গত দু’দিন ধরে বিজেপির মিছিল-অবরোধের জেরে শহরে যানজট লেগেই রয়েছে। শনিবার দুপুরে শহরের একাধিক জায়গায় অবরোধ করা হয় তৃণমূলের তরফে। অভিযোগ, এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বড় যানজট না হলেও পথে নামা মানুষকে খানিকটা দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, সপ্তাহের শেষ দিন বেশ কিছু অফিস বন্ধ এবং স্কুল-কলেজ ছুটি থাকায় তেমন গাড়ি ছিল না। ফলে যান চলাচল সে ভাবে ব্যাহত হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুপুর পৌনে একটা নাগাদ শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা জমায়েত হন গড়িয়াহাট মোড়ে। রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তাঁরা গড়িয়াহাট মোড় অবরোধ করে রাখেন। প্রায় এক ঘণ্টার অবরোধে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে ব্যাহত হয় যান চলাচল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের পাশাপাশি দিলীপ ঘোষের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। একই ভাবে দুপুর দু’টোর পরে মন্ত্রী অরূপ রায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল পৌঁছয় হাওড়া ব্রিজে। এর জেরে কিছুক্ষণ হাওড়া ব্রিজে যান চলাচল থমকে যায়। ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে মিছিল করে এসে পৌঁছন বিধায়ক নয়না বন্দোপাধ্যায়। পুলিশ জানায়, কয়েকশো সমর্থকের জমায়েতের ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই মোড়ের একাংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরুদ্ধ হয় এসএন ব্যনার্জি রোডও। তবে জওহরলাল নেহরু রোডের একাংশ দিয়ে গাড়ি চলেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর একটার আগে থেকেই শাসক দলের তরফে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ শুরু হয়ে যায়। প্রথমে বেলেঘাটা-সিআইটি রোড সংযোগস্থলে পাঁচ-ছ’শো তৃণমূল সমর্থক রাস্তা অবরোধ করায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই ভাবে বেহালায় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, টালিগঞ্জে অরূপ বিশ্বাস, খিদিরপুরে ফিরহাদ হাকিম ওরফে ববির নেতৃত্বে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলে। মিছিলের জেরে বেশ কিছু ক্ষণ অবরুদ্ধ হয় শ্যামবাজার পাঁচ মাথা, গণেশ টকিজ। বাদ যায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পাড়া হাজরা মোড়ও। সেখানে ছিলেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল রায় এবং মদন মিত্র।
পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিল-সমাবেশের জন্য কিছু জায়গায় বিকল্প রাস্তায় গাড়ি ঘোরানো হয়। অনেক জায়গায় মিছিলের পাশ দিয়েও পুলিশ গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করেছিল। পুলিশের দাবি, দুপুর একটার পরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, চৌরঙ্গি রোড, লেনিন সরণি, এসএন ব্যানার্জি রোড-সহ একাধিক রাস্তায় যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জের এনএসসি বসু রোড,যাদবপুরের রাজা এস সি মল্লিক রোড, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড, বিধান সরণি, এজেসি বসু রোড, এপিসি রোড, শ্যামবাজার ও বিটি রোডে ওই সময়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, শহরে ২০টির বেশি জায়গায় শাসক দলের তরফে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে জমায়েত হয়েছিল। কিন্তু শনিবার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ছিল কম। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরাও এ দিন যান চলাচলে পুলিশকে সাহায্য করায় তেমন ভোগান্তি হয়নি।