পরিবহণ সংস্থার অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালালেন এক দল যুবক। সংস্থার কর্মীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগও উঠল তাঁদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে হাওড়ার শালিমার ইয়ার্ডের কয়লা ডিপো মোড়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়।
অভিযোগ, এ দিন সকালে এক দল যুবক ওই পরিবহণ সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে কর্মীদের এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি-চড় মারেন। অফিসের বাইরে থাকা একটি সিসিটিভি-ও ভেঙে দেন তাঁরা। কোনও রকমে অফিসের দরজা বন্ধ করে প্রাণে বাঁচেন বলে দাবি আতঙ্কিত কর্মীদের। এই ঘটনার পরে শিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই পরিবহণ সংস্থাটির মালিক প্রদীপ তিওয়ারি।
পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি-র ফুটেজে ধরা পড়েছে মারপিটের দৃশ্য। ঘটনায় প্রদীপবাবুর অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর এবং পরিবহণ ব্যবসায়ী বিনয় সিংহের দিকে। প্রদীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘বিনয়ের মদত রয়েছে এই হামলায়। কারণ, বিনয়ের সঙ্গে পুরনো ব্যবসায়িক শত্রুতার রয়েছে আমার।’’ যদিও বিনয় সিংহের দাবি, ‘‘আমার ভাই এবং ভাগ্নেকে প্রদীপ তিওয়ারির ভাইয়েরা খুন করেছিল। বছর দুই আগের ওই ঘটনা এখন বিচারাধীন। মামলা চলাকালীন আমি মারপিট করতে যাব কেন!’’
পুরনো শত্রুতা কি ফিরে এল শালিমার ইয়ার্ড এলাকায়— এ দিনের ঘটনার পরে এই প্রশ্ন উঠছে এলাকার অন্য পরিবহণ সংস্থার কর্মীদের মধ্যে। ফোরশোর রোডের পাশেই পরপর রয়েছে পরিবহণ সংস্থার অফিস। তাঁদের স্মৃতিতে ফিরে আসছে বছর দুই আগের সেই দিন।
সে বার শালিমারের ভিতরের দিকে ট্রাক টার্মিনাসে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল বিনয়ের ভাই এবং ভাগ্নেকে। শেষে গুলিও চালানো হয়েছিল তাঁদের উপর। ঘটনাস্থলেই মারা যান বিনয়ের ভাই। ভাগ্নেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কয়েক দিন পরে মারা যান তিনিও। গ্রেফতার করা হয় প্রদীপ তিওয়ারির চার ভাইকে। সেই ঘটনার এখন বিচার চলছে। ওই ঘটনার পরে প্রদীপের সংস্থার অনেকগুলি লরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পর দীর্ঘ দিন থমথমে ছিল এলাকা।
যদিও রবিবারের ঘটনায় পুলিশ বিনয়ের যোগের বিষয় নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছে না। পুলিশের দাবি, শনিবার রাতে অন্য একটি পরিবহণ সংস্থার ট্রাকচালক অজয় সিংহ ও তাঁর সঙ্গীদের মারধরের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন প্রদীপের সংস্থার চালকেরা। ওই রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অজয়। সেই ঘটনার সঙ্গে রবিবারের ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। তদন্তে অন্য সম্ভাবনার দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরপর দু’দিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy