Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Crime

তপসিয়ায় যুবক খুনে কাকা এবং বৌদি গ্রেফতার

ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, রান্নাঘরের ছুরি ও কাটারি দিয়ে ঘুমন্ত অভিজিতের মাথা ও গলায় একাধিক বার আঘাত করে তারা।

অভিজিৎ রজক।

অভিজিৎ রজক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

তপসিয়ায় যুবক খুনে অবশেষে গ্রেফতার করা হল পরিবারেরই দু’জনকে। ধৃতেরা সম্পর্কে মৃতের ছোট কাকা ও জেঠতুতো বৌদি। তাদের নাম চন্দন রজক ও প্রিয়াঙ্কা রজক। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পরে শনিবার গভীর রাতে পুলিশের কাছে তারা দু’জনে মিলে অভিজিৎ রজককে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, রান্নাঘরের ছুরি ও কাটারি দিয়ে ঘুমন্ত অভিজিতের মাথা ও গলায় একাধিক বার আঘাত করে তারা। ধারালো রক্তমাখা কাটারিটি পুকুরে ফেলে দিলেও ছুরিটি রাতেই ধুয়ে যথাস্থানে রেখে দেয় বলে পুলিশকে জানিয়েছে ধৃতেরা। তদন্তে নেমে পুলিশ বাড়ি থেকে ছুরিটি উদ্ধার করেছিল।

পরিবারের তরফে তদন্তকারীদের বলা হয়েছে, অভিজিতের সঙ্গে তাঁর বাড়ির মহিলাদের সম্পর্ক ভাল ছিল না। ধৃতদের অভিযোগ, অভিজিৎ নিজের পরিবারের মহিলাদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে চেষ্টা করতেন। এই নিয়ে পরিবারের মধ্যে একাধিক বার অশান্তিও হয়েছিল।

যদিও অভিজিতের বিরুদ্ধে বাড়ির মহিলাদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁর প্রতিবেশীরাই। ওই বাড়ির লাগোয়া প্রতিবেশী মামনি দাস বলেন, “অভিজিতের ছোট কাকার সঙ্গে বরং জেঠতুতো বৌদির সম্পর্ক ছিল। খুন হওয়ার রাতে অভিজিৎ সেটা দেখে ফেলেন। বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দেবেন বলেওছিলেন ওদের। তাই দু’জন মিলে অভিজিৎকে খুন করেছে।” মৃতের মা ঊষা রজক বলেন, “আমার ছেলে সাদাসিধে ছিল। বাড়ির মেয়েদের সঙ্গে কখনও খারাপ আচরণ করেনি। ওকে যারা খুন করেছে পুলিশ আগে তাদের কঠোর সাজা দিক।”

অভিজিতের বাবারা চার ভাই। তদন্তে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরে অভিজিতের বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর ছোট কাকার সম্পত্তিগত বিবাদ চলছে। অভিজিতের ঠাকুর্দার নামে তপসিয়ার বামনপাড়া বস্তি লাগোয়া একটি লন্ড্রি কারখানা রয়েছে। সেটির মালিকানা নিয়েও বিবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন ঊষাদেবী।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হলেও আরও কেউ জড়িত আছে কি না জানতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে।"

প্রসঙ্গত সোমবার গভীর রাতে তপসিয়ার বামনপাড়ার বাড়িতেই খুন হন অভিজিৎ রজক। পুলিশকে ধন্ধে ফেলতে ওই রাতে মৃতের ঘর থেকে দু’টি সাইকেল চুরি যাওয়ার তত্ত্ব দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু বাড়ির কাছের পুকুর থেকে ওই দু’টি সাইকেল উদ্ধারের পরেই তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, চুরির ঘটনা সাজানো। খুনি আসলে মৃতের পরিচিত। তদন্তের মোড় ঘোরানোর চেষ্টায় এমনটা করা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Topsia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE