E-Paper

সিমেস্টারে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে গুরুত্ব কমানোর অভিযোগ

প্র্যাক্টিক্যালের জন্য অধিকাংশ স্কুলে পরীক্ষাগার নেই। কোথাও পরীক্ষাগার থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যন্ত্র খারাপ হয়ে আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ০৯:২২

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিমূলক বিষয়ের নম্বর বিভাজনে পরিবর্তন করে সিমেস্টার পদ্ধতিতে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমের গুরুত্ব কমানো হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করেছেন এই পাঠ্যক্রমের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের একাংশ।

আগে বৃত্তিমূলক বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যালে ছিল ৭০ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষায় ৩০ নম্বর। কিন্তু সিমেস্টার পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা এবং প্র্যাক্টিক্যাল, দুই ক্ষেত্রেই ৫০ নম্বর করে বরাদ্দ হয়েছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, যে পাঠ্যক্রমে হাতেকলমে প্রশিক্ষণই প্রধান, সেখানে কী ভাবে প্র্যাক্টিক্যালের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়?

আরও অভিযোগ, লিখিত পরীক্ষার নম্বর বাড়ানো হলেও একটি বিষয়েরও পাঠ্যবই নেই। আবার, প্র্যাক্টিক্যালের জন্য অধিকাংশ স্কুলে পরীক্ষাগার নেই। কোথাও পরীক্ষাগার থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যন্ত্র খারাপ হয়ে আছে। তাই সিমেস্টার পদ্ধতিতে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম নিয়ে আগ্রহ জাগাতে প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যবই আনা এবং পরীক্ষাগারের পরিকাঠামো তৈরির দাবি উঠেছে।

এই পাঠ্যক্রমে বর্তমানে ১৬টি বিষয় পড়ানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে আইটি, অটোমোটিভ, সিকিয়োরিটি, রিটেল, হেল্‌থকেয়ার, ইলেকট্রনিক্স, প্লাম্বিং, টুরিজ়ম ও হসপিটালিটির মতো বিষয়। বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ এনএসকিউএফ শিক্ষক পরিবার’-এর রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি এবং রাজ্য শিক্ষানীতি, দুই জায়গাতেই বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সিমেস্টার চালু হওয়ার পরে অনেকে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে উৎসাহ দেখালেও পরিকাঠামোর অভাবে তাঁরা পড়তে চাইছেন না। গত ১২ বছর ধরে পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম।’’

যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘এখন উচ্চ মাধ্যমিকে কম্পালসারি ইলেক্টিভ হিসাবেও বৃত্তিমূলক বিষয় নেওয়া যায়। ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবেও নেওয়া যায়। নতুন নিয়মে কোনও পড়ুয়া যদি কম্পালসারি ইলেক্টিভে ফেল করে এবং তার যদি বৃত্তিমূলক কোনও বিষয় ঐচ্ছিক থাকে, আর সেই বিষয়ে সে পাশ করে, তখন তার বৃত্তিমূলক বিষয়টি ফেল করা বিষয়ের সঙ্গে অদলবদল হয়ে যাবে।’’ এই নিয়ম চালু হয়েছে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে। কিন্তু শিক্ষকদের প্রশ্ন, যারা ২০২৪ সালে ভর্তি হয়েছে, তারা কেন এর সুবিধা পাবে না?

তবে অনেক স্কুলেই যে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমের জন্য পরীক্ষাগার বা পাঠ্যবই নেই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন চিরঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধুমাত্র বৃত্তিমূলকের পরীক্ষা নিচ্ছি। পাঠ্যক্রম এবং নম্বর বিভাজন নিয়ে কিছু মতামত দিয়েছি। এই পাঠ্যক্রমটি চালায় কারিগরি শিক্ষা দফতর।’’ যদিও সেই দফতরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে ফোন এবং মেসেজ করা হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। শুভদীপের দাবি, ‘‘কারিগরি শিক্ষা দফতর এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ একে অন্যের উপরে দায় চাপাচ্ছে। এর ফল ভুগছে পড়ুয়ারা।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

WBCHSE

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy