Advertisement
E-Paper

চলছে রিকশা-রাজ অতিষ্ঠ বিধাননগরবাসী

দৃশ্য এক: পর পর তিন দিন একই জায়গা থেকে একই গন্তব্যে যেতে রিকশা নিয়েছিলেন দীপঙ্কর বসু। কিন্তু তিন দিন ভাড়া লাগল তিন রকম। ঘটনাস্থল সল্টলেকের এফ ডি মোড়। দৃশ্য দুই: এফই ব্লকের একটি মোড় থেকে বি জে ব্লক যাবেন বলে বেলঘরিয়ার বাসিন্দা শুভেন্দু সেন রিকশায় ওঠেন। চালক গাড়ি নিয়ে এগতেই দু’তিন জন এগিয়ে এলেন।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:১৬

দৃশ্য এক: পর পর তিন দিন একই জায়গা থেকে একই গন্তব্যে যেতে রিকশা নিয়েছিলেন দীপঙ্কর বসু। কিন্তু তিন দিন ভাড়া লাগল তিন রকম। ঘটনাস্থল সল্টলেকের এফ ডি মোড়।

দৃশ্য দুই: এফই ব্লকের একটি মোড় থেকে বি জে ব্লক যাবেন বলে বেলঘরিয়ার বাসিন্দা শুভেন্দু সেন রিকশায় ওঠেন। চালক গাড়ি নিয়ে এগতেই দু’তিন জন এগিয়ে এলেন। তাঁদের দাবি, স্ট্যান্ডের রিকশায় উঠতে হবে। শুভেন্দুবাবু সেই রিকশা থেকে নামতে বাধ্য হলেন। স্ট্যান্ডের রিকশায় বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছলেন।

রিকশা নিয়ে সল্টলেকে এমন কাণ্ড রোজই ঘটে। অভিযোগও অনেক। কিন্তু সমাধান নেই। পথচারী এবং বাসিন্দাদের অভিযোগ রিকশার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই প্রশাসনের। ভাড়াও নানা রকম। অথচ রিকশা নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি বাম আমল থেকেই শোনা গিয়েছিল। প্রয়োজনীয় লাইসেন্স দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছিল। বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ বেড়েই চলেছে বাসিন্দাদের।

প্রশ্ন উঠেছে, বৈধ কিংবা অবৈধ রিকশার সংখ্যা কত? ক’টি বৈধ রিকশার স্ট্যান্ড? ভাড়াই বা কত? নিয়ন্ত্রিত রিকশা চলাচলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হল না কেন? সদুত্তর নেই কোনও মহলেই।

পরিকল্পিত উপনগরী সল্টলেকে পরিবহণ ব্যবস্থা এখনও অনেকটাই রিকশার উপরে নির্ভরশীল। বসতি যত বেড়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রিকশার সংখ্যা। পুরসভা সূত্রের খবর, বাম আমলে লাইসেন্স প্রাপ্ত রিকশাচালকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৭০০। তার পরে কয়েক বছর লাইসেন্স দেওয়া বা পুনর্নবীকরণের কাজ বন্ধ রয়েছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১৯৯৫-এ সল্টলেক পুরসভা গঠনের পর থেকে রিকশাচালকদের জন্য কোনও সুস্পষ্ট পরিকল্পনা করেনি পুরসভা। সল্টলেকের বাসিন্দা সুমন রাহা বলেন, “প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের অভাবে রিকশাচালকদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। যেমন ইচ্ছে তেমন ভাড়া নিচ্ছেন। প্রতিবাদ করলেই দুর্ব্যবহার জোটে। এঁদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে প্রশাসনের কোনও তৎপরতা চোখে পড়ে না।”

রিকশাচালকদের একাংশ জানান, বাম আমলে লাইসেন্স দেওয়া, পুনর্নবীকরণের কাজ হয়েছিল। নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড এবং ভাড়ার তালিকাও ছিল। এখন কেষ্টপুর, রাজারহাট-সহ আশপাশের এলাকার অসংখ্য মানুষ সল্টলেকে রিকশা চালাতে শুরু করেছেন। তাতে সমস্যা বেড়েছে। কিছু রিকশাচালক বেশি ভাড়া নিচ্ছেন বলে স্বীকার করে নিয়েছেন রিকশাচালকদের একাংশ। তবে তাঁদের অভিযোগ, পুর-কর্তৃপক্ষকে তাঁরা সমস্যার কথা একাধিক বার জানিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি মিললেও কোনও সমাধান হয়নি।

বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “রিকশার উপরে আমরা অনেকটাই নির্ভরশীল। কিন্তু কোনও শৃঙ্খলা নেই। যত্রতত্র স্ট্যান্ড, যেমন খুশি ভাড়া। অবিলম্বে পুরপ্রশাসন এই বিষয়ে নজর দিক।” সমস্যার কথা স্বীকার করে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনবিধি জারি হওয়ায় এই সময়ে কাজ করা যাবে না। নির্বাচনের পরে পুনরায় আলোচনা হবে। তখন লাইসেন্স দেওয়া, ভাড়ার তালিকা তৈরি, স্ট্যান্ড নির্দিষ্ট করার কাজ হবে।”

saltlake kajal gupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy