Advertisement
E-Paper

তাপ্পি-টায়ার রোধে নয়া বিধি

রাজ্যে একের পর এক স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার মূল কারণই হচ্ছে, বেআইনি তাপ্পি দেওয়া টায়ার। পরিসংখ্যানও বলছে সে কথা। তাই এ বার চাকায় তাপ্পি মারার প্রবণতা আটকাতে নতুন পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:১৫

রাজ্যে একের পর এক স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার মূল কারণই হচ্ছে, বেআইনি তাপ্পি দেওয়া টায়ার। পরিসংখ্যানও বলছে সে কথা। তাই এ বার চাকায় তাপ্পি মারার প্রবণতা আটকাতে নতুন পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘‘রিসোলিং আটকাতে এ বার থেকে গাড়ি পরীক্ষা, ফিটনেস সার্টিফিকেট (সি এফ) তৈরির সময়ে টায়ারের নম্বর এবং তৈরির সাল গাড়ির কাগজপত্রে নথিভুক্ত করা হবে। এর ফলে দুর্ঘটনাও কমবে।’’

সব টায়ারের এক পাশে লেখা থাকে প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং মডেলের নাম। সঙ্গে লেখা থাকে নম্বর, কবে তৈরি হয়েছে এবং টায়ারটি কতটা পুরু— সেই সব তথ্যও। এই সমস্ত তথ্যই গাড়ির কাগজপত্রে এবং পরিবহণ দফতরের কাছে রাখা থাকবে বলে বোঝাতে চেয়েছেন মন্ত্রী। কিন্তু যাদের আটকাতে এই ‘ফাঁদ’, এর থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যেই অন্য ফিকির খুঁজে নিয়েছেন তাঁরা।

কেমন? পুরোনো টায়ারের উপরে কেসিং সেঁটে তার পরে নকশা কেটে হুবহু নতুন টায়ারের মতো করে তৈরি হয় তাপ্পি মারা টায়ার। এমন টায়ার ব্যবহার করা কিছু বাস চালকদের কথায়, রিসোলিং হয় টায়ারের উপরে। তথ্য লেখা থাকে পাশে। ফলে তাপ্পি মারা হলেও তথ্যের বিকৃতি ঘটবে না। তাই রাজ্য যত কড়াই হোক না কেন, সমস্যা নেই তাঁদের।

রাজ্যের অবশ্য দাবি, এ ব্যবস্থা শুরু হলেই সমস্যা টের পাবেন চালকেরা। পরিবহণ দফতরেরই এক কর্তা জানান, তাঁদের দফতর থেকে ব্যক্তিগত মালিকানার গাড়িগুলিকে ৫ বছর অন্তর এফ সি করাতে হয়। বাস, ট্রাকের মতো বাণিজ্যিক গাড়ির এফ সি নিতে হয় প্রতি বছরই। বহু ক্ষেত্রেই গাড়িচালকেরা নতুন চাকা লাগিয়ে পরীক্ষায় পাশ করে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে যান। পরে আবার ব্যবহার করেন তাপ্পি মারা টায়ার। ওই পরিবহণ কর্তার বক্তব্য, গাড়ির নম্বর ও তৈরির সাল নথিভুক্ত থকলে এ বার থেকে সেই অন্যায়ের প্রবণতা রোখা যাবে। ওই পরিবহণ কর্তার কথায়, চালু গাড়ির ক্ষেত্রে এক-একটি টায়ার কত বছর চলবে, তারও একটি সময়সীমা থাকে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, ১০-১৫ বছরের পুরোনো একটি টায়ারও তাপ্পি মেরে চালানো হচ্ছে। এ বার থেকে সে সব ঘটনা ধরা পড়ে যাবে। গাড়ি কত কিলোমিটার চলেছে, সেই হিসেব দেখেই সহজে জেনে নেওয়া যাবে টায়ার কত দিনের পুরনো।

কিন্তু এত কিছু বিধি-নিষেধের পরেও কেন তাপ্পি মারা টায়ারের এত রমরমা?

গাড়ি চালকদের কথায়, নতুন টায়ার ও তাপ্পি দেওয়া টায়ারের দামের মধ্যে বিশাল ফারাকের জন্যই এই অবস্থা। এক বাসচালক জানালেন, বাসের চাকার দাম ২৫ হাজারের কাছাকাছি। সেখানে ১০ হাজারে মেলে রিসোল করা টায়ার। বাসে ছ’টি চাকা লাগে। সেই হিসেবে তাপ্পি মারা টায়ার লাগালে একটি বাসেই ৯০ হাজার টাকার মতো লাভ থাকে। এই কারণেই এত সমস্যা বলে জানাচ্ছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। তাঁদের কথায়, মেশিনে তৈরি আসল চাকার সঙ্গে হাতে তৈরি রিসোল টায়ারের তফাত বিস্তর। রিসোল টায়ারের উপরের ফাঁক ঠিক মতো না হওয়ায় গতি দ্রুত থাকলেও মাটি আঁকড়ে চলা বা ব্রেক কষার পরে গাড়ি থামার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। সে জন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। সে কারণেই তাপ্পি মারা টায়ারের ব্যবহার ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে বক্তব্য পরিবহণ দফতরের।

School bus Accident Student Tire
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy