প্রতীকী ছবি।
মায়ের পাশেই ঘুমিয়ে ছিল ২৩ দিনের সদ্যোজাত শিশুকন্যা। ঘুমিয়ে পড়েছিলেন মা নিজেও। তাই কখন যে খাটে থাকা একটি বালিশ সদ্যোজাতের মুখের উপরে পড়ে গিয়েছে, তা জানতে পারেননি। ঘুম ভেঙে উঠে শিশুকে নড়াচড়া করতে না দেখে বাড়ির সকলকে ডাকাডাকি শুরু করেন মা। তড়িঘড়ি সদ্যোজাতকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। পরে তাকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
শনিবার বিকেলে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে প্রগতি ময়দান থানার উচুপোঁতা এলাকায়। রবিবার এনআরএস হাসপাতালেই সদ্যোজাতের দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, উচুপোঁতার বাসিন্দা অপর্ণা দাসের সঙ্গে বছর দশেক আগে বিয়ে হয় মধ্যমগ্রামের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা উত্তম দাসের। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। মাস তিনেক আগে অন্তঃসত্ত্বা অপর্ণা উচুপোঁতায় নিজের বাড়িতে এসেছিলেন। এনআরএসেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। তার পরে সন্তান-সহ ফিরেছিলেন উঁচুপোতার বাড়িতেই। সঙ্গে ছিল তাঁর আট বছরের বড় মেয়ে।
অপর্ণার পরিবার সূত্রের খবর, শনিবার দুপুরে খাওয়ার পরে সদ্যোজাতকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন অপর্ণা। কিছুটা সময় মেয়ের পাশে জেগেই ছিলেন তিনি। কিন্তু এক সময়ে শরীর খারাপ করতে থাকায় পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আর তার পরেই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। পরিবারের এক সদস্য শম্পা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘সদ্য সন্তানের জন্ম দেওয়ায় অপর্ণা নিজেও খুব দুর্বল ছিল। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে শরীর খারাপ লাগায় বাচ্চার পাশেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। কখন যে শিশুর উপরে বালিশ পড়ে গিয়েছে, তা কেউ বুঝতে পারিনি।’’
সদ্যোজাতের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ভিড় জমান আত্মীয় পরিজনেরা। রাতে মধ্যমগ্রাম থেকে হাসপাতালে আসেন শিশুটির বাবা। এ দিকে ঘটনার পরে বাক্রুদ্ধ গোটা পরিবার। মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন মা অপর্ণা। বিকেলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ। বাচ্চাকে উদ্ধার করে দ্রুত এনআরএসে পাঠানো হয়। রবিবার সেখানেই সদ্যোজাতের দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বালিশ চাপা পড়ে যাওয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy