Advertisement
E-Paper

জেল থেকে এল হুমকি-ফোন, আতঙ্ক এলাকায়

কেউ ফোন পাচ্ছেন, ‘খুনের মামলা তুলে নে, না হলে তোর দিদির মতোই খুন করব তোকে।’ কারও কাছে আবার ফোন আসছে, ‘‘যে টাকা বলছি সেটা রেডি করে রাখিস। না হলে বডিটাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ অভিযোগ, দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকেই আসছে এমন সব ফোন।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০০:২১
—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

জেল থেকে বলছি! এই একটা ফোন পেয়েই কার্যত রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে কারও কারও।

কেউ ফোন পাচ্ছেন, ‘খুনের মামলা তুলে নে, না হলে তোর দিদির মতোই খুন করব তোকে।’ কারও কাছে আবার ফোন আসছে, ‘‘যে টাকা বলছি সেটা রেডি করে রাখিস। না হলে বডিটাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ অভিযোগ, দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকেই আসছে এমন সব ফোন। বিষয়টি নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশে অভিযোগ হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবশ্য ভয়ে অভিযোগই জানাচ্ছেন না অনেকে। যদিও তাতে ফোন আসার বিরাম নেই।

মাঝে এমন বেশ কিছু হুমকি-ফোনের ঘটনার প্রেক্ষিতে দমদম সেন্ট্রাল জেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তদন্তের পরে সরানো হয় জেলের পুলিশ অফিসার এবং কিছু কয়েদিকেও। কিন্তু কমেনি জেল থেকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা। তবে ডিরেক্টর জেনারেল (জেল) অরুণকুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, কোনও নির্দিষ্ট ঘটনা জানা না থাকলে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।

হুমকি-ফোন আসার সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত এলাকায়। সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ছাত্রী জানিয়েছেন, গত ২৭ জুন তাঁর দিদি সান্ত্বনা চক্রবর্তী মারা যান। সান্ত্বনার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় তাঁর পরিবার। ধরা পড়েন সান্ত্বনার স্বামী দেবপ্রিয় চক্রবর্তী। আপাতত তিনি দমদম সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগে সোমা জানিয়েছেন, দেবপ্রিয় ধরা পড়ার পর থেকেই তাঁর কাছে দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে হুমকি-ফোন আসতে শুরু করে। ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘ফোনে বলা হয়, জেল থেকে বলছি। মামলা তুলে নে। না হলে তোর অবস্থাও তোর দিদির মতোই হবে।’’

এর দিন কয়েক আগেই বারাসত-মধ্যমগ্রামের কয়েক জন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছিলেন, দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে পদ নামে এক আসামি তাঁদের ফোন করে টাকা চেয়ে হুমকি দিচ্ছে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু অদলবদল হয় দমদম সেন্ট্রাল জেলে। পদ-কে সরিয়ে দেওয়া হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। ক’দিন আগে সেখানেই মারা যায় সে।

জেলে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ। কোনও আসামির সব কিছু জমা রেখেই তাঁকে জেলের ‘সেলে’ রাখার নিয়ম। এমনকী পুলিশকর্মী, কারারক্ষী, বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদেরও জেলে ফোন নিয়ে ঢোকার নিয়ম নেই। তার পরেও কী ভাবে জেলের মধ্যে ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল?

কারা দফতরের এক কর্তা জানান, কারাকর্মীদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশেই মোবাইল ঢুকে যায় জেলে। যেমনটা হয়েছে দমদম সেন্ট্রাল জেলের ক্ষেত্রেও। বহু ক্ষেত্রে পরিবার বা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনেক কয়েদি মোবাইল ব্যবহার করেন। জেলের মধ্যে কথা বলার জন্য মোবাইল ভাড়াও পাওয়া যায়। সে সব মোবাইল থেকেই কোনও কোনও অপরাধী এমন হুমকি-ফোন করে থাকে।

জেলে মোবাইল ব্যবহার প্রসঙ্গে ডিজি (জেল) অরুণবাবু শুধু বলেছেন, ‘‘জেলে জ্যামার বসানো থাকে।’’ তবে তা নিয়ে এক কারারক্ষীরই পাল্টা বক্তব্য, জ্যামার এড়িয়ে জেলের মধ্যে কোথায় কোথায় মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে, তা-ও ভাল ভাবে জানেন কয়েদিরা। সেখান থেকেই মোবাইলে কথা বলা হয়।

Threat Call Jail Prision
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy