Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বন্ধের মুখে পুজো, ফাটল উৎসবেও

সেকরাপাড়া লেনে গিয়ে দেখা গেল, পুজোর জায়গায় বাঁশ বাঁধা রয়েছে। পুজো কমিটির সদস্যেরা জানালেন, সদ্য এখানে রক্তদান শিবির হয়েছিল। তাই এখনও বাঁশ বাঁধা।

 অনিশ্চিত: সেকরাপাড়া লেনের এখানেই তৈরি হয় পুজো মণ্ডপ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

অনিশ্চিত: সেকরাপাড়া লেনের এখানেই তৈরি হয় পুজো মণ্ডপ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

প্রতি বছর দুর্গা মণ্ডপ যেখানে হয়, তার সামনের রাস্তায় ফাটল ধরেছে। ফাটল দেখা গিয়েছে আশপাশের বাড়িতেও। নিজের বাড়ির পিছনের দেওয়াল ধসে পড়ায় এখন এলাকা-ছাড়া পুজোর সেক্রেটারি। পরিস্থিতি এমন যে, বৌবাজারের সেকরাপাড়া যুবক সমিতির দুর্গাপুজোই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সেকরাপাড়া লেনে গিয়ে দেখা গেল, পুজোর জায়গায় বাঁশ বাঁধা রয়েছে। পুজো কমিটির সদস্যেরা জানালেন, সদ্য এখানে রক্তদান শিবির হয়েছিল। তাই এখনও বাঁশ বাঁধা। দু’-এক দিনের মধ্যেই পুজো মণ্ডপের বাঁশ বাঁধার কাজ শুরুর কথা ছিল। এখন সব বাতিল করতে হচ্ছে। গলির মুখে দাঁড়িয়ে পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট দ্বারিক দত্ত বলেন, ‘‘জানেন, ঠাকুরের বায়না দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বৌবাজার এলাকায় আমাদের এই পুজোর হয়তো নামডাক নেই, কিন্তু বাসিন্দারা আন্তরিকতার সঙ্গে পুজো করেন। ছোটখাটো অনুষ্ঠানও হয়। এ বার ৫৮তম বছর। কিন্তু পুজোটাই তো অনিশ্চিত হয়ে গেল!’’

পুজোর সেক্রেটারি আশিস সেন জানান, শনিবার থেকে ঘরছাড়া তিনি। তাঁর পরিবারের ন’জন এখন হোটেলে আছেন। আশিসবাবু বলেন, ‘‘মঙ্গলবারও বাড়ি ধসে পড়েছে। অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। বাসিন্দারা টাকা, মূল্যবান জিনিস নিয়ে যেতে পারেননি। অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কী ভাবে চাঁদা তুলব?’’ সেকরাপাড়া লেনের ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ পুলক লাহা হলেন, ‘‘এই বয়সে তো আর মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরা হয় না। বাড়ির নীচেই পাড়ার পুজো ঘিরে আমাদের দিন কেটে যায়।’’ তিনি জানান, পুজোর কর্মকর্তারা যদি কয়েক দিনের মধ্যে পাড়ায় ফিরতে পারেন, তা হলে পুজো হতে পারে। কিন্তু যে ভাবে এলাকার অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তাতে দ্রুত বাসিন্দাদের ফেরা অসম্ভব।

শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই নন, এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন সেকরাপাড়ার গয়না কারিগরেরাও। এই মুহূর্তে কাজ হারানোর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন ওঁরা। এক সোনার দোকানের কারিগর জানান, বৌবাজার এলাকায় সেকরাপাড়া লেন, মদন দত্ত লেন ও ডক্টর জগদ্বন্ধু লেনে পুজো হয়। তবে সেকরাপাড়া লেনের পুজো দেখতেই বেশি ভিড় করেন তাঁরা। ওই কর্মী বলেন, ‘‘পুজোর ছুটির মধ্যেও সেকরাপাড়ার পুজোয় এক বার না এক বার আসবই। এ বার বোধহয় কাজটাই থাকবে না! তাই সেকরাপাড়ায় ফের পুজো হলেও আর হয়তো দেখতে আসব না। সব ওলটপালট হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Landslide Bowbazar Kolkata Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE