রুমা সেন
স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দমদমের মধুগড়ে। মৃতার নাম রুমা সেন (৩৮)। তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় সেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কেন সে স্ত্রীকে এমন নৃশংস ভাবে হত্যা করল, তা নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, দীর্ঘ দিন ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। তারই ফলে এই ঘটনা।
পরিবার সূত্রের খবর, ১৯-২০ বছর আগে বসিরহাটের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় রুমার। মৃত্যুঞ্জয় পেশায় মাছ বিক্রেতা। ওই দম্পতি মধুগড়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তাঁদের ১৪ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। রুমার দিদি সোমা রায়ের অভিযোগ, মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই তাঁর বোনের অশান্তি চলছিল। রুমাকে নিয়মিত মারধর করত সে। কখনও দা, কখনও শাবল, কখনও আবার কোদাল দিয়ে। অত্যাচারের চোটে মেয়েকে নিয়ে মায়ের কাছে চলে এসেছিলেন রুমা। পরে শাশুড়ির হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় মৃত্যুঞ্জয়।
সোমা আরও জানিয়েছেন, আয়ার কাজ করতেন রুমা। মৃত্যুঞ্জয় এক দিন মাছ বিক্রি করলে ১৫ দিন করত না। রুমার টাকাতেই চলত সংসার। সম্প্রতি ওই তরুণীর এক আত্মীয়ার যমজ সন্তান হয়। তাদের দেখাশোনা করার জন্য ঘাটালে সেই আত্মীয়ার বাড়িতে ছিলেন রুমা। বাড়ি ফেরেন ভোটের আগের দিন। গত কয়েক দিন ধরে তিনি মায়ের কাছে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে বাড়ির বাইরে বসে ফোনে কথা বলছিলেন রুমা। আচমকা হাফ প্যান্ট আর গামছা পরে সেখানে হাজির হয় মৃত্যুঞ্জয়। হাতে ছিল কাটারি জাতীয় ধারালো অস্ত্র। অভিযোগ, সে এসেই স্ত্রীর গলায় কোপ মারে। প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করতে থাকেন রুমা। কিন্তু বাড়ির লোক প্রথমে শুনতে পাননি। কিছু ক্ষণ পরে এক আত্মীয়া জানলা খুলে দেখেন, রুমাকে মারতে মারতে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুঞ্জয়। ওই আত্মীয়া বাকিদের খবর দিলে লোকজন ছুটে আসেন। তাঁদের দেখে অস্ত্র ফেলে পালায় অভিযুক্ত।
পরে দমদম থানার পুলিশ মৃত্যুঞ্জয়কে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। রুমার পরিজনেদের পাশাপাশি তাঁরাও মৃত্যুঞ্জয়ের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক অশান্তি খুনের অন্যতম কারণ। তবে এর পিছনে অন্য রহস্য আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy