ছেলের বয়স ১৭ এবং মেয়ের ১৪। আইনবিরুদ্ধ ভাবে তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওয়াটগঞ্জে। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে শুক্রবার পুলিশ উদ্ধার করল দু’জনকেই। ওই কিশোর এবং কিশোরীকে আপাতত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে পাঠানো হয়েছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনে বিষয়টিকে ধর্তব্যে আনার মতো অপরাধ হিসাবে ধরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, ওই কিশোর এবং কিশোরী, দু’জনেই পড়াশোনা করে। গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ে হয়। কিশোরের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয় কিশোরীর বাবা-মায়ের।
দু’পক্ষের সহমতের ভিত্তিতেই বিয়েটি হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে ওই কিশোর-কিশোরী পরেশের বাড়িতেই থাকছিল। এর মধ্যেই কলকাতা জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিটের কাছে স্থানীয় এক জন ইমেলে অভিযোগ জানান। তার পরে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে শুক্রবার দু’জনকেই উদ্ধার করে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। কেউই মুখ খুলতে রাজি নন। অভিযোগকারীও মন্তব্য করতে চাননি। তবে কিশোরীর বাবার দাবি, ‘‘মেয়ে নিজেই বিয়ে করেছে। আমাদের মত ছিল না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আগেও মেয়ে ওই
ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। তখন আমি ফিরিয়ে এনেছিলাম। তবে এ বার বিয়ে করে নেওয়ায় আর কিছু বলিনি।’’ যদিও কিশোরের পরিবারের দাবি, দু’পক্ষের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছিল।
এমন একাধিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সম্প্রতি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনে ফাঁকফোকর রয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেগুলি দূর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে। পছন্দমতো বিয়ে করার অধিকারের যুক্তিতে কখনওই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘন মেনে নেওয়া যেতে পারে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘‘অপ্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ইচ্ছে আইনের পথে অন্তরায় হতে পারে না। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের পথ রোধ করতে পারে না ব্যক্তি অধিকারের আইন।’’ পুলিশের দাবি, এই নির্দেশকে সামনে রেখেই এই বিয়ের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)