প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এই স্লোগান তুলেই দক্ষিণ দমদম পুরসভা বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল জমানোর বালতি বা ‘ওয়েস্ট বিন’ বিলি করতে শুরু করেছে। পুরসভা সূত্রে দাবি, ৩৫টি ওয়ার্ডেই বিন বিলি চলছে। সূত্রের খবর, প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ৪ হাজার করে বালতি বরাদ্দ হয়েছে। কাউন্সিলরেরা নিজেরাই সেই বালতি নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। বোঝানো হচ্ছে কেন প্লাস্টিকে ময়লা না জমিয়ে বালতি ব্যবহার করা উচিত।
বস্তুত, ভারত সরকারের ২০১৬ সালের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট রুলে পরিষ্কার করে বলা হয়েছিল, প্রতিটি বাড়িতে দু’টি করে বিনের ব্যবস্থা করতে হবে। যার একটি সলিড ওয়েস্ট এবং অন্যটি বায়ো বা অর্গ্যানিক ওয়েস্টের জন্য ব্যবহৃত হবে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পরিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমরাও দু’টো করে বালতি বরাদ্দের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাড়ির তুলনায় বালতির পরিমাণ কম। ফলে আপাতত একটি করে বালতিই দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। কিছুদিনের মধ্যেই আরেকটি করে বালতি সরবরাহ করে আবর্জনা আলাদা করার বিষয়টি নাগরিকদের শেখানো হবে।’’
শুধু দক্ষিণ দমদম নয়, উত্তর দমদম, দমদম, বরানগর-সহ একাধিক পুরসভায় একই কাজ শুরু হয়েছে। প্রমোদনগরে অর্গানিক বর্জ্য রিসাইকেলিংয়ের পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। পুনে, বেঙ্গালুরুর মতো বহু শহরেই যে ব্যবস্থা আছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্যতম কাউন্সিলর অরূপ হাজরা এদিন জানান, ‘‘এলাকার বাজারগুলিতে লাগাতার অভিযান চালিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেকটাই কমানো গিয়েছে। এখনও অভিযান চলছে। এবার লক্ষ্য, বাড়ি বাড়ি প্রচার চালিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো।’’
ইতিমধ্যেই দমদম অঞ্চলের বেশ কয়েকটি পুরসভা এলাকাগুলিকে ভ্যাটমুক্ত করে ফেলেছে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে বর্জ্য সংগ্রহ করছেন পুরকর্মীরা। অভিযোগ, বহু সময়েই বাসিন্দারা প্লাস্টিকে ময়লা ভরে রাস্তার ধারে ফেলে রাখছেন। সেই প্রবণতা বন্ধে নতুন বিন কাজে লাগবে বলেই তাঁদের ধারণা। পাশাপাশি এলাকার মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হবে বলে জানিয়েছেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন নগর বিশেষজ্ঞেরাও। অনেকেই বলছেন, বর্ষাকালে ড্রেনগুলিতে প্লাস্টিক জমে নালার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির ঠিক আগে পুরসভাগুলির এই ব্যবস্থা পরিবেশের পক্ষে ভাল হবে। আর বর্জ্য রিসাইকেল করতে পারলে তা হবে সত্যিকারের পরিবেশবান্ধব প্রকল্প।