Advertisement
E-Paper

ফুটপাতে ভাঙা ফিডার বক্স, বিদ্যুৎস্পর্শে মৃত ১

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রসেনজিতের বাড়ি মালদহের ইংলিশ বাজারে। পশ্চিমবন্দর থানা এলাকার খিদিরপুর অঞ্চলে শ্রমিকের কাজ নিয়ে দিন দশেক আগে কলকাতায় এসেছিলেন ওই যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২
প্রসেনজিৎ মণ্ডল

প্রসেনজিৎ মণ্ডল

ভাঙা ফিডার বক্সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফের মৃত্যু শহরে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খিদিরপুর এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রসেনজিৎ মণ্ডল (২২)। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাস তিনেক ধরে রাস্তার পাশে ওই ফিডার বক্সটি ভাঙা অবস্থায় কাত হয়ে পড়ে রয়েছে। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন হারাধন মণ্ডল নামে আরও এক যুবক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রসেনজিতের বাড়ি মালদহের ইংলিশ বাজারে। পশ্চিমবন্দর থানা এলাকার খিদিরপুর অঞ্চলে শ্রমিকের কাজ নিয়ে দিন দশেক আগে কলকাতায় এসেছিলেন ওই যুবক। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার রাত দশটা নাগাদ দুমায়ুন অ্যাভিনিউ এবং গার্ডেনরিচ রোডের মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রসেনজিৎ ও হারাধন সুইং ব্রিজ সংস্কারের কাজ করতে দিন দশেক আগে কলকাতায় আসেন। তাঁরা সুইং ব্রিজের কাছে কলকাতা বন্দরের আবাসনে থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে বাজার করতে তাঁরা খিদিরপুরের বাবুবাজার যান। পুলিশ জানিয়েছে, দুই বন্ধু মিলে হেঁটে বাজার করে ফেরার সময়ে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছিল। পশ্চিম বন্দর থানার কাছাকাছি দুমায়ুন অ্যাভিনিউ এবং গার্ডেনরিচ রোড মোড়ে বৃষ্টির জলে ডুবে থাকা রাস্তা এড়াতে তাঁরা ফুটপাত ধরে হাঁটতে শুরু করেন। ফুটপাতের এক পাশে পড়ে থাকা ভাঙাচেরা ফিডার বক্সের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎই প্রসেনজিতের হাত তাতে লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন প্রসেনজিৎ। বন্ধুকে ফুটপাতের উপরে পড়ে যেতে দেখে হারাধন প্রসেনজিতের হাত টেনে ধরলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। খবর পেয়ে পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ এসে দু’জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রসেনজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। হারাধনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ভাঙাচোরা ফিডার বক্সটি আগের অবস্থায় ফুটপাতের এক পাশে কাত হয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে থানা বড়জোর একশো মিটার। এত বড় একটি ঘটনার পরেও প্রশাসনের কী ভাবে উদাসীন, সে প্রশ্ন তুলে সরব হন স্থানীয়েরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থল দড়ি বা অন্য কিছু দিয়ে ঘিরে দেওয়া নিয়ম। কিন্তু ফিডার বক্স থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর পরেও পুলিশের যে বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি, তা পরিষ্কার। ঘটনার পরে বারো ঘণ্টা কেটে গেলেও ফিডার বক্সটি একই অবস্থায় পড়ে আছে।’’ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ‘‘তিন মাস আগে গাড়ির ধাক্কায় এ ভাবে পড়ে যায় ফিডার বক্সটি। কাছেই থানা। সিইএসসি-র কর্মীরাও নিয়মিত এই রাস্তায় আসা-যাওয়া করেন। কারও চোখে পড়ে না এই ফিডার বক্সটি?’’

এ প্রসঙ্গে জানতে ডিসি (বন্দর) ওয়াসিম রাজাকে মোবাইলে একাধিক বার ফোন করা হলে তাঁর ফোন বেজে যায়। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও। সিইএসসি-র তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ‘‘রবিবার রাতে দুমায়ুন অ্যাভিনিউ এবং গার্ডেনরিচ রোডের মোড়ে ভাঙাচোরা ফিডার বক্সের পাশে একটি বাতিস্তম্ভ কোনও ভাবে বিদ্যুদয়িত হয়েছিল। ওই বাতিস্তম্ভে হাত লেগে যাওয়ায় মৃত্যু হয়েছে প্রসেনজিৎ মণ্ডলের।’’ সিইএসসি তরফে বলা হলেও পুলিশ বলছে, ‘‘ভাঙাচোরা ফিডার বক্স থেকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে।’’ তিন মাস ধরে ফিডার বক্স ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সিইএসসি-র নজর এড়িয়ে গেল কী ভাবে? এ প্রসঙ্গে সিইএসসি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ সংযোগ বা বিচ্ছিন্ন করা আমাদের কাজ। ওই ফিডার বক্সটির মালিক যারা, সংস্কার করতে হবে সেই সংস্থাকে।’’ তবে মালিক যে কে তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

Kidderpore feeder box electric shock electrical accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy