Advertisement
E-Paper

আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’, গ্রেফতার স্ত্রী

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে সোনারপুর থানা এলাকার শ্রীনগরের বাসিন্দা সুকৃতী রায়ের (৫০) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর নিজের বাড়ি থেকে। এর পরেই সুকৃতীবাবুর ভাই রাজেন্দ্র রায় ওই আয়কর কর্তার স্ত্রী চন্দনা রায়, তাঁর মা এবং দুই দিদির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৮
সুকৃতী রায় ও চন্দনা রায়

সুকৃতী রায় ও চন্দনা রায়

আয়কর দফতরের এক কর্তার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে সোনারপুর থানা এলাকার শ্রীনগরের বাসিন্দা সুকৃতী রায়ের (৫০) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর নিজের বাড়ি থেকে। এর পরেই সুকৃতীবাবুর ভাই রাজেন্দ্র রায় ওই আয়কর কর্তার স্ত্রী চন্দনা রায়, তাঁর মা এবং দুই দিদির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বৃহস্পতিবার চন্দনাদেবীকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চন্দনাদেবীকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরে চন্দনাদেবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আত্মহত্যার পিছনে তাঁর মা ও দুই দিদির কোনও ভূমিকা রয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে ছেলেকে টিউশনি ক্লাসে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরেন সুকৃতীবাবু। এর পরেই নিজের তিন তলার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। রাত পর্যন্ত দরজা বন্ধ থাকার পরে অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় দরজা ভাঙা হয়। তখনই সুকৃতীবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবারও সুকৃতীবাবু অত্যধিক ঘুমের ওষুধ খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। তখন চন্দনাদেবীই তাঁকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। বুধবার সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। তার পরে রাতেই ঘটে যায় এই ঘটনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের বাসিন্দা চন্দনাদেবীর সঙ্গে ১২ বছর আগে সুকৃতীবাবুর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের একটি বছর দশেকের ছেলে রয়েছে। সে কলকাতার একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

রাজেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, প্রায় বছর দেড়েক ধরে সুকৃতীবাবুর উপরে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। তাঁকে বাড়িতে নানা ভাবে অপমান করা হত। চন্দনাদেবী নিজের এবং ছেলের জন্য রান্না করলেও দিনের পর দিন সুকৃতীবাবুর খাবারের ব্যবস্থা করতেন না। এমনকী সুকৃতীবাবুকে আত্মহত্যা করার জন্যও চন্দনাদেবী প্ররোচনা দিতেন বলে অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দনাদেবী সব সময় সুকৃতীবাবুকে ‘মরে যাও’ বলে গঞ্জনা দিতেন।

রাজেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, সুকৃতীবাবুর বেতনের সব টাকা নিয়ে নেওয়া হত। শুধু চন্দনাদেবীই না তাঁর মা-ও জামাইয়ের উপরে নানা মানসিক চাপ সৃষ্টি করতেন। এমনকী সুকৃতীবাবুকে তাঁর নিজের গাড়ি ব্যবহার করতে না দিয়ে চন্দনাদেবী নিজেই ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ।

বারুইপুর জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, সুকৃতীবাবুর গাড়ির চালক ও ছেলের সামনেই এ দিন চন্দনাদেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চন্দনাদেবীর মোবাইল ফোনটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সুকৃতীবাবুকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোনারপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দনাদেবীর পরিবারের তরফেও সুকৃতীবাবুর ভাইদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে দাবি করা হয়েছে, ভাইদের মানসিক অত্যাচারের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন সুকৃতীবাবু।

Death Suicide Provoking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy