Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Electrocution

ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু, ক্ষোভে উত্তপ্ত মানিকতলা

পুলিশ সূত্রের খবর, সাহেববাগান এলাকার ১৮ নম্বর ক্যানাল ইস্ট রোডে মৃতার বাড়ি। তাঁর স্বামী হরিশঙ্কর বর্মা জানান, ওই রাতে খাওয়ার পরে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন পুষ্পাদেবী।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় পুষ্পা বর্মার।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় পুষ্পা বর্মার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

ব্যবধান এক মাস এক দিনের। ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক জনের মৃত্যু হল মানিকতলার সাহেববাগান এলাকায়। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর চুয়াল্লিশের মৃতার নাম পুষ্পা বর্মা। বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনার পরে শুক্রবার সকালে মৃতার পরিজন এবং প্রতিবেশীরা পুর গাফিলতির অভিযোগে মুচিবাজারের কাছে উল্টোডাঙা মেন রোডের একাংশ অবরোধ করেন। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালালে কিছু লোক স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটরের বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে মানিকতলা থানা।

পুলিশ সূত্রের খবর, সাহেববাগান এলাকার ১৮ নম্বর ক্যানাল ইস্ট রোডে মৃতার বাড়ি। তাঁর স্বামী হরিশঙ্কর বর্মা জানান, ওই রাতে খাওয়ার পরে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন পুষ্পাদেবী। কিছু পরেও না ফেরায় তিনি স্ত্রীর খোঁজে যান। হরিশঙ্কর বলেন, “দেখি, ওই শৌচালয়ের পাশে জল ভর্তি ছোট কুয়োর মধ্যে উল্টে পড়ে আছে পুষ্পা। ওকে ছুঁতে আমিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হই।’’

প্রতিবেশীদের দাবি, স্ত্রীকে সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বছর ষাটেকের হরিশঙ্কর। পুলিশে খবর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করানোর পরে স্থানীয়েরা দু’জনকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পুষ্পাদেবীকে সেখানে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুষ্পাদেবীর দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছেন। বড় ছেলে গোপালের দাবি, “পুরসভাকে বার বার বলেও এলাকার বিদ্যুতের খুঁটিগুলির সংস্কার করানো যায়নি। সেগুিলরই একটি থেকে বিপদ ঘটল।”

আরও পড়ুন: পানিহাটিতে দোকান ও বাজারের সময় ভাগ

গত ১২ জুলাই বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার ধারের বিদ্যুতের খুঁটি স্পর্শ করে মৃত্যু হয়েছিল শ্যামল দে নামে সাহেববাগানেরই এক বাসিন্দার। সেই ঘটনার পরেও বিদ্যুতের খুঁটিগুলির সংস্কার করার কথা পুরসভাকে জানিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। এ দিন সকালে ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর ছড়াতেই স্থানীয়েরা মুচিবাজারের কাছে রাস্তা অবরোধ করেন। ঘণ্টা দুয়েক পরে অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। অভিযোগ, এর পরে কিছু বিক্ষোভকারী ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর অমল চক্রবর্তীর বাড়িতে চড়াও হন। অমল বলেন, “বাড়িতে ইট ছুড়েছে, দরজায় ধাক্কা মেরেছে। সিসি ক্যামেরায় সে সব ধরা পড়েছে। পুলিশকে ভিডিয়ো দিয়েছি।”

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সাহেববাগান এলাকার ওই পাড়ায় একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি থেকে বিপজ্জনক ভাবে তার ঝুলছে। যে জায়গায় পুষ্পাদেবী পড়ে ছিলেন তার কাছের কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটিরও বেহাল দশা। ঘটনাস্থলে যাওয়া সিইএসসি-র উত্তর কলকাতার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, “যে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি পুরসভার। ওই খুঁটির মেরামতি প্রয়োজন। তবে ওই খুঁটি থেকে আশপাশের বহু বাড়িতে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ টানা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়ে আমরা লিখিত ভাবে পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।” কোঅর্ডিনেটরের দাবি, “পুরসভার কোনও খুঁটিতেই সমস্যা নেই। কয়েক দিন আগে পুরসভার খুঁটিগুলো নিজে দাঁড়িয়ে সংস্কার করিয়েছি। তবু কেন আমি নিশানা হলাম জানি না।” মানিকতলা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বলেন, “পুরসভা বা সিইএসসি-র তরফে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electrocution Maniktala Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE