প্রতীকী ছবি।
এ যেন ‘প্রতারক’ সেজে প্রতারণা।
এফসিআই-এর চাল বেআইনি ভাবে পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছিল এক প্রতারক। তার পরে ওই ব্যবসায়ীকে বোকা বানাতে প্রতারণা-চক্রের অন্য দুই সদস্য ট্যাক্সিতে এসে তাঁর সামনে থেকেই টাকা নেওয়া প্রতারককে মারতে মারতে ট্যাক্সিতে তুলে নিয়ে যায়।
গত শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে তারাতলা থানার হাইড রোডে, এফসিআই-এর গুদামের সামনে। কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছে ওই চক্রের তিন জন।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের এক জন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন এএসআই রাধাকৃষ্ণ সিংহ। বছর দশেক আগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল লালবাজার। শনিবার রাতে নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে ধরে তালতলা থানার পুলিশ। ধৃতকে জেরা করেই রবিবার বেহালা থেকে দীপঙ্কর নাগ ও বরাহনগর থেকে দেবাশিস ঘোষালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দীপঙ্কর অটো চালায়। চক্রের মূল মাথার খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ জানায়, বরাহনগরের এক চামড়ার ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল দেবাশিসের। ওই ব্যবসায়ীকে দেবাশিস জানায়, সে এফসিআই-এর চাল কম দামে জোগাড় করে দেবে। তার জন্য শুধু রেজিস্ট্রেশন বাবদ কিছু টাকা দিতে হবে। ব্যবসায়ী ওই টাকা দেওয়ার পরে অগ্রিম বাবদ আরও টাকা চায় দেবাশিস। ঠিক হয়, শুক্রবার বিকেলে হাইড রোডে এফসিআই-এর গুদামের সামনে ওই টাকার লেনদেন হবে। তবে সেখানে দেবাশিস নিজে থাকবে না। তার বদলে থাকবে তারই এক পরিচিত।
নির্ধারিত সময়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছে যায় দেবাশিসের সেই পরিচিত। ওই ব্যক্তি এখনও পলাতক। সে কয়েক লক্ষ টাকা ভর্তি ব্যাগ নেওয়ার পরেই একটি ট্যাক্সিতে সেখানে আসে রাধাকৃষ্ণ সিংহ এবং দীপঙ্কর নাগ। কলকাতা পুলিশের সাদা উর্দি পরে ছিল রাধাকৃষ্ণ। দীপঙ্কর ছিল সাদা পোশাকে। তারা গাড়ি থেকে নেমেই টাকা হাতে থাকা যুবককে দেখে বলে, ‘এই তো পেয়েছি। পালাবি কোথায়?’ এক পুলিশকর্তা জানান, এর পরেই তাকে দু’তিনটে থাপ্পড় মেরে গাড়িতে তুলে সেখান থেকে চলে যায় ওই দু’জন। এর পরে প্রতারিত ব্যবসায়ী তারাতলা থানায় যোগাযোগ করে সব কথা জানান।
তাঁর কাছ থেকে ওই ট্যাক্সির নম্বর পেয়ে চালককে যোগাযোগ করে পুলিশ। তিনি জানান, খিদিরপুর থেকে তারাতলা মোড় যাওয়ার জন্য ওই দু’জন ট্যাক্সি ভাড়া নিয়েছিল। ওই চালকের কাছ থেকে পুলিশ একটি নম্বর পায়। যা সেই বরখাস্ত হওয়া পুলিশকর্মীর বলে জানিয়েছিলেন চালক। ওই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে একটি ছবি পান তদন্তকারীরা। সেই ছবি নিয়ে লালবাজারের অন্দরে খোঁজ-খবর শুরু করতেই রাধাকৃষ্ণের সন্ধান মেলে।
পুলিশের দাবি, ধৃতেরা অপরাধ কবুল করেছে। টাকা গায়েব করতেই যে ওই অপহরণের নাটক করা হয়েছিল, তা-ও জানায় তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy