Advertisement
E-Paper

দুর্ঘটনার ‘বাধাতেই’ ঝুঁকির প্রশ্ন

এ যেন মূল অসুখ চিহ্নিত না করে ক্ষতে সাময়িক প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা! ২০১৩-র মার্চ মাসের গোড়ায় মার্বেল ভর্তি ট্রেলার দুর্ঘটনা ঘটানোয় ভেঙে পড়েছিল উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ভিআইপি রোড-বাইপাসমুখী লেনের একটি অংশ।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৬ ০০:২৬
ভেঙে পড়া সেই হাইট বার। মঙ্গলবার, ভিআইপি রোড উড়ালপুলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ভেঙে পড়া সেই হাইট বার। মঙ্গলবার, ভিআইপি রোড উড়ালপুলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

এ যেন মূল অসুখ চিহ্নিত না করে ক্ষতে সাময়িক প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা!

২০১৩-র মার্চ মাসের গোড়ায় মার্বেল ভর্তি ট্রেলার দুর্ঘটনা ঘটানোয় ভেঙে পড়েছিল উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ভিআইপি রোড-বাইপাসমুখী লেনের একটি অংশ। তার পরেই উড়ালপুলে উঁচু, ভারী গাড়ির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে আপৎকালীন পদক্ষেপ করা হয়। সেই পদক্ষেপই উড়ালপুলের মুখে বসানো ‘হাইট বার’ বা ‘হাইট বেরিয়ার’। অথচ গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময়ে গাড়ির ধাক্কায় সেই হাইট বারই ভেঙে পড়েছে, কিংবা হাইট বারের কারণেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। প্রশ্নে কখনও রক্ষণাবেক্ষণ, কখনও নজরদারি। এবং চেনা চাপানউতোর। সমাধানের ইঙ্গিত নেই কোনও তরফেই। বরং শহরের বিভিন্ন উড়ালপুলে হাইট বার বসানো নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

সোমবার দুপুরে বাইপাস থেকে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ওঠার মুখের হাইট বারটি ভেঙে পড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি টাটা ৪০৭ উল্টোডাঙা উড়ালপুলে উঠতে যাচ্ছিল। উড়ালপুলে যাতায়াতে তা নিষিদ্ধ নয়। ফলে পুলিশও আটকায়নি। কিন্তু গাড়িটিতে থাকা বেশি উচ্চতার একটি আলমারির সঙ্গে হাইট বারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তাতেই ঝালাই খুলে যায়।

ঘটনার পরে কেউ বলছেন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাড়ির ধাক্কাতেই হাইট বারটির ঝালাই খুলে ভেঙে পড়েছে। কেউ বা পাল্টা ট্রাফিকের নজরদারির অভাবের প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও নজরদারির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক দফতর। ট্রাফিক-কর্তাদের একাংশের দাবি, ওই উড়ালপুলে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি থাকে।

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কথা মানতে চাননি উড়ালপুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরাও। সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই হাইট বারটিকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে জোড়া হয়। যাতে কোনও অংশ ভেঙে গেলে সেটুকুই জোড়া দিয়ে দেওয়া যায়। সেখানে মরচে ধরা, সামান্য ধাক্কায় নাটবল্টু খুলে পড়ার মতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের অভিযোগ ঠিক নয় বলেই তাঁদের দাবি।

তা হলে সমাধান কী? সে বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা অবশ্য জানা যায়নি কোনও মহলের তরফেই। বরং হাইট বার নিয়ে সরকারি ইঞ্জিনিয়ার মহলেই প্রশ্ন রয়েছে। এক উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক পরিকল্পনা করেই উড়ালপুলে উঁচু এবং ভারী গাড়ির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তার জন্য হাইট বার দরকার হয় না। যেমন, চিৎপুর উড়ালপুলের মুখে স্রেফ গার্ডওয়াল বসিয়ে এবং নজরদারি রেখে দিনে-রাতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বড় এবং ভারী গাড়ির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কেউ কেউ আবার বলছেন হাইট বার কোন উচ্চতায় রাখা হবে, তা নির্দিষ্ট করলে সমস্যা হবে না।

কেএমডিএ-র এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, এর আগেও গাড়ি-দুর্ঘটনায় হাইট বার ভেঙেছে। তাই প্রাথমিক ভাবে উচ্চতা খানিকটা বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও যেহেতু কাজ হল না, তাই ফের উচ্চতা বাড়ানোর পাশাপাশি রেলব্রিজে উঁচু কিংবা ভারী গাড়ি আটকাতে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকে, তা লাগু করা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।

ফলে সাময়িক প্রলেপই আপাতত ভবিতব্য উড়ালপুলের।

Bridge VIP Flyover
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy