Advertisement
E-Paper

হুক্কাহুয়া ডাক বাঁচাতে উদ্যোগী বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, সম্প্রসারণ ও খামার অধিকরণ বিভাগের অধিকর্তা অরুণাশিস গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই পরিত্যক্ত জায়গা এবং কবরস্থানের গর্তে বহুকাল ধরেই শিয়ালদের বাস।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩২
ক্যাম্পাস চত্বরে থাকা সেই খেঁকশিয়াল।

ক্যাম্পাস চত্বরে থাকা সেই খেঁকশিয়াল।

সন্ধ্যা নামতেই কলকাতায় হুক্কাহুয়ার ডাক শোনা যায় এখনও!

কংক্রিটের এই শহরের এমন ডাককে বাঁচিয়ে রাখতে এ বার ভাবনাচিন্তা করছেন বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যা ঘনাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হুক্কাহুয়া ডাক শুনতে পান পড়ুয়ারা। ১৮৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বেলগাছিয়ার বেঙ্গল ভেটেরিনারি কলেজ চত্বর বিশাল এলাকা জুড়ে। বর্তমানে সেটিই প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। ক্যাম্পাসের পিছনের পরিত্যক্ত জায়গায় মৃত প্রাণীর দেহ কবর দেওয়া হত। এখনও সেই ব্যবস্থা বহাল রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, সম্প্রসারণ ও খামার অধিকরণ বিভাগের অধিকর্তা অরুণাশিস গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই পরিত্যক্ত জায়গা এবং কবরস্থানের গর্তে বহুকাল ধরেই শিয়ালদের বাস। সন্ধ্যা নামতেই ওদের ডাক শোনা যায়।’’ রাজ্য বন দফতরের ডেপুটি কনজারভেটর অব ফরেস্ট (সদর) ওমপ্রকাশ বলেন, ‘‘এই শিয়ালের বৈজ্ঞানিক নাম কিনাস অরিয়াস। এরা দেখতে অনেকটা অ্যালসেশিয়ান কুকুরের মতো। পরিত্যক্ত জায়গা, ঝোপজঙ্গলে ওরা বাস করে। কলকাতা বিমানবন্দর, সিঁথি, বেলগাছিয়ার পশু ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এদের দেখতে পাওয়া যায়।’’

কিন্তু শহরের বুকে শিয়াল সংরক্ষণে হঠাৎ উদ্যোগী কেন কর্তৃপক্ষ? জীববৈচিত্র রক্ষায় এদের থাকা জরুরি বলে জানাচ্ছেন প্রাণী বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, অধিকাংশ কৃষিজাত দ্রব্য শশকজাতীয় প্রাণীর দ্বারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই সব শশকেরা ৪৫-৭০ শতাংশই খেঁকশিয়ালের খাবারে পরিণত হয় বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। একটি খেঁকশিয়াল তার স্বাভাবিক জীবনকালে শশক-সহ অন্যান্য ক্ষতিকারক প্রাণী খেয়ে ফসল রক্ষা করে। ওমপ্রকাশবাবু বলেন, ‘‘অনেকেই ভাবেন শিয়াল ক্ষতিকারক। কিন্তু মোটেও তা নয়। জীববৈচিত্র রক্ষায় এদের থাকাটা খুবই জরুরি। বরং ওদের দ্বারা কৃষকেরা পরোক্ষে আর্থিক ভাবে লাভবান হন। সুতরাং খেঁকশিয়ালকে মেরে ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া এবং ’’

শুধু খেঁকশিয়ালই নয়, বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনের কাছে ক্ষুদিরাম বসু সরণির দু’দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ক্যাম্পাসে রয়েছে অসংখ্য গাছ। সেখানে বাসা বাঁধে বক, বাজ, চিল, কোকিল, টিয়া, ময়না।
শীতকালে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে ওই চত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাসের কথায়, ‘‘পরিবেশ রক্ষায় পাখি এবং প্রাণীদের বাসযোগ্য করতে আমাদের প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে। ওরা যাতে নিয়মিত আসে সে জন্য আগামিদিনে আরও গাছ লাগানো হবে।’’

রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদের সদস্য-সচিব সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘বেলগাছিয়ার পশু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে শুনেছি। কিন্তু কী কী প্রাণী রয়েছে তা জানতে সমীক্ষা হলে খুব ভাল হয়।’’ এ প্রসঙ্গে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কত প্রকার পাখি এবং প্রাণী রয়েছে তা জানতে রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদকে দিয়েই সমীক্ষা করানো হবে।’’

Fox Belgachia West Bengal University of Animal and Fishery Sciences
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy