Advertisement
E-Paper

কিশোরী পাচার-চক্রের ৩ পাণ্ডা ধৃত

রবিবার রাতে বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলার বৈদারহালি থানা এলাকার একটি ডেরা থেকে লিটন শেখ, আমির এবং ফিরদৌস নামে ওই তিন জনকে ধরা হয়। সোমবার ধৃতদের স্থানীয় আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫২
(বাঁ দিক থেকে) আমির, ফিরদৌস এবং লিটন শেখ

(বাঁ দিক থেকে) আমির, ফিরদৌস এবং লিটন শেখ

নাবালিকা পাচারের তদন্তে নেমে কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরুতে নাবালিকা পাচার চক্রের যোগাযোগ পেল পুলিশ। সেই সূ্ত্রে পশ্চিম বন্দর থানার একটি তদন্তকারী দল কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু পাড়ি দিয়ে ভিন্‌ রাজ্যের একটি পাচার চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলার বৈদারহালি থানা এলাকার একটি ডেরা থেকে লিটন শেখ, আমির এবং ফিরদৌস নামে ওই তিন জনকে ধরা হয়। সোমবার ধৃতদের স্থানীয় আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আজ, মঙ্গলবার ধৃতদের কলকাতায় নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার এক কিশোরীকে পরিচারিকার কাজ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেন স্থানীয় দুই যুবক শেখ সেলিম এবং জিকু মোল্লা। পরিচিত হওয়ায় তাদের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে ওই কিশোরী। পুলিশের কাছে অভিযোগে কিশোরী জানিয়েছে, সেলিম এবং জিকু তাকে বেঙ্গালুরু নিয়ে গিয়ে আন্দ্রাহালি নামে এক জায়গায় একটি বহুতলে আটকে রাখে। পরে তাকে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয়। কয়েক মাস পরে কোনও ভাবে কলকাতায় পালিয়ে আসে ওই কিশোরী। ২২ অক্টোবর এলাকায় সে সেলিম ও জিকুকে দেখে। পুলিশের দাবি, পাচারকারীদের চোখের সামনে ঘুরতে দেখে ভয় পেয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালে গ্রেফতার করা হয় ওই দু’জনকে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই ভিন্ রাজ্যের পাচারকারী চক্রের খোঁজ মেলে। যারা কলকাতা থেকে নাবালিকা এবং মহিলাদের মোটা টাকার বিনিময়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যেত। পরে সেখানে তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হত।

পুলিশ জানায়, কলকাতায় ধৃত সেলিম তদন্তকারীদের জানায়, ওই চক্রের সদস্যেরা বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। সেই মতো কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (বন্দর) সৈয়দ ওয়াকার রেজার নির্দেশে পশ্চিম বন্দর থানার একটি বিশেষ দল সেলিমকে সঙ্গে নিয়েই বেঙ্গালুরু যায়। পরে সেখান থেকে উত্তর বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলার বৈদারহালিতে হানা দিয়ে তিন জনকে ধরে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বেঙ্গালুরু থেকে ধৃত তিন দুষ্কৃতীই বাংলাদেশের বাসিন্দা। বছর চারেক আগে তারা কলকাতায় আসে। পরে তারা বেঙ্গালুরুতে ঘাঁটি তৈরি করে। ধৃতদের জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন, সেলিম এবং জিকু মোটা টাকার বিনিময়ে বন্দর এলাকার নাবালিকা এবং মহিলাদের কাজের নাম করে বেঙ্গালুরু নিয়ে যেত। সেখানে প্রথমে হোটেলে রাখার পরে পাচার হওয়া মহিলাদের তুলে দেওয়া হত লিটন, আমির এবং ফিরদৌসদের মতো চক্রের পাণ্ডাদের হাতে। পরে তারা ওই মেয়েদের জোর করে দেহ ব্যবসায় নামাতো। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেলিম এবং জিকুর মতো এমন চক্রের এজেন্ট ছড়ানো রয়েছে। শুধুমাত্র কলকাতা থেকে গত কয়েক বছরে পাঁচ জনেরও বেশি নাবালিকাকে পাচার করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছে ধৃতেরা।

তবে বেঙ্গালুরু থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও কোনও নাবালিকাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুতে অভিযুক্তদের বেশ কয়েকটি ডেরা রয়েছে। এ ছাড়া ধৃত পাচার চক্রের বাকি সদস্যরা কোথায় এবং ধৃত বাংলাদেশির কী করে এ দেশে ঢুকেছিল তা তদন্তকরে দেখা হচ্ছে বলে লালবাজার জানিয়েছে।

Woman Trafficking Crime Bangalore লিটন শেখ আমির ফিরদৌস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy