপ্ত রোডের একটি অফিসে হানা দিয়ে গোয়েন্দারা প্রচুর জাল নথি, নথি তৈরিতে ব‍্যবহৃত কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং অন‍্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছেন। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিল এবং ৩৬টি ভারতীয় পাসপোর্টের ফোটোকপি। মিলেছে শেনগেন এবং ব্রিটেনের ভিসাও। সেই সঙ্গে এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি জায়গাতেও অভিযান চালান তদন্তকারীরা।

এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, দীপঙ্করের কাজ ছিল ভুয়ো পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নথি, যেমন, আয়কর রিটার্ন এবং অন্য বিভিন্ন করের কাগজপত্র তৈরি করা। সেই সব নথি পৌঁছে দেওয়া হত চক্রের আর এক পান্ডা সমরেশ বিশ্বাসের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে সমরেশ, তার ছেলে রিপন এবং দু’টি ডাকঘরের দুই অস্থায়ী কর্মী তারকনাথ সেন এবং দীপক মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই দীপঙ্করের নাম উঠে আসে।

বুধবার দীপঙ্করকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, ধৃতের কাছ থেকে প্রচুর জাল নথি উদ্ধার হয়েছে। যা দেখে মনে করা হচ্ছে, এই চক্রের কয়েক হাজার পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল কলকাতায়। এর পরেই আদালত ধৃতকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করছে, শুধু কলকাতাতেই ভুয়ো নথি দিয়ে তিন হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট তৈরি করেছে সমরেশ ও তার দলবল। সেই সঙ্গে কলকাতার বাইরে জেলাতেও একই কায়দায় প্রচুর ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা জেনেছেন, এই ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে ৭৩ জন ইতিমধ্যেই বিদেশে পৌঁছেছে। তাদের সম্পর্কে খোঁজখবরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রে বেশ কয়েক জন এজেন্টও জড়িত। যারা মূলত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। তারাই সমরেশ এবং রিপনের সঙ্গে বাংলাদেশিদের যোগাযোগ করিয়ে দিত। এর পরে সমরেশের নির্দেশে জাল নথি তৈরি করে দিত দীপঙ্কর। তবে, প্রতিটি পাসপোর্ট আবেদনকারীর হাতে দেওয়ার আগে তার পুলিশি যাচাই করা হয়ে থাকে। ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির সময়ে কেন পুলিশি যাচাই হয়নি, বা তা হলেও সেটি কী ভাবে পুলিশকর্মীদের নজর এড়িয়ে গেল, সব কিছুই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police arrest Fake Documents

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy