Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্কুল অচল নিয়ে তরজা অভিভাবকদের

সভা, মিছিল, পথ অবরোধে ফুটে ওঠা অভিভাবকদের ঐক্যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চিড় ধরে গেল। সোমবার রানিকুঠির জিডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনের দরজা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হওয়ার প্রথম দিনেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

সভা, মিছিল, পথ অবরোধে ফুটে ওঠা অভিভাবকদের ঐক্যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চিড় ধরে গেল। সোমবার রানিকুঠির জিডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনের দরজা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হওয়ার প্রথম দিনেই।

অভিভাবকদের একাংশ বলছেন, চার বছরের ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি গুরুতর এবং এর সুবিচার ও প্রতিকার দরকার। তা বলে পঠন-পাঠন বন্ধ থাকাটা সমাধান নয়। আবার অভিভাবকদের আর একটি অংশ স্কুল বন্ধ রাখারই পক্ষপাতী। যাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁদের বক্তব্য, স্কুল স্বাভাবিক ভাবে চালু হয়ে গেলে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাবে এবং তাঁদের দাবি-দাওয়া জলে যাবে।

সকাল থেকে দুপুর, অভিভাবকদের দু’পক্ষের মধ্যে সোমবার দফায় দফায় বাদানুবাদ হয় স্কুলের সামনে।

তবু অচলাবস্থা কাটানোর লক্ষ্যেই মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ওই স্কুলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকেরা আলোচনায় বসবেন। ছাত্রীদের নিরাপত্তায় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হবে। তাঁদের বক্তব্য, ব্যবস্থা নিতে তিন-চার দিন সময় দেওয়া হবে, তার পর স্কুল খুলতেই হবে।

এ দিন সকালে বহু ছাত্রী পোশাক পরে জড়ো হয়েছিল। স্কুল হচ্ছে না দেখে তারা মনমরা হয়ে পড়ে। মা-বাবাদের কথায়, ‘‘ওরা জবরদস্তি স্কুলে আসতে চাইল!’’

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন স্কুলে চার বছরের ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘একেবারেই অনভিপ্রেত ঘটনা। সকলেই নিন্দা করেছেন।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও এক জনের জন্য সব শিক্ষককে দোষী বলা যায় না। শিক্ষক সমাজের সবাই খারাপ নন।’’ শিশুটির শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভাল হয়েছে বলে তার বাবা জানিয়েছেন। তবে তিনি জানান, ওই স্কুলে মেয়েকে রাখা আর সম্ভব নয়।

আর সোমবার ওই স্কুলের অভিভাবকদের দেখানো পথেই রাস্তা আটকালেন বেহালার এম পি বিড়লা ফাউন্ডেশন হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অভিভাবকেরা। তিন মাস আগে ওই স্কুলের সাড়ে তিন বছরের এক ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে দুই শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে। তখন কিছু হয়নি। কিন্তু এ দিন ওই দু’জনকে গ্রেফতারের দাবিতে সকাল থেকে বিকেল, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জেমস লং সরণি অবরোধ করলেন। কাজের দিনে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। অবরোধ তুলতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। হেলমেট দিয়ে স্কুলবাস ও পুলিশের গাড়িতে ঘা দেওয়ার পরেই লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। বহু অভিভাবকই প্রতিবাদের এই ধরন নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, ‘‘তিন মাস আগের ঘটনা। এখন পথ অবরোধ করে, অরাজকতা তৈরি করে লাভ কি?’’ রাতে অবশ্য এক অভিযুক্ত মনোজ মান্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE