Advertisement
E-Paper

বেপরোয়া লরির ধাক্কা, ছাউনি ভেঙে মৃত্যু দু’জনের

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময়ে ওই চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন গাড়িচালক শান্তা, রবি দাস, রাজেন্দ্রপ্রসাদ জয়সওয়ারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৮
দুর্ঘটনা: (বাঁ দিকে) লরির ধাক্কায় ভেঙে পড়া কংক্রিটের ছাউনি সরানোর কাজ চলছে। (ডান দিকে) দুর্ঘটনা ঘটানো লরি। সোমবার, বিবেকানন্দ রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দুর্ঘটনা: (বাঁ দিকে) লরির ধাক্কায় ভেঙে পড়া কংক্রিটের ছাউনি সরানোর কাজ চলছে। (ডান দিকে) দুর্ঘটনা ঘটানো লরি। সোমবার, বিবেকানন্দ রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন তিন জন। তাঁদের পাশ দিয়ে প্রাতর্ভ্রমণে যাচ্ছিলেন এক যুবক। সে সময়েই বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে উঠে পড়ে এবং ওই চায়ের দোকান সংলগ্ন কংক্রিটের বাস ছাউনিতে গিয়ে ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কার অভিঘাতে কংক্রটের ছাউনি ভেঙে পড়লে তা চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের নাম রোহিত জয়সওয়াল (৩১) এবং শান্তা যাদব (৫০)। আহত আরও দুই। সোমবার ভোরে, উত্তর কলকাতার বিবেকানন্দ রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। লরিটি আটক করেছে পুলিশ। তবে চালক ফেরার।

এ দিন দুপুরে ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘লরিচালকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ লরিটি বেপরোয়া গতিতে বিবেকানন্দ রোড ধরে মানিকতলা মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মানিকতলা বাজারের উল্টো দিকের ফুটপাতে উঠে পড়ে এবং সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে একটি কংক্রিটের বাস ছাউনিতে। তার পাশেই ছিল চায়ের দোকানটি। সেখানে দাঁড়িয়ে তখন চা খাচ্ছিলেন কয়েক জন। লরির ধাক্কায় প্রথমে কংক্রিটের ওই বাস ছাউনি এবং চায়ের দোকান হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। এর পরে সেই লরি গিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানো দু’টি গাড়িকে পরপর ধাক্কা মারে।

আরও পড়ুন: অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লোকাল চালানোর ভাবনা, টাইম টেবল প্রকাশ শীঘ্রই​

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময়ে ওই চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন গাড়িচালক শান্তা, রবি দাস, রাজেন্দ্রপ্রসাদ জয়সওয়ারা। তাঁরা রাস্তার পাশেই তাঁদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। আর পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন রোহিত। হঠাৎই লরির ধাক্কায় কংক্রিটের ছাউনি ভেঙে পড়লে তার নীচে চাপা পড়েন রোহিত-সহ চার জন। শব্দ শুনে উপস্থিত স্থানীয়েরা ছুটে আসেন এবং আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় খবর দেন। পুলিশ ও লালবাজার দমকল কেন্দ্র থেকে দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। এর পরে পুলিশ ও দমকল মিলে কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে আটকে থাকা তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা রোহিতকে এন আর এসে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আদতে বিহারের বাসিন্দা, পেশায় গাড়িচালক শান্তা এবং বছর পঞ্চান্নের রবিকে নিয়ে যাওয়া হয় আর জি কর হাসপাতালে। সেখানে শান্তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা রবিবাবু ওই হাসপাতালেরই জরুরি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর ডান দিকের বুকের পাঁজর এবং বাঁ পা ভেঙেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় বাঁ পা ভেঙেছে ডানকুনির বাসিন্দা রাজেন্দ্রপ্রসাদের। তিনি দমদমের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে স্কুল-কলেজ খোলার ভাবনা, রাজ্যে ছাড় মিলল বেশ কিছু ক্ষেত্রে​

দুর্ঘটনার পরে লরি ফেলে রেখেই চম্পট দেয় চালক। তবে লরিতে থাকা এক কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। দুঘর্টনায় আহত রাজেন্দ্রপ্রসাদের ছেলে দীপক কুমার জয়সওয়ারা বলেন, ‘‘ভোর ৫টা নাগাদ বাবা নিজেই ফোন করে দুঘর্টনার খবর দেন। খবর পেয়ে আমি মোটরবাইক নিয়ে ডানকুনি থেকে দমদমের নার্সিংহোমে যাই।’’ আর রবির ছেলে শুভদীপ দাস বলেন, ‘‘বাবা প্রতিদিন রাত ৩টে নাগাদ কাঁকুড়গাছি থেকে গাড়িতে এক যাত্রীকে নিয়ে হাওড়া ফুলবাজার যান। আজ ফুল নিয়ে ফেরার সময়েই ওই দোকানে চা খেতে নেমেছিলেন। তাঁর গাড়িতে থাকা যাত্রীর ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছই। তখনও বাবা কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে চাপা পড়ে ছিলেন।’’

Accident Death Homicide Truck
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy