এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
মধ্যরাতে এক মহিলা জুনিয়র ডাক্তার এবং তাঁর দুই সঙ্গীকে হাসপাতাল চত্বরেই মারধরের অভিযোগ উঠল নির্মাণ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তেরা মত্ত অবস্থায় জুনিয়র ডাক্তারদের গালিগালাজ এবং যৌন হেনস্থা করে বলেও অভিযোগ। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে এন্টালি থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিন নির্মাণ শ্রমিকের নাম অভিজিৎ ঘোষ, প্রসেনজিৎ ঘোষ এবং পূর্ণেন্দু বিশ্বাস। তিন জনই হাসপাতালের দু’নম্বর গেট সংলগ্ন নির্মীয়মাণ ভবনে শ্রমিক হিসাবে কাজ করত। ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর, যৌন হেনস্থা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তিন জনকে বুধবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। তাদের দু’দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ অর্থোপেডিক বিভাগের এক মহিলা জুনিয়র চিকিৎসক তাঁর দুই সহকর্মীকে নিয়ে নির্মীয়মাণ বহুতল ভবনের উপরে উঠেছিলেন। সেই ভবন ঘুরে দেখার সময়ে অভিযুক্ত নির্মাণ শ্রমিকদের কয়েক জন তাঁদের বাধা দেয়। এই বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বচসা চলাকালীন আচমকা কয়েক জন নির্মাণ শ্রমিক জুনিয়র চিকিৎসকদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। মারধরের পাশাপাশি তাঁদের যৌন হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। অভিযুক্তেরা মত্ত অবস্থায় ছিল বলে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি।
হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসক বললেন, ‘‘হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচির খবর পেয়ে আমরা যাই। নির্মীয়মাণ ভবনের ভিতরে ঢুকে দেখি, কয়েক জন চিকিৎসককে ঘিরে ধরে মারধর করা হচ্ছে। এর পরে মারমুখী কয়েক জনের হাত থেকে কোনও মতে বাকিদের রক্ষা করি।’’ এ দিকে, রাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। দ্রুত এন্টালি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতেই প্রাথমিক চিকিৎসার পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা জুনিয়র চিকিৎসক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করে এন্টালি থানার পুলিশ।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত নির্মাণ শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে ভবন তৈরির কাজে নিযুক্ত সংস্থার ঠিকাকর্মী। কাজ শেষে তারা নির্মীয়মাণ ভবনেই থাকত। তবে কী কারণে হঠাৎ তারা জুনিয়র চিকিৎসকদের উপরে চড়াও হল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, অভিযোগকারীরা কেন ওখানে গিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে, হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রাতে ঠিক কী হয়েছিল, হাসপাতালের তরফে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ভাবে মারধর কখনওই কাম্য নয়। জুনিয়র চিকিৎসকেরা রাতে ওই নির্মীয়মাণ ভবনে কেন গিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy