Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

সকাল আর রাতে শিরশিরে হাওয়া, বাতাসে হিম হিম ভাব হেমন্ত। তার মধ্যেই এ শহর সেজে উঠছে সিনেমার উত্‌সবে। কলকাতা চলচ্চিত্র উত্‌সব এখনও একটু দূরে, তার আগেই বসছে শর্ট-ডকুমেন্টারির আসর। ২৮ অক্টোবর জ্ঞানমঞ্চে, বেলা ১-৯টা, ‘আত্মন ফিল্ম কার্নিভাল’। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পুরস্কৃত-প্রশংসিত একগুচ্ছ তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র, অ্যানিমেশন ছবি।

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০

সিনেমার উত্‌সব

সকাল আর রাতে শিরশিরে হাওয়া, বাতাসে হিম হিম ভাব হেমন্ত। তার মধ্যেই এ শহর সেজে উঠছে সিনেমার উত্‌সবে। কলকাতা চলচ্চিত্র উত্‌সব এখনও একটু দূরে, তার আগেই বসছে শর্ট-ডকুমেন্টারির আসর। ২৮ অক্টোবর জ্ঞানমঞ্চে, বেলা ১-৯টা, ‘আত্মন ফিল্ম কার্নিভাল’। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পুরস্কৃত-প্রশংসিত একগুচ্ছ তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র, অ্যানিমেশন ছবি। কিউরেটর বিশিষ্ট তথ্যচিত্রকার সুপ্রিয় সেন, বললেন ‘ভারত-সহ সারা পৃথিবীতেই নতুন শতকে কী ভাবে বদলে যাচ্ছে এ ধরনের ছবি করার বিষয় বা রীতি-রেওয়াজ, তার আস্বাদ দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যেই এ আয়োজন।’ যেমন ৯৪ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র: ‘ফাইভ ব্রোকেন ক্যামেরাজ’ (বাঁ দিকে উপরের ছবি), ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ নিয়ে, দু’জন পরিচালক প্যালেস্তাইনের এমাদ বুরনাত এবং ইজরায়েলের গাই দাভিদি। আছে ভারতের সত্যাংশু ও দেবাংশু সিংহের স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্রও, ‘তামাশ’ (বাঁ দিকে নীচের ছবি)। ২৯ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ৬টায় ম্যাক্সমুলার ভবনে গ্যেটে ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ডকু-ফোরাম সিরিজে দেখানো হচ্ছে ‘কিস্সা-এ-পার্সি: দ্য পার্সি স্টোরি’, দিব্যা কওয়াসজি ও শিল্পী গুলাটির যুগ্ম পরিচালনায়।

ভারতে পার্সি সম্প্রদায়ের প্রবেশ ও তাঁদের জীবনযাপনের ইতিহাস উঠে এসেছে এই আধঘণ্টার তথ্যচিত্রটিতে। দিব্যা ও শিল্পী উপস্থিত থাকবেন ছবির শেষে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলার জন্যে। ১-৬ নভেম্বর ওই ম্যাক্সমুলার ভবনেই গ্যেটে ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে ‘কল্পনির্ঝর ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিকশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। সারা দুনিয়া থেকে তুলে আনা সেরা ছবির সম্ভার। আছে এ দেশের ছবি ‘চক’ (উপরের ছবি), পরিচালক নবীন। একটি তিন বছরের শিশু তার স্কুল কম্পাউন্ডে চক দিয়ে বিশাল একটা ছবি এঁকেছিল। কিন্তু স্কুলরক্ষকের তাড়নায় শেষ পর্যন্ত সে মুখ লুকিয়ে কাঁদে। ১ নভেম্বর সন্ধে ছ’টায় এ-উত্‌সবের উদ্বোধন করবেন অঞ্জন দত্ত।

দূষণ রোধে


ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

দূষণ রোধে নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও গঙ্গা আজও স্বচ্ছতোয়া হয়নি। মাস দুই আগে বেনারসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘাটে সন্ধ্যা-আরতি দেখে কলকাতার ঘাটের দুরবস্থা মনে পড়ে রাজিন্দর কৌর বাবেজার। ২৫ বছর ধরে বেনিয়াপুকুরে একটি সংস্থার মাধ্যমে নানা সামাজিক কাজে সক্রিয় বাবেজা। এ বার তিনি কলকাতায় জাজেস ঘাটে শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে ঘাট পরিষ্কার করে সন্ধ্যা-আরতি ও গঙ্গায় দীপ ভাসিয়ে সূচনা করলেন এক প্রয়োজনীয় উদ্যোগের। উপস্থিত ছিলেন রাইমা সেন ও জুন মাল্য।

স্বতন্ত্র

কবিপক্ষে রবীন্দ্রসদনে আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী রূপে আত্মপ্রকাশ। আকাশবাণী কলকাতার অনুষ্ঠান ‘প্রাত্যহিকী’, ‘মনের কাছাকাছি’র সুবাদে পৌঁছে গিয়েছিলেন ঘরে ঘরে। নিয়মিত বৈদ্যুতিন মাধ্যমে মনস্তত্ত্ব বিষয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের অন্যতম সঞ্চালক। বাংলার সংস্কৃতি জগতে তিন দশকেরও বেশি সময় কেটেছে রত্না মিত্রের (সঙ্গের ছবি)। নতুন বিষয়ভাবনাতেই ডুবে থাকেন। তবে গণমাধ্যমে থেকেও তিনি নিভৃতচারিণী। তাঁর কাজের বিভিন্ন দিকে আলোকপাত করে এই প্রথম পিকাসো এন্টারটেনমেন্টের পক্ষ থেকে সঙ্গীতশিল্পী শ্রাবণী সেন আয়োজন করেছেন একক অনুষ্ঠানের। কথায়-কবিতায়-আলাপচারিতায় ২৭ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় আইসিসিআর-এ পাওয়া যাবে স্বতন্ত্র ধারার শিল্পীকে।

দেশ-পরিবেশ

পরিবেশ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা বড় কম। আমাদের কোন কাজে পরিবেশের কতখানি ক্ষতি হচ্ছে, নিজেদের অভ্যেসগুলোকে সামান্য বদলে নিলে আমরা পরিবেশ-বান্ধব হতে পারি কি না, এই প্রশ্নগুলো সচরাচর আমাদের মাথায় আসে না। অতএব, পরিবেশের প্রশ্নটি রাজনীতির মূল ধারাতেও আসতে পারে না কখনও। তার দৌড় বড় জোর ঝাঁটা হাতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবধি। এরই মধ্যে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হচ্ছে একটি দ্বিমাসিক পত্রিকা ‘দেশ পরিবেশ’ (সম্পা: জয়ন্ত বসু)। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসার প্রয়াস। অক্টোবর-নভেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদকাহিনি গণপরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে। পুজোর পরিবেশ নিয়ে আছে একটি ক্রোড়পত্র।

হিজিবিজি

বয়স তার ষোলো, পাঠভবন স্কুলের ছাত্র। অম্লান চট্টোপাধ্যায়। বাজাতে পারে অ্যাকুস্টিক, ইলেকট্রিক ও বেস গিটার। ছেলেবেলায় তালিম নিয়েছে প্রবীর মল্লিকের কাছে। পাশাপাশি গান করে, গান লিখেও সুর দেয়। প্রথাগত তালিম না থাকলেও বাড়িতে দিদির কাছেই গান শেখা। ইতিমধ্যেই স্কুলের নাটক ‘খোঁজ খোঁজ’-এ লিখে, সুর করে গান গেয়েছে। একই ভাবে মণীশ মিত্রের নির্দেশনায় কসবা অর্ঘ্য-র একটি শ্রুতিনাটকেও গানের দায়িত্বে ছিল। এ হেন অম্লান নিজের লেখা ও সুরে ন’টি গান গেয়েছে, বেরিয়েছে তার অ্যালবাম ‘হিজিবিজি’ (জেনেসিস রেকর্ডস)। তার মধ্যে একটি গানের দু’টি লাইন: ‘আমি জানতে চাই, আমি আমার দুঃখের কারণ/ আমি জানতে চাই, আমি কেন এত বারণ...’।

আলাপের নব্বই

১৯২৪-এ পেরুর পথে অসুস্থ হয়ে আর্জেন্তিনার হোটেলে আশ্রয় নেন রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গী সচিব এলমহার্স্ট একমাত্র ভরসা। খবর পেয়ে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো কবিকে অনুরোধ করেন তাঁর বাড়িতে থাকার জন্য। এক সময় অসুখী দাম্পত্যে বিধ্বস্ত ওকাম্পো গীতাঞ্জলি-র ফরাসি অনুবাদকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন। ভারতীয় কবিকে ঘিরে তাঁর প্রবল আগ্রহ। ভিক্টোরিয়ার বাড়িতে দুই মাস থাকার সময় কবি তাঁর নাম দেন ‘বিজয়া’। দেশে ফিরে তাঁকে উপলক্ষ করে লেখেন পূরবী কাব্যগ্রন্থ। আমৃত্যু যোগাযোগ ছিল চিঠিতে। কেমন ছিল দু’জনের পারস্পরিক সম্পর্ক, তা নিয়েই নাটক লিখেছেন শুভা পাল। গত বছর আর্জেন্তিনা গিয়ে তিনি সংগ্রহ করেন নানা তথ্য, সে সব ভিত্তি করেই এই নাটক। ভিক্টোরিয়া-রবীন্দ্রনাথের আলাপের নব্বই বছর ও ফ্লোটেল-এর দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি ফ্লোটেল-এ এটি পাঠ করলেন বিপ্লব দাশগুপ্ত, বরুণ চন্দ, মালবিকা ভট্টাচার্য, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

পুতুল নাটক

প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নিয়ে ‘টেমিং অফ দি ওয়াইল্ড’ পুতুল নাটকটি (সঙ্গের ছবি) তৈরি করেছে কলকাতার ‘ডলস থিয়েটার’। এই নাটক নিয়েই সংস্থাটি যাচ্ছে ব্যাঙ্ককের ‘হারমনি ওয়ার্ল্ড পাপেট কার্নিভাল’-এ (১-১০ নভেম্বর), যেখানে আমন্ত্রিত বিশ্বের আশিটি দেশ। তার আগে আজ সন্ধে ৬ টায় মধুসূদন মঞ্চে নাটকটি দেখা যাবে। সঙ্গে সংস্থার ছোটদের শাখা ‘ইকিড়-মিকিড়’-এর পরিবেশনায় একটি ছায়াপুতুল নাটক। এ দিকে, পিয়া ব্রিকোলা চৌধুরী শুরু করলেন পুতুল নিয়ে কাজ, অ্যানিমেশনে। এই প্রথম ভারতে আইক্লোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিয়া-র সংস্থা ‘পিয়াব্রিকোলা’ তৈরি করেছে ‘দ্য পাপেট কুইন’। ভারতীয় একটি মেয়ে হলিউডে পৌঁছতে চায়, তাই নিয়েই গল্প। পাওয়া যাচ্ছে সিডিতে।

আশার আলো

মূলত এক নাট্যসংস্থা বিরাটির ‘সারথি’ যখন তাদের সীমিত পুঁজি নিয়ে গ্রামবাংলা নিয়ে একটা তথ্যচিত্র তৈরিতে নেমে পড়ে, ধরতে চায় স্বাস্থ্য পরিষেবার করুণ ছবি আর তার বিপরীতে জোনাকির আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করতে থাকা এক সংগঠনকে, তখন বোঝা যায় আজও আশার একটা ভূমি কোথাও জেগে আছে। ‘সুজন’ নামে যে সংস্থাটি তথ্যচিত্রের কেন্দ্রে, তারা বহু দিন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালাচ্ছে, শুরু করেছে ছোটদের জন্য ব্যতিক্রমী পাঠক্রমের স্কুল, অসমর্থদের জোগাচ্ছে বস্ত্র, যেখানে পরিধেয়র অভাবে মেয়েরা চিকিত্‌সা-পরিষেবা নিতেও আসতে পারেন না! পরিচালক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী জানালেন, একটা সংগ্রামে সরাসরি মিশতে না পারি, শিল্প-উপস্থাপনে তাকে ধরতে চেয়েছি। আয়লার সময়ে ‘সুজন’ খুব বড় ভূমিকা নিয়েছিল। ‘সুজন’ কাজ শুরু করেছে মন্দারমণি গ্রামে আর পূর্ব মেদিনীপুরের পাওসিতেও। ২ নভেম্বর, বিকাল চারটেয় দমদম মতিঝিল কলেজের কাছে রবীন্দ্রভবনে ছবিটির উদ্বোধন করবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

সুবর্ণজয়ন্তী

চলচ্চিত্র সম্পর্কে সুস্থ ভাবনা প্রচার ও প্রসারের লক্ষ নিয়েই কয়েক জন উত্‌সাহীর উদ্যোগে এই শহরে গড়ে উঠেছিল সিনে সেন্ট্রাল। মধু বসু, সত্যজিত্‌ রায়, অলকচন্দ্র চন্দ্র-রা ছিলেন সে উদ্যোগে। চলচ্চিত্র উত্‌সব, আলোচনা, বইপ্রকাশ, ইত্যাদি নানা কাজে ব্যস্ত সংস্থাটি। রয়েছে নিজস্ব পত্রিকা ‘চিত্রবীক্ষণ’। ওঁদের কাজ মান্যতা পেয়েছে ইউনেস্কো-তে। সিনে সেন্ট্রাল এখন এ দেশের সবচেয়ে বড় ফিল্ম সোসাইটি। ১৯৬৫-তে প্রতিষ্ঠার পর সোসাইটির তরফে টাইগার সিনেমা হলে প্রথম দেখানো হয় রুশ পরিচালক নিকোলাই এক-এর ছবি ‘রোড টু লাইফ’ (সঙ্গের পোস্টার)। ৩১ অক্টোবর আশুতোষ শতবার্ষিকী হলে শুরু হচ্ছে ওদের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন। এক বছর ধরে আছে নানা কর্মসূচি। এ দিনও দেখানো হবে ‘রোড টু লাইফ’।

বইমেলা

বন্ধুতার সেতু বাঁধতে পারে বই এই বিশ্বাসেই কলকাতায় জমে ওঠে বাংলাদেশের বইমেলা। গত শনিবার রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে উদ্বোধন হল মেলাটির। আয়োজনে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস। চল্লিশটিরও বেশি প্রকাশক সংস্থার স্টলের পাশাপাশি মেলায় থাকছে আলোচনা সভা, দুই দেশের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চলবে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত (রোজ ২-৮টা)। অন্য দিকে আব্বাসউদ্দিনের জন্মদিন উপলক্ষে ২৬ ও ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ উপদূতাবাস প্রাঙ্গণে (৯ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অনুষ্ঠান, থাকবেন আব্বাসউদ্দিনের কন্যা ফিরদৌসি রহমান, পৌত্রী নাসিদ কামাল ও রংপুুরের বিভূতিভূষণ বর্মা এবং এ বাংলার লোকসঙ্গীত শিল্পীরা। আয়োজনে আব্বাসউদ্দিন স্মরণ সমিতি ও বাংলাদেশ উপদূতাবাস।

বিপন্নতা

সোহিনী সেনগুপ্ত এ বার নতুন ভূমিকায় নির্দেশক। ইতিমধ্যেই মঞ্চস্থ হয়েছে নান্দীকার-এর নতুন নাটক ‘বিপন্নতা’, তারই পরিচালনার দায়িত্বে তিনি। নান্দীকার-এ তাঁর প্রথম নির্দেশনা, তবে এর আগেও পরিচালনা করেছেন, স্বপ্নসূচনা-র ‘বেলাশেষে কোলাহল’। ‘বিপন্নতা’য় অবশ্য নিজেও অভিনয় করেছেন, তবে নির্দেশনার কাজে আনন্দ পাচ্ছেন খুব। ‘দেবতোষ দাসের রচনা থেকে তৈরি এ-নাটক, পড়েই আমার খুব ভাল লেগেছিল। আজকাল মানুষ কেমন চুপচাপ মেনে নিচ্ছে সব, অসহনীয় পরিস্থিতিতেও মানিয়ে নিচ্ছে, একটা যেন ভয় বা ফিয়ার সাইকোসিস তাড়িয়ে ফিরছে আমাদের কোথাও। অন্যের জন্যে তো কথা বলিই না, নিজের জন্যেও বলি না। বেঁচে থাকার এই সংকটটা, প্রত্যেকের মধ্যে এই বিপন্নতার বোধটা নিয়েই নাটক। বিভিন্ন স্তর আছে নাটকটায়, কারও ওপর দোষারোপ করা নেই, এ জন্যেই ভাল লাগছে কাজ করতে।’ বলতে-বলতে সোহিনী আলাদা করে অভিনয়ের উল্লেখও করলেন দু’জনের, ‘নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রী, সপ্তর্ষি মৌলিক আর অনিন্দিতা চক্রবর্তী। আর অসাধারণ অভিনয় করছেন আমার মা (স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত)।’ প্রায় একই কথা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তেরও: ‘নান্দীকার-এ প্রচুর চিঠি আসছে এই বয়ানে এটাই স্বাতীলেখার শ্রেষ্ঠ অভিনয়। কলকাতাবাসীর জীবনেও তো আজ আনাচেকানাচে লুকনো বিপদ, সুখে কালাতিপাত করার দিন শেষ। সে জন্যেই দেখতে হবে এ-নাটক।’ ৩০ অক্টোবর স্টার থিয়েটারে সন্ধে ৭টায় ও ২১ নভেম্বর অ্যাকাডেমিতে সন্ধে ৭টায় ‘বিপন্নতা’।

মৃত্‌শিল্পী

যদুভট্ট ছায়াছবিতে (১৯৫৪) সরস্বতীর প্রতিমা গড়ে প্রথম নজর কেড়েছিলেন। তার পরই কুমোরটুলিতে হাজির সস্ত্রীক উত্তমকুমার। শিল্পীকে তাঁর বাড়ির লক্ষ্মীপ্রতিমা গড়তে হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিমার মুখটি হবে গৌরী দেবীর আদলে। দুই যুগেরও বেশি উত্তমকুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপ্রতিমা গড়েছেন নিরঞ্জন পাল। পরবর্তীতে দায়িত্ব দেন ভাইপো জয়ন্তকে। নিরঞ্জন পালের জন্ম ১৯১৯-এর ২ সেপ্টেম্বর, কলকাতায়। কৃষ্ণনগর ঘূর্ণির বাসিন্দা, ঠাকুরদা বঙ্কুবিহারী পাল রুজির টানে কুমোরটুলিতে এসেছিলেন। প্রথাগত পড়াশুনো না করলেও মৃত্‌শিল্পে ছিল নিরঞ্জনের অসীম আগ্রহ। প্রথম দিকে দেখে দেখেই শিখতেন। পরে সুধীর পাল ও নিতাইচন্দ্র পালের (এন সি পাল) সাহচর্য তাঁকে আরও সমৃদ্ধ করে। ‘কুমোরটুলি শ্যামসুন্দর সমিতি’তে কুস্তি ও লাঠিখেলা শিখতেন। সেই সুবাদে কুমোরটুলি সর্বজনীনের দুর্গা প্রতিমার নিরঞ্জন শোভাযাত্রায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাঠিখেলা দেখাতেন সহপাঠী নন্দদুলাল পালের সঙ্গে। শৌখিন মিতভাষী রাশভারি হওয়ায় স্থানীয় বয়স্করা ‘গভর্নর পাল’ বলে ডাকতেন নিরঞ্জনকে। স্থানীয় কালীপুজোয় ‘সাধু তুকারাম’ যাত্রাপালায় তুকারামের স্ত্রী ও ‘সিরাজদ্দৌলা’-তে মিরনের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন। ‘দেবী মানিনী’, ‘তানসেন’, ‘সবার উপরে’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’, ‘সাগরিকা’, ‘শঙ্কর নারায়ণ ব্যাঙ্ক’ সহ বহু ছায়াছবিতে মৃত্‌সৃজনে প্রশংসা পেয়েছিলেন। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের জীবনীর পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ, শরত্‌চন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র ঠোঁটস্থ ছিল। রামায়ণ, মহাভারত, বেদ পাঠ করতেন নিয়মিত। সংসার জীবনে ব্রতী হননি পাছে মৃত্‌-সাধনায় ব্যাঘাত ঘটে। ভরসা-রাগ-অভিমান সবই ছিল ছোট ভাই বাসুদেবের ওপর। ছিয়ানব্বই বছর বয়সে সম্প্রতি প্রয়াত হলেন শিল্পী।

karcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy