আপনার গাড়ি ট্র্যাফিক-বিধি ভেঙেছে। এখনই জরিমানা দিতে হবে। বিশ্বাস না হলে বিধিভঙ্গ সংক্রান্ত ছবি দেখেও নিতে পারেন। এমন বার্তা নিয়ে আসা মেসেজের লিঙ্কে ক্লিক করলেই সর্বনাশ! মুহূর্তে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে গচ্ছিত টাকা। এই বিষয়ে গত কয়েক দিন ধরেই প্রচার শুরু করেছে পুলিশ। ফোনে এমন বার্তা এলে কোনও ভাবেই লিঙ্কে ক্লিক না করতে বলার পাশাপাশি দ্রুত পুলিশকেও জানাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও এমন বার্তার ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হলেন এক ব্যক্তি। পর্ণশ্রী থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়ে কুণাল মাইতি নামে ওই ব্যক্তির দাবি, প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত মাসে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগে কুণাল দাবি করেছেন, তিনি গত মাসে এই সংক্রান্ত একটি মেসেজ পান। তাতে লেখা ছিল, তাঁর গাড়ি সিগন্যাল ভেঙেছে। মেসেজে তাঁর গাড়ির নম্বরটিও দেওয়া ছিল। জরিমানার অঙ্ক হিসাবে তাতে ১৩২০ টাকা এখনই মেটাতে বলা হয়েছিল। ওই ব্যক্তির দাবি, মেসেজটি এমন ভাবে লেখা ছিল, যা দেখে বোঝার উপায়ই নেই যে, সেটি ফাঁদ পাতার জন্য তৈরি। ওই ট্র্যাফিক-বিধি ভঙ্গের ছবিও প্রয়োজনে দেখা যাবে বলে লেখা ছিল মেসেজে। বিষয়টি দেখে নিশ্চিত হতেই এর পরে লিঙ্কে আঙুল ছোঁয়ান কুণাল। তাঁর অভিযোগ, এর পরে একাধিক দফায় মোট পাঁচ লক্ষ ১৩ হাজার ৭৫০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে। ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তিনি গত বুধবার পুলিশের দ্বারস্থ হন।
খোঁজ করে জানা গিয়েছে, এমন মেসেজ পেয়েছেন অনেকেই। সমাজমাধ্যমে অনেকেই এ ব্যাপারে লিখেছেন। এমনই এক জনের দাবি, তাঁর একটি স্কুটার রয়েছে। সেটি বাড়ি থেকে সাধারণত বার করা হয় না। দূরে নিয়ে যাওয়ারও প্রশ্ন নেই। কিন্তু সেই স্কুটারই ট্র্যাফিক-বিধি ভঙ্গ করেছে এবং এমন জায়গায় তা ঘটেছে বলে মেসেজ আসে, যা দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। এর পরে তিনি দেখেন, মেসেজটি এসেছে যে নম্বর থেকে, সেটি বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। নম্বরটির আগে কলোম্বিয়ার কোড ব্যবহার করা হয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় তিনি আর এগোননি। লালবাজারের কর্তারা জানাচ্ছেন, এমন মেসেজ পেলে এড়িয়ে চলুন। কোনও ভাবেই লিঙ্কে ক্লিক করা চলবে না। মনে রাখতে হবে, জরিমানা মেটানোর জন্য পুলিশ তৎক্ষণাৎ চাপ দেয় না। কিছুটা সময় দেওয়া হয়। জরিমানা মেটানোর জন্য পুলিশের নির্দিষ্ট লিঙ্কও রয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)