Advertisement
E-Paper

রোগীমৃত্যুতে গোলমাল

চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত শুক্রবারই ‘হেল্থ রেগুলেটরি কমিশন’ গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অনুরোধ জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়েরের জায়গা যখন হয়েছে, তখন যেন তাঁরা হাসপাতাল ভাঙচুর বা চিকিৎসকদের উপরে হামলা চালিয়ে আইন হাতে তুলে না নেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:১৯
শোকার্ত: পাপড়ি মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে ও স্বামী। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত: পাপড়ি মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে ও স্বামী। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত শুক্রবারই ‘হেল্থ রেগুলেটরি কমিশন’ গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অনুরোধ জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়েরের জায়গা যখন হয়েছে, তখন যেন তাঁরা হাসপাতাল ভাঙচুর বা চিকিৎসকদের উপরে হামলা চালিয়ে আইন হাতে তুলে না নেন। কিন্তু এর পরে চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে জুনিয়ার ডাক্তারদের উপরে মৃতের বাড়ির লোকের হামলার অভিযোগ উঠল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

শনিবার ভোরে এই ঘটনার পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় ন্যাশনাল মেডিক্যালে। হামলাকারীরা গ্রেফতার না হলে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেন ক্ষুব্ধ জুনিয়ার ডাক্তারদের একাংশ। তাঁরা মৃতের বাড়ির তিন জনের বিরুদ্ধে বেনিয়াপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ অস্বীকার করে মৃতার পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, জুনিয়ার ডাক্তারেরা দীর্ঘক্ষণ মৃতার দেহ আটকে রেখেছেন। তাঁরাও পাঁচ জন জুনিয়ার ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এর পরে জুনিয়ার ডাক্তার ও মৃতার বাড়ির লোকের দফায় দফায় বৈঠক হয়। মৃতার দেহও হাসপাতালে আটকে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে শনিবার দুপুরে দীর্ঘ সময়ে তালা দিয়ে রাখা হয় ন্যাশনালের গেটে। সমস্যায় পড়েন হাসপাতালে দেখাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের খবর, শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা নিয়ে শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় স্থানীয় বেনিয়াপুকুর লেনের বাসিন্দা পাপড়ি মুখোপাধ্যায় নামে বছর তিরিশের তরুণীকে। তাঁর স্বামী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘রাত তিনটের সময়ে হঠাৎ ফোন এল, পাপড়ি মারা গিয়েছে! আমি আমার এক ভাগ্নে আর শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে যাই। ডাক্তারদের কাছে পাপড়ির মৃত্যুর কারণ জানতে চাই। কিন্তু কিছুতেই ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।’’

আবু ওবায়েদ নামের এক ইন্টার্নের দাবি, ‘‘আমাদের কোনও গাফিলতি ছিল না। পাপড়িদেবীর বাড়ির লোক আচমকা স্টেথোস্কোপ টেনে ফেলে দেন। তার পরে কলার ধরে দেওয়ালে চেপে ধরেন কর্তব্যরত জুনিয়ার ডাক্তারকে।’’ উল্টো দিকে পরিবারের দাবি, ‘‘মৃত্যুর কারণ জানতে চাইতেই ডাক্তারদের কয়েক জন তেড়ে আসেন। চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘এই পেশেন্ট পার্টি বডি নিয়ে বেরোলে সকলের চিকিৎসা বন্ধ করে দেব আমরা!’ হাসপাতালের সুপার পীতবরণ চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেন, ‘‘ডাক্তারেরা দেহ আটকে রেখেছেন, এ কথা সত্যি নয়।’’ অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ের কথায়, ‘‘নিরাপত্তাকর্মীর এখনও অভাব রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি আমরা আরও ৯২ জনকে নিয়োগ করব। তবে রোগীর বাড়ির লোকের ধৈর্যও কমে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের প্রতি মনোভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। এটা না বদলালে অবস্থা বদলাবে বলে মনে হয় না।’’

Unrest patient Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy