Advertisement
E-Paper

টারম্যাকে ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় জখম কর্মী

অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেন একটি বিমানসংস্থার এক কর্মী। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। জখম ওই ব্যক্তির নাম অমিত সিংহ। তিনি ইন্ডিগো-র কর্মী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৩৮

অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেন একটি বিমানসংস্থার এক কর্মী। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। জখম ওই ব্যক্তির নাম অমিত সিংহ। তিনি ইন্ডিগো-র কর্মী। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ইন্ডিগোর একটি উড়ান ছাড়ার আগে সেটি যখন পরীক্ষা করছিলেন অমিত ও তাঁর সহকর্মীরা, তখন আচমকাই রিলায়্যান্সের একটি অয়েল ট্যাঙ্কার এসে অমিতকে ধাক্কা মারে। অমিত পড়ে গেলে ট্যাঙ্কারের চাকা তাঁর ডান পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় অমিতকে ভর্তি করা হয়েছে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করা হতে পারে।

মাত্র চার মাস আগে ইন্ডিগোর নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছেন অমিত। বাড়ি ব্রেসব্রিজে। অভিযুক্ত ট্যাঙ্কারের চালক, পটনার বাসিন্দা অভিষেক কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক হয়েছে ট্যাঙ্কারটিও।

ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন? বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ টারম্যাকের ২৭ নম্বর বে-তে ছাড়ার জন্য প্রায় প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইন্ডিগোর ওই উড়ানটি। বিমানের দরজা বন্ধ করে সিঁড়ি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শুধু ইন্ডিগোর কয়েক জন কর্মী বিমানের আশপাশে ছিলেন। অমিতও ছিলেন সেই দলে। সূত্রের খবর, বিমান ছাড়ার সময়ে তার ডানা কোথাও ছুঁয়ে যাচ্ছে কি না, তাই দেখার কথা ছিল অমিতের। সে সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। জানা গিয়েছে, ওই বিমানে জ্বালানি ভরেই ফিরছিল ট্যাঙ্কারটি। প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মীর কথায়, নিজের নির্দিষ্ট রাস্তা ছেড়ে প্রায় ১০ ফুট বিমানের দিকে সরে এসেছিল ট্যাঙ্কারটি। যদিও পুলিশের জেরায় ট্যাঙ্কারচালক জানিয়েছেন, আচমকাই তাঁর গাড়ির সামনে চলে এসেছিলেন অমিত। শেষ মূহূর্তে ব্রেক কষেও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি।

বিমানবন্দরের টারম্যাকে প্রতি মূহূর্তে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি যাতায়াত করে। এর মধ্যে যেমন থাকে অয়েল ট্যাঙ্কার, তেমনই থাকে বিমানসংস্থার ছোট গাড়ি, যাত্রীদের নিয়ে বড় বাস, যাত্রীদের মাল বহনকারী গাড়িও। বিমানের গায়ে যে সিঁড়ি লাগানো হয়, তাকে নিয়েও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গাড়ি যাতায়াত করে। বিশাল টারম্যাকে একটি গাড়ির সঙ্গে অন্য গাড়ির ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। প্রায় ঘটে না বললেই চলে। গড়াতে থাকা বিমানের কাছাকাছি কখনও-সখনও কোনও গাড়ি চলে এসেছে, এমনও হয়েছে। কিন্তু টারম্যাকে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তিকে এ ভাবে ধাক্কা মারার ঘটনা প্রায় বিরল বলেই মন্তব্য করেছেন অফিসারেরা।

নিয়ম মতো, টারম্যাকের মধ্যে দিয়ে খেয়াল-খুশি মতো কোনও গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না। বিমান কোথা দিয়ে যাবে, তার জন্য যেমন নির্দিষ্ট পথ করা রয়েছে (যাকে বে বলা হয়), তেমনই এই সব গাড়ির যাতায়াতের জন্যও দাগ কেটে টারম্যাকে নির্দিষ্ট রাস্তা করা রয়েছে। এ দিন সকালের ঘটনার তদন্তে নেমেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। প্রাথমিক তদন্তে ডিজিসিএ-র অফিসারেরা জেনেছেন, এ দিন নির্দিষ্ট রাস্তা ছেড়ে সরে এসেছিল ট্যাঙ্কারটি। অমিতকে ধাক্কা মারার আগে বা পরে সেটির সঙ্গে কোনও ভাবে বিমানের ধাক্কা লাগলে বড় ক্ষতি হতে পারত বলে মনে করছেন তাঁরা।

কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওই ট্যাঙ্কারে তখনও জ্বালানি অবশিষ্ট ছিল। ফলে তার সঙ্গে বিমানের ধাক্কা লাগলে আগুন লেগে যেতে পারত। তাতে ৩০০ কোটি টাকা দামের বিমানের ক্ষতি হতে পারত। সবচেয়ে বড় কথা, তখন বিমানে যাত্রীরা ছিলেন। বড় কিছু ঘটলে তাঁদেরও প্রাণ সংশয় হতে পারত। রিলায়্যান্সের এক মুখাপাত্র জানান, কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, ওই বিমানকর্মীর চিকিৎসার সব দায়িত্ব সংস্থা বহন করবে।

tanker kolkata airport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy