পাশাপাশি দুটি ঘর। তার একটায় স্বামী জ্বলছেন। আর একটায় স্ত্রী বসে টিভি দেখছেন! টিভিতে তিনি নাকি এতটাই বুঁদ হয়েছিলেন যে মরণাপন্ন স্বামীর আর্তনাদও কানে পৌঁছয়নি তাঁর! পুরো ঘটনার বিবরণ জানাতে গিয়ে পুলিশের কাছে এটাই স্ত্রীর স্বীকারোক্তি। যা শুনে তাজ্জব দুঁদে অফিসারেরাও। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে মানিকতলায়। শনিবার সকালে ওই ফ্ল্যাটের দু’টি ঘর থেকে দু’জনকেই উদ্ধার করে পুলিশ। স্ত্রী সুতপা বরাত তখন অবশ্য বসার ঘরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন। আর তাঁর স্বামী রনজিৎ বরাতের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় পাশের একটি ঘর থেকে। তাঁরা মানিকতলা হাউজিং কমপ্লেক্সের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সুতপাদেবীর সঙ্গে রনজিৎবাবুর সম্পর্ক কোনও দিনই ভাল ছিল না। তাঁরা রোজ রাতে মদ্যপ অবস্থায় ঝগড়া করতেন। একে অপরকে গালাগাল করতেন। পাড়ার কেউ আপত্তি জানাতে এলেও জুটত কুকথা। তবে ওই রাতে এমন কোনও ঘটনা ঘটেছিল কি না তা তাঁরা বলতে পারেননি।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁদের ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করেন। কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দু’জনকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে বাড়ি থেকে ডেকে ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন মল্লিকবাজারে
পুলিশ সূত্রে খবর, রনজিৎবাবু সিইএসসি-তে চাকরি করতেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে মুম্বইয়ের গুরগাঁওয়ে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাঁকে খবর দেওয়া হয়েছে। স্ত্রী-কে শুক্রবার রাত থেকে জি়জ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে তাঁর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। একই ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটল অথচ তিনি কিছুই জানতে পারলেন না কেন? তা ছাড়া রণজিৎবাবু কি আদপে আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে? এই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।