Advertisement
E-Paper

মুখ খুলছে না পাড়া, ধরা পড়েনি কেউ

বমাল ধরা হয়েছিল তাঁকে। হাতের পুটুলি খুলতে বলা হলে দেখা গেল, তাতে গয়না এবং কিছু নোট ও কয়েন মিলিয়ে মোট দু’হাজার টাকা। তার পরেই মন্দিরে ঠাকুরের গয়না ও প্রণামীর বাক্সে রাখা টাকাপয়সা তিনি চুরি করেছেন, এই সন্দেহে গাছে বেঁধে বেধড়ক প্রহার করা হয় অপরিচিত ওই যুবককে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪১

বমাল ধরা হয়েছিল তাঁকে। হাতের পুটুলি খুলতে বলা হলে দেখা গেল, তাতে গয়না এবং কিছু নোট ও কয়েন মিলিয়ে মোট দু’হাজার টাকা। তার পরেই মন্দিরে ঠাকুরের গয়না ও প্রণামীর বাক্সে রাখা টাকাপয়সা তিনি চুরি করেছেন, এই সন্দেহে গাছে বেঁধে বেধড়ক প্রহার করা হয় অপরিচিত ওই যুবককে। কিন্তু তিনি যে একেবারে মারা যাবেন, সেটা বোঝা ‌যায়নি। বেমক্কা এমনটা ঘটে যাওয়ার পরে তাই মুখে কুলুপ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বেহালার সাঁতরাপাড়ায় শুক্রবার, মহালয়ার ভোরে গণপ্রহারে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।

তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, ওই যুবক একটি হাতুড়ি ও করাত দিয়ে মন্দিরের প্রণামীর বাক্স ভেঙেছিলেন, আর সেই হাতুড়ি দিয়ে মাথার পিছনে আঘাত করার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও গণপিটুনিতে কারা ছিল, সেই বিষয়েও পুলিশ এখনও অন্ধকারে। কারণ, এত বড় ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরেও এলাকার মানুষের প্রায় সকলেরই দাবি, ‘আমরা কেউ কিছু দেখিনি।’ কেউ বলছেন, সেই সময়ে তিনি ঘুমোচ্ছিলেন, কারও দাবি, ওই তল্লাটেই তখন তিনি ছিলেন না।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত পর্যন্ত সাঁতরাপাড়ার পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে জনা ২০ বাসিন্দাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এমনকী, পুলিশের পক্ষ থেকে সাঁতরাপাড়ায় গিয়ে পরিষ্কার হুঁশিয়ারি দেওয়া
হয়েছে, গণপিটুনিতে যারা যারা জড়িত, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। আর যাঁরা সব জেনেও চুপ করে আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘যদিও প্রমাণসাপেক্ষ, তাও তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক, ওই যুবক চুরি করেছেন। বমাল ধরাও পড়েছেন। তা সত্ত্বেও এই ভাবে কাউকে পিটিয়ে মারার অধিকার কারও নেই। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তবে স্থানীয় থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ অনুসন্ধান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত নিহতের পরিচয় জানতে পারেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাতে পর্ণশ্রীর দু’টি ও বেহালারই আরও একটি মন্দিরে ওই যুবক চুরি করেছিলেন। সেই সব মন্দিরে কিন্তু দরজা ভাঙাই ছিল। মূলত, মন্দিরের প্রণামীর বাক্স ভেঙে টাকা ও কয়েন হাতানোই ছিল তাঁর কাজ। তবে গয়না পেলে ছাড়তেন না। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই যুবক একা চুরি করেছিলেন, এমন না-ও হতে পারে, হয়তো তার সঙ্গে অন্যেরাও ছিল। তবে সাঁতরাপাড়ায় শুধু সে-ই ধরা পড়ে যায়।

শনিবার লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিহতের ছবি বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে। আমাদের কাছে থাকা দাগি চোর এবং আগে চুরির ঘটনায় ধরা পড়া লোকদের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এখনও ওই যুবককে শনাক্ত করা যায়নি।’’

Youth Neighbour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy