Advertisement
E-Paper

পাইকারি বাজারে গোলমাল, বন্ধ মাছ সরবরাহ

পাতিপুকুরে পাইকারি মাছ বাজারের সামনে গাড়ি রাখার সময়ে ধাক্কা লাগায় স্কুটার থেকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন এক যুবক। যা নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে দু’পক্ষের গন্ডগোল গড়ায় থানা পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০১:১৬
সুনসান: গন্ডগোলের জেরে বন্ধ পাতিপুকুরের মাছ বাজার। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সুনসান: গন্ডগোলের জেরে বন্ধ পাতিপুকুরের মাছ বাজার। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

পাতিপুকুরে পাইকারি মাছ বাজারের সামনে গাড়ি রাখার সময়ে ধাক্কা লাগায় স্কুটার থেকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন এক যুবক। যা নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে দু’পক্ষের গন্ডগোল গড়ায় থানা পর্যন্ত। রাস্তায় ওই যুবক ও তাঁর বন্ধুকে বেধড়ক মারধরের প্রতিবাদে সোমবার দিনভর বন্ধ রইল পাইকারি মাছের বাজার। অপর পক্ষ আবার সন্ধ্যায় নামল পথ অবরোধে। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে মাছ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতি।

লেক টাউন থানার বিধান কলোনির বাসিন্দা শৌভিক আদক ও সুমন চক্রবর্তী মাছ বাজারে লরি থেকে মাল নামানোর কাজ করেন। শৌভিক জানান, সুমনের জন্য অপেক্ষা করার সময়ে একটি মালবাহী গাড়ি বেপরোয়া ভাবে স্কুটারে ধাক্কা মারলে তিনি রাস্তায় পড়ে চোট পান। এ নিয়ে ওই মালবাহী গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় তাঁর। সেই সময়ে ওই গাড়ির মালিক সঞ্জীব বসু ওরফে ছোটু শৌভিকের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাজারের ভিতর থেকে দৌড়ে আসেন সুমন। শৌভিকের দাবি, ছোটুর নামে থানায় অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। শৌভিক ও সুমনের কাজ যাঁরা তদারক করেন, সেই ‘মনিটর’-দের মধ্যে দুলাল নামে এক জন তাঁদের বাড়ি চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

সুমনের অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পথে ছোটু ও রাজেশ নামে আর এক যুবকের নেতৃত্বে দু’টি বাইকে চেপে ছ’জন তাঁদের ঘিরে ধরেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে একটি গাড়িতে চড়ে আরও তিন জন জড়ো হন। ছোটু ও রাজেশ ছাড়া অন্য অভিযুক্তেরা হলেন, গোপাল, প্রিয়ম ও নন্দ। শৌভিক ও সুমনকে রাস্তায় ফেলে তাঁদের বুকে, পেটে এলোপাথাড়ি লাথি-ঘুসি মারা হয় বলে অভিযোগ। গন্ডগোলের আভাস পেয়ে ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান শৌভিকের মা শর্মিলা আদক। মায়ের কথায়, ‘‘আমি না গেলে ছেলেটা মরেই যেত।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাছ বাজারে ছোটু ও রাজেশরা প্রায়ই মদ ও নেশার আসর বসান। সুমন ও শৌভিক তা নিয়ে মুখ খোলাতেই তাঁদের এ ভাবে মারা হয়েছে। অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার না করলে মাছ বাজার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উল্টো দিকে ছোটুর পাল্টা অভিযোগ, তাঁর গাড়িচালকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই জন্যই ফোন করে তিনি বন্ধুদের ডেকে আনেন। তখনই মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই যুবকের সঙ্গীরা মেরে তাঁদের এক জনের পা ভেঙে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ।

এই ঘটনায় অবশ্য পুলিশি তৎপরতা তেমন চোখে পড়েনি। লেক টাউন থানার বক্তব্য, গন্ডগোলের সূত্রপাত কলকাতা পুলিশের এলাকায়। সেখানে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কলকাতা পুলিশ আবার জানিয়েছে, ব্যবসায়ী সমিতি নিরাপত্তা চেয়ে টালা থানায় একটি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

এ দিকে, ওই মাছের বাজার বন্ধ থাকায় এ দিন খুচরো বাজারে মাছের আকাল দেখা দেয়। কারণ, পাতিপুকুর থেকে প্রতি দিন উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার, নাগেরবাজার, দমদম ও সিঁথির মতো বেশ কয়েকটি বড় বাজার ছাড়াও নিউ টাউন, ডানলপ, কল্যাণী, বারাসত-সহ বিভিন্ন বাজারে মাছ সরবরাহ হয়। কিন্তু এ দিন তা হয়নি। অশান্তির আবহে অচলাবস্থা কবে কাটবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

পাতিপুকুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সহকারী সম্পাদক রঞ্জন নাথ বলেন, ‘‘মাছ বাজার এলাকা তিনটি থানার অন্তর্গত। লেক টাউন, টালা ও উল্টোডাঙা— তিন থানাতেই ঘটনার কথা সবিস্তার জানিয়ে দোষীদের শাস্তি চেয়েছি। অভিযোগ কেন দায়ের হয়নি, তা ব্যবসায়ী সমিতির দেখার বিষয় নয়।’’ বাজার খোলার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাস মিলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Fish Market Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy