এই গাড়ি নিয়েই পালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র।
শহরে লকডাউন কেমন হচ্ছে, তা দেখতে বান্ধবীকে নিয়ে গাড়িতে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন এক যুবক। মাঝপথে পুলিশ গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ওই যুবক গাড়ি না থামিয়ে তার গতি আরও বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। বাধা দিতে গেলে এক পুলিশ কনস্টেবল এবং সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধাক্কা দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে। ঘটনাটি ঘটেছে ইএম বাইপাসের উপর উত্তর পঞ্চান্ন গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি গাড়ি বাইপাস ধরে উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে যাচ্ছিল। লকডাউন কার্যকর করতে আজ সকাল থেকে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা ছিল কলকাতা পুলিশের। ট্রাফিক পুলিশের কর্তাদের দাবি, পরমা আইল্যান্ডের কাছে একটি গাড়ির চালককে থামার জন্য তাঁরা ইশারা করেন। কিন্তু গাড়ি না থামিয়ে উল্টে গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যান চালক। সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী নাকায় খবর দেওয়া হয়। উত্তর পঞ্চান্ন গ্রামের কাছে রোড ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা ছোট করে দেন পুলিশ কর্মীরা। যাতে গাড়িটি পালাতে না পারে।
কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী তন্ময় দাস বলেন, ‘‘আমরা ওয়্যারলেসে খবর পাই একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে আসছে। আমি গাড়ির নম্বর পেয়ে তিনটি গার্ড রেল দিয়ে রাস্তা বন্ধ করি। তত ক্ষণে চারটে গাড়ি এসে আটকে গিয়েছে। দূর থেকে দেখি ওই নম্বরের গাড়িটা আসছে।” পুলিশকর্মীদের দাবি, দূর থেকে ব্যারিকেড দেওয়া দেখেই বাইপাসের উপর ‘ব্যাক গিয়ার’ দিয়ে পেছনের দিকে যেতে শুরু করেন চালক। প্রায় ৫০০ মিটার পিছন দিকে চালান। তত ক্ষণে পুলিশ কর্মীরা ছুটে যান।
আরও পড়ুন: তীক্ষ্ণ নজরে ‘গৃহবন্দি’ করার ছক পুলিশের
আরও পড়ুন: বাইশ দিনের কোমার আঁধার পেরিয়ে নতুন জন্মের স্বাদ
অন্য দিকে, ওই গাড়ির পিছনেও একটি পুলিশের গাড়ি ছিল। সেই গাড়ির চালক বুঝতে পারেন যে, সামনের গাড়িটা পালানোর চেষ্টা করছে। তাই তিনি নিজের গাড়ি দিয়ে পালাতে চাওয়া গাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দেন। এর পরেই গার্ড রেল দিয়ে গাড়িটি ঘিরে ফেলেন পুলিশ কর্মীরা। তন্ময় দাসের অভিযোগ, ‘‘আমরা গাড়িটা ঘিরে চালককে নেমে আসতে বলি। হঠাৎই চালক গাড়ি দিয়ে আমাকে ধাক্কা মেরে ফের ব্যাক করে গার্ড রেলে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করেন।” তন্ময় পায়ে আঘাত পান। অন্য দিকে, গাড়ি এবং গার্ডরেলের মধ্যে আটকে আহত হন সিভিক ভলান্টিয়ার বাবাই মল্লিক। তবে কারওর আঘাত গুরুতর নয়। বাবাইয়ের কথায়, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা না এলে গাড়িটা আমাদের ধাক্কা মেরে পিষে দিয়ে পালিয়ে যেত।”
গাড়িতে দুই যুবক এবং এক তরুণী ছিলেন। তাঁদের প্রথমে আটক করা হয়। জানা গিয়েছে, গাড়ি চালাচ্ছিলেন রৌনক আগারওয়াল নামে এক যুবক। তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময়েও একপ্রস্থ ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের সঙ্গে। রৌনকের বাড়ি শরৎ বসু রোডে। পুলিশ পরে রৌনককে জামিনঅযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে।
পুলিশের একাংশের দাবি, ওই যুবক এবং সঙ্গীরা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন। তবে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ধৃত এবং তাঁর সঙ্গীদের মেডিক্যাল টেস্ট করাচ্ছি। তার আগে বলা সম্ভব নয় তাঁরা মদ্যপ ছিলেন কি না।” পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় রৌনক জানিয়েছেন, জয় রাইডে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। তবে তাঁর বক্তব্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কারণ শুধু জয় রাইডে বেরলে কেন রৌনক মরিয়া হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তা-ও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy