ফুল-মালায় সাজানো মন্দির, সামনে কীর্তনের আসর দেখে মনে হতেই পারে, খাস কলকাতার কোনও বনেদি পাড়া! ঠিক পাড়ার মতোই জটলা, মন্দির ঘিরে আড্ডা-গল্পের আসর বসেছে। তবে যাঁরা ওই আসরে, কীর্তনে যোগ দিয়েছেন তাঁরা কেউমুক্ত নন। ইচ্ছে করলেই বাড়িতে এক চক্কর ঘুরে আসার উপায় নেই। কারণ, ওঁদের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। ওঁদের কেউ খুনের আসামি, কেউ বা ডাকাতির। অনেকেই গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। কেউ আবার ছিঁচকে অপরাধেই কারাবাস করছেন।
তবে বন্দিদশাতেও উৎসবে খামতি নেই। বুধবার, রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে সংশোধনাগারের ভিতরেই রাধাকৃষ্ণের মন্দির ঘিরে জমে উঠেছিল রাস উৎসব। উপরি হিসেবে ছিল নানক জয়ন্তী পালনও। কারা দফতর সূত্রের খবর, কয়েক জন শিখ বন্দি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে গুরু নানক জয়ন্তী পালনেরআর্জি জানিয়েছিলেন। সেই আর্জি মঞ্জুর করা হয়। এ দিন রাধাকৃষ্ণের ভজনের পাশাপাশি শিখদের কীর্তনও শোনা গিয়েছে সংশোধনাগারের অন্দরে।
কারা দফতর সূত্রের খবর, এ দিন নানক জয়ন্তী উপলক্ষেবন্দিদের নিত্যদিনের মেনুতেও বদল এসেছিল। শিখদের কথা মাথায় রেখে পঞ্জাবি খানা পেয়েছেন সংশোধনাগারের হাজার দেড়েক বন্দি। খাবারে ছিল জিরা রাইস,রাজমা এবং সংশোধনাগারের হেঁসেলে তৈরি মিষ্টি। কীর্তনে অংশগ্রহণকারী বন্দিদের বিশেষ পোশাকও দিয়েছিলেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। কারা দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অপরাধের সাজা হিসেবে বন্দিজীবন ভোগ করছেন ওঁরা। কিন্তু চার দেওয়ালের গণ্ডির মধ্যেও যাতে স্বাভাবিক জীবনের ছোঁয়া মেলে, তাই এই উৎসবের অনুমতি দেওয়া হয়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)