Advertisement
E-Paper

একই দুর্ঘটনার জেরে পরপর দু’দিন বিক্ষোভ, অবরুদ্ধ এলাকা

দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে ২৪ ঘণ্টা আগে। সিআইটি রোড ও বাগমারি রোডের মোড়ে সেই দুর্ঘটনাস্থল উত্তপ্ত হয়ে উঠল রবিবার দুপুরেও। রাস্তা অবরোধ দিয়ে শুরু করে তা গড়াল দোকান ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে জনতার ধস্তাধস্তিতেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১৭

দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে ২৪ ঘণ্টা আগে। সিআইটি রোড ও বাগমারি রোডের মোড়ে সেই দুর্ঘটনাস্থল উত্তপ্ত হয়ে উঠল রবিবার দুপুরেও। রাস্তা অবরোধ দিয়ে শুরু করে তা গড়াল দোকান ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে জনতার ধস্তাধস্তিতেও। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ প্রণব শর্মা ও প্রিন্স সিংহ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

কোনও না কোনও কারণে এক শ্রেণির জনতার আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা শুধু ভাঙড়-আউশগ্রাম নয়, খাস কলকাতাতেও ঘটছে। সব কিছু মিটে যাওয়ার পরেও নতুন করে, নতুন দাবি-দাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন মানুষ।

এ দিন যেখানে গণ্ডগোল হল, শনিবার রাতেও সেখানে ওই ঘটনা নিয়েই রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। ব্যাখ্যাটা কী? শনিবার পথ অবরোধ ছিল দুর্ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুর পরে ‘স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া’। রবিবার ওই ছাত্রের পরিজনেরা ধুন্ধুমার বাধালেন ঘাতক গাড়ির চালককে গ্রেফতার ও দুর্ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ তাদের হাতে পাওয়ার দাবিতে। এক দিন পেরিয়েও কেন পুলিশ ওই চালককে গ্রেফতার করতে পারল না, সেই প্রশ্ন তুলতেই অবরোধ করেন তাঁরা। সঙ্গে দোকান ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়।

জনতার ক্ষোভ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন অবশ্য যতটা সম্ভব ধৈর্য দেখাচ্ছে। দোকান ভাঙচুরের পরে ইএসআই হাসপাতালের সামনে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। তিনি ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় তরতাজা এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় দোকান ভাঙচুর খুব অস্বাভাবিক নয়। ভাঙচুরের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’

শনিবার দুপুরে সিআইটি রোড ও বাগমারি রোডের মোড়ে সিগন্যাল ভেঙে একটি গাড়ি পিছন থেকে একটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত মোটরবাইক চালক ও আরোহী, দু’জনের মাথায় হেলমেট ছিল। তা সত্ত্বেও বাইক থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় মোটরবাইকের আরোহী, স্কুলপ়ড়ুয়া বিনীত চহ্বাণের। বিনীত জ্ঞানভারতী বিদ্যাপীঠের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল বলে জানিয়েছে পরিবার। তার বাড়ি মানিকতলায়।

এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত বিনীতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার রাতেই মানিকতলায় পথ অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও ঘাতক গাড়ির চালককে গ্রেফতার করতে না পারায় এ দিন ফের একই জায়গায় প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ হয়। দুপুরে মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালের সামনে জড়ো হন জনা পঞ্চাশ যুবক। তখনই হয় ভাঙচুর। পরিস্থিতি ঘোরলো হতে পারে বুঝে আগে থেকে হাসপাতালের সামনে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ঘটনার খবর পেয়ে ফুলবাগান, মানিকতলা থানার পুলিশও ছুটে আসে। গোলমালে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ওই যুবকদের তুমুল ধস্তাধস্তি হয়। পরে পুলিশ তাড়া করলে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় তারা।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ওই হাসপাতালের সামনের রাস্তার উল্টো দিকের ফুটপাথের পাশে পানের দোকান ভাঙা। দোকানের মালিক রাজেন্দ্র চৌরাসিয়া বলেন, ‘‘বেলা বারোটা নাগাদ হঠাৎ জনা কুড়ি যুবক ভাঙচুর করতে শুরু করে। প্রচুর জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায়।’’ আতঙ্কে আশপাশের একাধিক দোকান বন্ধ করে দেন মালিকেরা। ফলের দোকানের মালিক দিলীপকুমার সোনকার বলেন, ‘‘চার ঘণ্টা দোকান বন্ধ রেখেছিলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিকেলে আবার খুললাম।’’

এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ঘাতক গাড়ির খোঁজ চলছে। রবিবার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনায় দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হয়েছে।’’

unrest Road Blockade Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy