রুমানা পরভিন
বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল এক গৃহবধূর দেহ। বৃহস্পতিবার সকালে কড়েয়ার ব্রাইট স্ট্রিটের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, রুমানা পরভিন (২৮) নামে ওই বধূর গলায় একটি ফাঁসের চিহ্ন মিলেছে। পুলিশ রুমানার স্বামী রাশেদ জাভেদ ও শ্বশুর জাভেদ আহমেদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মৃতার দুই শিশুকন্যা রয়েছে। এক জনের বয়স তিন বছর ও অন্য জন এক বছরের। রুমানার শ্বাশুড়ি অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই শয্যাশায়ী।
রুমানার স্বামী পুলিশকে জানান, তাঁর স্ত্রী অসুস্থ ছিলেন। এ দিন সকালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি মারা যান। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, রাশেদের কথায় অসঙ্গতি রয়েছে। রুমানার ভাই আনোয়ার শাহদাতের অভিযোগ, ২০১৩-র ডিসেম্বরে বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য চাপ দিতেন রাশেদ। মারধরও করতেন। মাস দেড়েক আগে এক বার স্ত্রীকে দমবন্ধ করে মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। বিষয়টি আপসে মিটে যাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ হয়নি।
রুমানার আত্মীয় রেহান নামে এক যুবক জানান, এ দিন সকালে রাশেদর বাবা জাভেদ ফোন করে জানান, রুমানা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সেই খবর পেয়েই তিনি ও আনোয়ার ব্রাইট স্ট্রিটে যান। তখন একটি অটো থেকে রুমানাকে নামানো হচ্ছিল। তখনই তাঁর গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে পুলিশ জানায়, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে এই ঘটনায় রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি পুলিশের কাছে।
আনোয়ার সাহাদত কড়েয়া থানার সামনে দাঁড়িয়ে জানান, তাঁদের আদি বাড়ি বিহারের কিষণগঞ্জে। চামড়ার ব্যবসার সূত্রে তিনি তিলজলায় থাকেন। বিয়ের সময়ে নগদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ও একটি মোটরবাইক পণ হিসেবে নেওয়া হয়। বিয়ের পরেও কখনও নগদ টাকা, কখনও ফ্ল্যাট চেয়ে রুমানাকে চাপ দিতেন। রুমানার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের আগে রাশেদ জানিয়েছিলেন তিনি একটি চাকরি করেন। পরে জানা যায় সে কথা মিথ্যা। অভিযোগ, রুমানার ভাই একটি চাকরি খুঁজে দিলেও তিনি তা ছেড়ে দেন। শ্বশুরবাড়ির কাছে চাহিদা বাড়তেই থাকে তাঁর। মাস খানেক আগে মুখে রুমাল গুঁজে মারার চেষ্টা করেন রুমানাকে। চার দিন আগে রুমানাকে খুব মারধর করেছিলেন তিনি। বুধবারও গোলমাল হয়েছিল। আনোয়ারের দাবি, তার পরে রাশেদকে ডেকে বোঝানো হয়। এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করেন তাঁরা। তবুও কেন এমন ঘটল, বুঝতে পারছে না রুমানার পরিবার।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাশেদ জাভেদদের তিনতলার বাড়িতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দিয়েছে পুলিশ। পাশের ফ্ল্যাটের আবাসিকেরা কিছু বলতে চাইছেন না। তবে প্রতিবেশীরা এ দিন রুমানার মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy