Advertisement
E-Paper

হামলায় ষড়যন্ত্রী প্রতাপ, বলল পুলিশই

২০১৫ সালের পুর নির্বাচনের মুখে পুলিশকর্মীর উপরে হামলার ঘটনায় ‘ফেরার’ তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহাকে আলিপুর আদালতে জামিন নিতে ঢুকতে দেখেও পুলিশ কিছু করেনি। পুলিশ আপত্তি না করায় আদালত থেকে জামিনও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪১
আনা হল প্রতাপকে। শুক্রবার।

আনা হল প্রতাপকে। শুক্রবার।

তিন বছরের মধ্যে বদলে গেল ছবিটা!

২০১৫ সালের পুর নির্বাচনের মুখে পুলিশকর্মীর উপরে হামলার ঘটনায় ‘ফেরার’ তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহাকে আলিপুর আদালতে জামিন নিতে ঢুকতে দেখেও পুলিশ কিছু করেনি। পুলিশ আপত্তি না করায় আদালত থেকে জামিনও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

গত ২৭ মার্চ আলিপুরে তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্রের উপরে হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে প্রতাপকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে আদালতে পেশ করে শুধু জামিনের বিরোধিতা করাই নয়, বিপ্লববাবুকে মারধর ও খুনের চেষ্টার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে প্রতাপকে অভিযুক্ত করল পুলিশ।

আদালত প্রতাপের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ধোলাহাট থানা এলাকা থেকে প্রতাপ ও তাঁর পাঁচ সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন ওই ছ’জনকে আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে পেশ করে সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত রং বলেন, ‘‘সিসিটিভি-র ছবিতে সব প্রমাণ রয়েছে। শুধু বিপ্লববাবুর উপরে হামলাই নয়, প্রতাপ বাহিনীর মারে সাহেব রজক নামে এক তৃণমূলকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি খিদিরপুরের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।’’ এর পরেই আদালত প্রতাপ ও তাঁর সঙ্গীদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

আলিপুর আদালতের বাইরে উপচে পড়ছে ভিড়।

ওই ঘটনায় ১২ জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতেরা পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

এ দিন আদালত চত্বরে প্রতাপ এবং বিপ্লব— দু’পক্ষেরই লোকজন হাজির ছিলেন। প্রতাপের সঙ্গীদের আশা ছিল, রাজ্যের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ওই যুব তৃণমূল নেতার জামিন পেতে এ বারও কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। বিপ্লবের ঘনিষ্ঠদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরের সরকারি প্রকল্পের কাজকর্ম দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিপ্লবকে। প্রতাপ সেই প্রকল্প থেকে তোলা তুলতে গিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেই চটিয়ে দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই ফেরার হয়ে গিয়েছিলেন প্রতাপ ও তাঁর কয়েক জন ঘনিষ্ঠ অনুগামী। তদন্তকারীদের কথায়, দিন তিনেক আগে প্রতাপ ধোলাহাট এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলেন। বৃহস্পতিবার ওই আত্মীয়ের বাড়ি থেকেই প্রতাপকে গ্রেফতার করা হয়।

এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ঘটনার পরে কয়েক দিন পর্যন্ত প্রতাপ তাঁর নিজের মোবাইল থেকেই অনুগামীদের ফোন করছিলেন। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় ধোলাহাটের পশ্চিম শ্রীধরপুর এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি। প্রতাপের মোবাইলে আড়ি পাতা হয়েছিল।’’ প্রতাপ নিজের ফোন থেকে যে অনুগামীদের ফোন করছিলেন, তাঁদের ফোনেও আড়ি পাতা হয়। দেখা যায়, গোপাল শীল নামে এক জনের নামে থাকা মোবাইল থেকে তাঁর অনুগামীদের কাছে ফোন আসছিল। ওই ব্যক্তির ঠিকানা, ধোলাহাট থানার পশ্চিম শ্রীধরপুর।

বৃহস্পতিবার রাতে লালবাজারের একটি দল ওই গ্রামে হানা দেয়। গোপাল শীলের বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘ওই বাড়িতে একাধিক সিঁড়ি রয়েছে। আমরা দেখি, প্রতাপ ও তাঁর দলবল সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালাচ্ছেন। আমরাও চারটি দলে ভাগ হয়ে প্রতাপদের পিছনে ধাওয়া করি। এক সময়ে আমরা ওঁদের চার দিক থেকে ঘিরে ফেলি।’’ রাতেই প্রতাপদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।

যে বাড়িতে প্রতাপ আশ্রয় নিয়েছিলেন, তার মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে জমজমাট আসর বসেছিল। প্রতাপ ও তাঁর সঙ্গীদের কোনও অস্ত্রশস্ত্র ওই বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।

ছবি: শৌভিক দে

TMC Pratap Saha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy