Advertisement
E-Paper

হাসপাতালে ঝামেলায় ধৃত মালিক-সহ দুই

অভিযোগ, বুধবার প্রসববেদনা নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন মুকুন্দপুরেরই বাসিন্দা তাপসী বিশ্বাস। রাতেই তাঁর সিজার করেন চিকিৎসক জিনিয়া পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০২:২২
গোলমালের পরে ওই নার্সিংহোমের সামনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

গোলমালের পরে ওই নার্সিংহোমের সামনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

মাঠের দু’কোণে দু’টি বাড়ি। সাইন বোর্ড না পড়লে বোঝার উপায় নেই, তার একটি নার্সিংহোম ও অন্যটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

বৃহস্পতিবার সকালে মুকুন্দপুরের সেই নার্সিংহোমেই গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে বাধল গোলমাল। খবর পেয়ে এল পুলিশ। পরে আটক হন নার্সিংহোমের মালিক সঞ্জিত সাহা ও রেডিয়োলজিস্ট বরুণ চৌধুরী।

অভিযোগ, বুধবার প্রসববেদনা নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন মুকুন্দপুরেরই বাসিন্দা তাপসী বিশ্বাস। রাতেই তাঁর সিজার করেন চিকিৎসক জিনিয়া পাল। অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন বিভিন্ন পর্বে ছ’বার আলট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয়েছিল তাপসীর। প্রতি বারেই রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, শিশুর গঠনে গোলমাল নেই। বস্তুত, আলট্রাসোনোগ্রাফি থেকে শুরু করে প্রতিটি পরীক্ষাই করা হয়েছিল সেই ‘গ্রিন পার্ক’ নার্সিংহোম সংলগ্ন ‘গ্রিন পার্ক’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তাপসীর স্বামী সুকান্ত বিশ্বাসের অভিযোগ, সে দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয়। রাত প্রায় ৯টা নাগাদ তাঁদের জানানো হয়, সদ্যোজাতের গঠনে সমস্যা আছে। তৈরি হয়নি মুখ ও নাকের অংশ। একটি হাত নেই। পায়ের আঙুল নেই। বাঁ হাতের আঙুল জোড়া লাগানো। সুকান্তের বক্তব্য, ‘‘শিশুটিকে দেখিয়ে আমাদের সান্ত্বনা দেওয়া হয়। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আলট্রাসোনোগ্রাফির রিপোর্টে এ সব কিছু বলা নেই? ওঁরা উত্তর দিলেন না। এমনকি, শিশুটিকে নার্সিংহোমেও রাখতে চাইলেন না। আমরা ওকে নিয়ে যাই নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে।’’ এ দিন সুকান্তের বোন কুমকুম বলেন, ‘‘শিশুটিকে বাঁচানো যাবে কি না, সন্দেহ। পুরোটাই হল নার্সিংহোমের গাফিলতিতে। কেন এ সব জানানো হল না আগে?’’

দুপুরে পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুকান্ত। সেখানে শিশুকে লুকিয়ে অন্য কোনও শিশুকে দেখানোর আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তার ভিত্তিতে দুপুরেই ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। চিকিৎসক, মালিক ও রেডিয়োলজিস্টের সঙ্গে কথা বলে সঞ্জিত এবং বরুণকে ধরা হয়। সিল করে দেওয়া হয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটিও। পুলিশ সূত্রে খবর, বিশেষজ্ঞদের এনে প্রতিটি যন্ত্র পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি, শিশু বদল হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। হবে ডিএনএ পরীক্ষাও।

আটক সঞ্জিত সাহা (বাঁ দিকে) ও বরুণ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার, মুকুন্দপুরে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৩-১৪ বছর ধরে এলাকায় ব্যবসা চালাচ্ছে নার্সিংহোমটি। তাদের বিরুদ্ধে আগেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও সঞ্জিত নিয়মিত ওটি-তে থাকতেন বলে অভিযোগ। অভিযোগকারী ওই পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁরা মেডিক্যাল কাউন্সিলেও অভিযোগ জানাবেন।

ঘটনার কথা শুনে এক স্ত্রীরোগ চিকিৎসক জানিয়েছেন, পাঁচ মাসের মাথায় যে আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়, তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার কথা ছিল। রেডিয়োলজিস্ট পিনাকপাণি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় শিশুর গঠন সম্পর্কে সাধারণ একটি ধারণা মেলে। হাত না থাকলে, বোঝা যায়। তবে অনেক সময়েই এমন কিছু জটিলতা থাকে, যা ধরা পড়ে না।’’

Nursing home Owner Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy