Advertisement
E-Paper

উত্তরের পথে দাদারা, দেখা নেই বৌদিদের

উত্তর কলকাতার পথে ঘাটে দুই ‘দাদা’কে এখন প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বৌদিরা কোথায়? একই কেন্দ্রে দুই ‘দাদা’ প্রার্থী। এক জন ‘ছোড়দা’। অন্য জন শুধুই ‘দাদা’। দু’জনেই পুরোদমে প্রচার, কর্মিসভা, পদযাত্রায় নেমে পড়েছেন। কিন্তু দাদারা প্রচারে আর তাঁদের অর্ধাঙ্গিনীরা অন্তরালে, এমনটা দেখেনি কলকাতা উত্তরের বাসিন্দারা। দুই বৌদিই ‘দাদা’দের সঙ্গে রাজনীতি করেন। দুই বৌদির মধ্যে এক জন বিধায়ক, অন্য জন প্রাক্তন বিধায়ক।

সঞ্জয় সিংহ

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৪ ০২:৩২

উত্তর কলকাতার পথে ঘাটে দুই ‘দাদা’কে এখন প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বৌদিরা কোথায়?

একই কেন্দ্রে দুই ‘দাদা’ প্রার্থী। এক জন ‘ছোড়দা’। অন্য জন শুধুই ‘দাদা’। দু’জনেই পুরোদমে প্রচার, কর্মিসভা, পদযাত্রায় নেমে পড়েছেন। কিন্তু দাদারা প্রচারে আর তাঁদের অর্ধাঙ্গিনীরা অন্তরালে, এমনটা দেখেনি কলকাতা উত্তরের বাসিন্দারা। দুই বৌদিই ‘দাদা’দের সঙ্গে রাজনীতি করেন। দুই বৌদির মধ্যে এক জন বিধায়ক, অন্য জন প্রাক্তন বিধায়ক। উত্তরের অলিতে-গলিতে, পাড়ায় আড্ডার ঠেকে কে কত ভোট পেতে পারেন, তা নিয়ে চুলচেরা হিসেব নিকেশের মধ্যে বৌদিদের নিয়েও জল্পনা হচ্ছে।

শিখা

নয়না

আদতে মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা ‘ছোড়দা’ সোমেন মিত্র অধুনা বাস করেন লোয়ার রডন স্ট্রিটে। তাঁর স্ত্রী শিখা মিত্র বর্তমানে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক। সোমেনবাবু কংগ্রেস প্রার্থী। কিন্তু শিখাদেবী এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলে রয়েছেন। সেই কারণেই তিনি ছোড়দার প্রচারে নেই বলে মনে করছেন অনেকে। অবশ্য শিখাদেবীর উত্তর, “দাদার প্রচারে আমাকে দরকার নেই। উনি একাই একশো।” এর আগে কিন্তু সোমেন মিত্রের হয়ে প্রচারে তাঁকে দেখা গিয়েছে। আবার সাবেক শিয়ালদহ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বা গত বিধানসভা ভোটে চৌরঙ্গী কেন্দ্রে তাঁর হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন ‘ছোড়দা’। এ বার? বৌদির সাফ কথা, “এ বারে আমি প্রচারে নেই।”

কেন তিনি প্রচারে নেই, তা জানিয়ে শিখাদেবী বলেন, “প্রচণ্ড গরমে উনি প্রচার করছেন। ফলে ওঁর পরিচর্যার দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়েছে। ওঁর বাইপাস হয়ে গিয়েছে। ঠিক সময়ে যাতে উনি ওষুধ খান, তার সমস্ত ব্যবস্থা ও নজরদারি আমাকেই করতে হয়। আপনাদের ছোড়দাকে শুধু অ্যালোপ্যাথিক নয়, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি ওষুধও খেতে হয়। ওঁর শরীর ঠিক রাখতে নানা রকম টোটকাও খাওয়াতে হয়। ওঁর পরিচর্যার দিকটা পুরোটাই আমাকে দেখতে হচ্ছে। সব সামলে প্রচারে যাওয়ার সময় নেই।” ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি সোমেনবাবুর খাওয়া-দাওয়াতেও কড়া নিয়ম মেনে চলতে হয়। বৌদি বলেন, “প্রথম দিকে প্রচারে চটি পরে হাঁটতে অসুবিধা হত। আমি ওঁকে স্নিকার্স পরতে বললাম। বললেন মোজা পরতে অসুবিধা হচ্ছে। আমি তখন ছোট মোজা কিনে আনলাম। ছোট মোজার সঙ্গে স্নিকার্সে পদযাত্রা করতে সুবিধে হয়। এখন স্বচ্ছন্দে উনি হাঁটছেন।” তার পরেই বিধায়ক ‘বৌদি’র মন্তব্য, “আমি তো পেশাদার রাজনীতিক নই। আমি সোমেন মিত্রের স্ত্রী। মানুষের সেবা করাই আমার কাজ। তাই প্রচারের আলোয় না-ই বা থাকলাম।”

আর এক বৌদি যদিও এখনও মাঠে নামেননি, তবে দু’-এক দিনের মধ্যেই ‘দাদা’র হয়ে প্রচারে নামবেন বলে জানিয়েছেন। মধ্য কলকাতার তালতলা এলাকার বাসিন্দা ‘দাদা’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডেরা উত্তর কলকাতার অনেক বাসিন্দারই চেনা। কারণ, মাঝে ২০০৪ বাদ দিলে, সেই ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি তৃণমূলের সাংসদ। তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও বৌবাজারে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। দাদার প্রচারে বৌদিকে দেখেছেন উত্তরের বাসিন্দারা। এ বার সেই নয়না ‘বৌদি’র দেখা নেই! বৌদির কথায়, “এই গরমে সুদীপ প্রচার করছেন। ওঁর শরীর সুস্থ রাখার দিকটা আমাকেই দেখতে হয়।”

প্রচণ্ড গরমে চড়া মেকআপ নিয়ে জোরালো আলো, রিফ্লেক্টারের সামনে দাঁড়িয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে নয়নার। সেই অভিজ্ঞতাথেকেই সুদীপবাবু সকালে যখন প্রচারে বেরোন, তখন ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা গ্লুকোজের জল সঙ্গে দিয়ে দেন বৌদি। বাড়ি ফিরলে দেন ডাবের জল। প্রচার শেষ করে বাড়ি ফেরার পর গরম-ঠান্ডা জলে দাদার পা স্পঞ্জের ব্যবস্থা করেন। দুপুরে খাওয়ার পরে দাদা যাতে অন্তত ঘণ্টা দুয়েকবিশ্রাম পান, সে দিকেও কড়া নজর থাকে বৌদির।

এত দায়িত্ব সামলে প্রচারেকি বেরোতে পারবেন? নয়নার জবাব, “এখন সব নিয়ন্ত্রেণে এনে ফেলেছি। এ বার বিকেলে বা সন্ধ্যার দিকে প্রচারে বেরোবো ভাবছি।”

sanjay sinha north kolkata shikha mitra nayna bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy