সল্টলেকের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়নাবির একটি ভেড়িতে রবিবার খুন হলেন এক মহিলা ভেড়ি শ্রমিক। সাত মাস আগে বিধাননগর পুর-ভোটের দিন রাতে মাছ চুরি আটকাতে গিয়ে খুন হন ভেড়ি শ্রমিক গোপাল বর। এ বারও মাছ চুরি আটকাতে গিয়েই এই খুন বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সোমবার অন্য ভেড়ির এক শ্রমিক শিবানী মণ্ডল (৪৭) নামে ওই মহিলার দেহ দেখেন। পুলিশ জানায়, শিবানীর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। দাঁতগুলিও ছিল ভাঙা।
জানা গিয়েছে, ছয়নাবির বাসিন্দা শিবানী স্বামীর মৃত্যুর পরে একা থাকতেন। বাসিন্দারা জানান, মাছ তোলা, বিক্রি, ভেড়ি পাহারা— সব দেখতেন শিবানী। জানা গিয়েছে, ভেড়িটির ৩ অংশীদার। তাঁদের মধ্যে দু’জন স্বপন মিশ্র, অভিজিৎ ঘোষাল স্থানীয় তৃণমূল নেতা। শিবানীও সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত।
শিবানীর বড় মেয়ে টগরি রায় বিধাননগর দক্ষিণ থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার। জানালেন, ওই রাতে সওয়া ন’টা নাগাদ মাকে ফোন করেন তিনি। হঠাৎ শিবানী তাঁকে ফোন কাটতে বলেন। কিন্তু তার আগেই মায়ের চিৎকার শুনতে পান তিনি। টগরির কথায়, ‘‘ভেড়িতে সাপের উপদ্রব হয়। ভাবি সেই জন্য মা চিৎকার করল। এত বড় বিপদ, বুঝিনি।’’
পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে শিবানীর ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে। মিলেছে শিবানীর টর্চ, মোবাইল। পুলিশ জানায়, ওই মহিলা আগে কয়েক বার মাছ চুরি আটকান। হয়তো সেই আক্রোশ থেকে এই ঘটনা। ভেড়ির বর্তমান মালিক স্বপন মিশ্র বলেন, ‘‘রাতে পাহারাদারদের হাজিরা দেখে বাড়ি যেত শিবানী। এ দিন তার আগেই এই ঘটনা।’’
শিবানীর দেহ পাহারাদারদের চোখে পড়েনি কেন? বাসিন্দারা জানান, যেখানে দেহ পড়েছিল, তা নজরে পড়া মুশকিল। স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের প্রবীর সর্দার বলেন, ‘‘সকলে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় হয়তো বিষয়টি নজরে আসেনি।’’
সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি শুকনো ভেড়ির পাশে আলের উপরে জমাট রক্ত। বাসিন্দারা জানান, সল্টলেকের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ে থাকা সরকারি-বেসরকারি ভেড়িগুলিতে মাছ চুরি বেড়েছে। নজরদারির জন্য দু’টি পুলিশ ফাঁড়ি, সিভিক পুলিশ মোতায়েন ও পুলিশি টহলদারি বাড়লেও তা নগণ্য বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy