Advertisement
E-Paper

বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ‘ভাঙচুর’

মেহেরুন্নিসা বলেন, ‘‘বাবাকে জিজ্ঞেস করি, মায়ের কী হয়েছে। বাবা আমাকে বলে, মাকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। আমরা মাকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু মাকে বাঁচানো যায়নি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৮
শোক: রাজিয়া সুলতানার মৃত্যুর খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা। সোমবার, একবালপুরে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

শোক: রাজিয়া সুলতানার মৃত্যুর খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা। সোমবার, একবালপুরে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল একবালপুরের হোসেন শাহ রোড। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে ওই এলাকার বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানা (৩৭) নামে এক মহিলার ঝুলন্ত দেহ মেলে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে। মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই রাজিয়ার বাপের বাড়ির লোকেরা তাঁর শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। এর পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামলাতে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। সোমবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, রাজিয়ার পরিজনেরা একবালপুর থানায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় রাজিয়ার দেওর শাহিদ ও ননদ তন্নুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী ফারুক হোসেন ও একমাত্র মেয়ে মেহেরুন্নিসাকে নিয়ে হোসেন শাহ রোডের ওই বাড়ির একাংশে সংসার ছিল রাজিয়ার। ওই বাড়িরই অন্য অংশে থাকেন তাঁর শাশুড়ি, ননদ ও দেওরেরা। রাজিয়ার মেয়ে মেহেরুন্নিসা জানান, ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছেন তাঁর মা। তাঁর বাবা ওই ঘরেই ছিলেন। মেহেরুন্নিসা বলেন, ‘‘বাবাকে জিজ্ঞেস করি, মায়ের কী হয়েছে। বাবা আমাকে বলে, মাকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। আমরা মাকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু মাকে বাঁচানো যায়নি।’’

রাজিয়ার বাপের বাড়িও ওই পাড়াতেই। অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই বাপের বাড়ির পরিজনেরা কয়েকশো লোক নিয়ে ওই বাড়িতে ভিড় করেন। রাজিয়াকে মেরে ফেলার অভিযোগ তুলে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। শ্বশুরবাড়ির কয়েক জনকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামলাতে এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। রাজিয়ার ঘর থেকে ইংরেজি ও উর্দুতে লেখা আট পাতার একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে নিজের দেওর, ননদ, জা-সহ বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ করেছেন তিনি।

রাজিয়া সুলতানা

রাজিয়ার ছোট বোন নাগমা সুলতানার অভিযোগ, ‘‘পারিবারিক অশান্তির জেরে আমার দিদির উপরে অনেক দিন ধরেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ওর ননদ ও দেওরেরা। রবিবারও দিদি আমাকে ফোন করে মারধরের কথা জানিয়েছিল। ওকে আমরা বাড়ি চলে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু সে দিনই যে এ রকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে, সেটা বুঝতে পারিনি।’’ অন্য দিকে, রাজিয়ার আর এক দেওর ফৈয়াজ বলেন, ‘‘নির্যাতনের অভিযোগ মিথ্যা। ফারুক বিশেষ কিছু করে না। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হত। তা ঘিরেই কিছু হয়ে থাকতে পারে।’’ একবালপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই ওই গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে।

Death Suicide Vandalism Housewife
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy