Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন

স্কুলে যাবে বলে সকালবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর পনেরোর কিশোর। রাত ন’টা বাজলেও সে বাড়ি না ফেরায় হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করেন পরিবারের লোকেরা। শেষে খবর আসে সাড়ে দশটার পরে।

সুশান্ত উপাধ্যায়।

সুশান্ত উপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৫ ০০:২৬
Share: Save:

স্কুলে যাবে বলে সকালবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর পনেরোর কিশোর। রাত ন’টা বাজলেও সে বাড়ি না ফেরায় হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করেন পরিবারের লোকেরা। শেষে খবর আসে সাড়ে দশটার পরে। রেলপুলিশ জানায়, বাড়ি ও স্কুল থেকে অনেক দূরে রেললাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই কিশোরের দেহ। বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে।

পুলিশ জানায়, মৃত ওই ছাত্রের নাম সুশান্ত উপাধ্যায়। বাড়ি একবালপুরে। ভবানীপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত সে। অথচ রেলপুলিশ জানায়, সুশান্তর দেহ পাওয়া গিয়েছে চন্দননগর ও চুঁচূড়া রেলস্টেশনের মাঝামাঝি। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ দেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।

কী কারণে সুশান্ত হুগলিতে গেল? তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কি না, তা নিয়েও ধন্দে পুলিশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় একবালপুরের কাঞ্চন কলোনিতে সুশান্তের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোয় সে।

পুলিশ জানায়, শেওড়াফুলি জিআরপি থানার পুলিশ চন্দননগর ও চুঁচূড়া স্টেশনের মাঝে রিভার্স লাইনের পাশ থেকে ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার করে। তখন ছেলেটির পরনে ছিল স্কুলের পোশাক। পাশে স্কুলের ব্যাগও ছিল। ব্যাগের ভিতরে থাকা বইখাতা ঘেঁটে তদন্তকারীরা ছেলেটির নাম জানতে পারেন। এর পরে ভবানীপুর থানায় খবর পাঠানো হয়। রাতে ভবানীপুর থানার তরফে ছেলেটির বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপতালের মর্গে গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন সুশান্তের আত্মীয়েরা। এ দিন সেখানেই ওই ছাত্রের দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়।

রেলপুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তকারী এক অফিসারের অনুমান, ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েই ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিষয়টি নিছক দুর্ঘটনা, না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ছেলেটি ট্রেনে কোথায় যাচ্ছিল, তা-ও পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়।

মৃতের দাদা প্রশান্ত উপাধ্যায় জানান, বুধবার বাড়ি থেকে সুশান্তকে একটি মোবাইল ফোন দেওয়া হয়। সেটি নিয়েই স্কুলে চলে গিয়েছিল ছেলেটি। স্কুলের এক শিক্ষিকা সেটি দেখতে পেয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। ওই শিক্ষিকা তাকে বলেন, পাঁচশো টাকা জরিমানা-সমেত অভিভাবকদের ডেকে আনতে। প্রশান্তের বক্তব্য, ‘‘ঠিক কী কারণে ভাইয়ের মৃত্যু হল, বুঝতে পারছি না। পুলিশ যেন সবটা ঠিকঠাক তদন্ত করে সত্যিটা বার করে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভাইয়ের তো ট্রেনে চড়ে যাওয়ারই কথা নয়। কী কারণে এতটা দূরে চলে গেল? কার সঙ্গেই বা গেল? কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ কাকা রাকেশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সুশান্তের স্কুলকেও বলব, ওখানে ওর কোনও সমস্যা হচ্ছিল কি না, তা আমাদের জানাতে। স্কুলে সিসিটিভি রয়েছে। তা-ও দেখা হোক।’’ তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্কুলের পোশাক পরেই চার কিশোর ট্রেনে যাচ্ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE