অল্প বৃষ্টিতে এমনই দশা হয় রাস্তার। — শশাঙ্ক মণ্ডল
বছর দুয়েক আগে এলাকার খাল সংস্কার হতে দেখে বাসিন্দারা আশা করেছিলেন এ বার থেকে বর্ষায় তাঁদের আর জমা জলের কষ্ট সহ্য করতে হবে না। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত রানিয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে রানিয়া খালের সংস্কার হলেও ওয়ার্ডের ভিতরে কোনও নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় খাল সংস্কারের সুফল তাঁরা ভোগ করতে পারছেন না। বছর কয়েক ধরে এই ওয়ার্ডের অরবিন্দ নগর, বিদ্যাসাগর সরণি, রামকৃষ্ণ সরণি-সহ অন্যান্য রাস্তার হাল বেহাল হয়ে রয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, কাউন্সিলর, পুরসভার চেয়ারম্যান, বিধায়কের কাছে বার বার এই সমস্যার কথা জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাসিন্দা ময়না মিদ্দার কথায়, ‘‘জল জমা আর খারাপ রাস্তা এই এলাকার বহু দিনের সমস্যা। প্রতি বার ভোটের আগে আমরা সমস্যা মিটে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাই। কিন্তু ভোট গেলে আর সেই প্রতিশ্রুতির কথা কারও মনে থাকে না।’’ কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই এই এলাকার রাস্তাগুলিতে প্রায় কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে যায় বলে জানান এলাকার আর এক বাসিন্দা রাহুল মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘এক বার জল জমলে তা সরতে ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যায়। আর জল নামার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে আসে রাস্তার কঙ্কালসার চেহারা। অটো এবং অন্যান্য গাড়ি সেই রাস্তা দিয়ে চলে নৌকোর মতো দুলে দুলে।’’
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের গৌরহরি দাস জানান, আমাদের ওয়ার্ডের উপর দিয়েই লাগোয়া কলকাতা পুরসভার ১১২ এবং ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের জল গিয়ে রেনিয়া খালে পড়ে। ফলে এই ওয়ার্ডে জমা জলের সমস্যা দূর হতে একটু সময় লাগবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এক সময়ে জল জমলে চার মাসেও নামতো না। এখন সেখানে দিন দশেক জল থাকে। রাস্তাও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।’’
তবে এই ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসিন্দা এই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় কোনও নিকাশি ব্যবস্থাই গড়ে ওঠেনি। ফলে ওয়ার্ডের ভিতর দিয়ে বর্ষার জল খালে গিয়ে পড়ার উপায় নেই। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, ‘‘আমাদের পুর এলাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই মধ্যে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকাকে রানিয়া খালের সঙ্গে যুক্ত করার কাজও শুরু হয়েছে তবে সবটা শেষ একটু সময় লাগবে।’’
৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের জল জমা এবং বেহাল রাস্তার সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাম আমলে ওই এলাকা ছ’মাস জলের নীচে থাকত। এখন তো পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। ওই এলাকার রাস্তাও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy